ফারাওরা কেন পিরামিড নির্মাণে এত সময় ও অর্থ ব্যয় করেছিল?
নিজস্ব প্রতিনিধি : পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্য জিনিসের মধ্যে অন্যতম হল মিশরের পিরামিড। বহু প্রচলিত ধারণা রয়েছে পিরামিডকে কেন্দ্র করে।পিরামিড মানে আমরা বুঝি সমাধিক্ষেত্র। প্রাচীন মিশরের শাসনকর্তা ফারাওদের মৃত্যুর পর তাদের সমাহিত করা হতো এই বিশাল সমাধিক্ষেত্রে।প্রায় কয়েক দশক ধরে হাজার হাজার শ্রমিকদের দিয়ে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
প্রচলিত বিশ্বাস : মূলত প্রাচীন মিশরীয় সমাজে পরকালের ধারণা প্রচলিত ছিল। সেই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই এই বিরাট আকারের সমাধিক্ষেত্র নির্মাণ করা হয়। প্রচলিত বিশ্বাস ছিল যে, তাঁদের দেহরক্ষার জন্য তাঁরা এমনভাবে সমাধিস্ত করত।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে প্রকাশিত এক প্রবন্ধের তথ্যমতে, মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো যতদিন ফারাওদের দেহ রক্ষা করা যাবে ততদিন তারা স্বর্গে বাস করবে। তবে তার জন্য পৃথিবী থেকে পরকালের যাবার সময় ‘আত্মা’র নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করা জরুরি ছিল। অর্থাৎ ‘আত্মা’র যাত্রায় যাতে কোন বাধা না থাকে। বাধা পড়লেই বিপদ।
এই আত্মাকে তারা ডাকতো ‘কা’ বলে। এই ‘কা’ বেঁচে থাকার জন্য প্রসাদ আকারে খাবার, বিশ্রামের জন্য বিছানাসহ কিছু ব্যবস্থার দরকার ছিল বলে তারা মনে করতো। আর সে কারণেই প্রয়োজন পড়ে পিরামিডের। পিরামিডের মধ্যে খাদ্য, পানীয়, বিছানাও দিয়ে দেওয়া হত।
প্রাচীন মিশরীয়রা বিশ্বাস করতো, পিরামিডের ভেতরে ফারাওদের ‘কা’ বেঁচে থাকতো। তাই আত্মাদের এইসব জিনিসের প্রয়োজন হয়। তাঁরা বিশ্বাস করত যে, পরপারের যাত্রার জন্য জাগতিক সব ধরনের জিনিসই প্রয়োজন হবে ‘কা’র (আত্মার)।
শুধু তাই নয় ফারাওদের মৃতদেহের সঙ্গে প্রয়োজনীয় মতো ধন-সম্পদও দিয়ে দেওয়া হতো। আত্মা’র যাত্রায় যাতে কোন বাধা না থাকে তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নিত এইভাবেই। তবে পিরামিড নির্মাণের আগে মিশরীয়দের কবর দেয়ার পদ্ধতি ভিন্ন ছিল। তখন সমাধি দেয়া হতো চারকোনা ছোট আকৃতির ঘরে, যার নাম ছিল ‘মাস্তাবা’। পরবর্তীকালে আসে পিরামিড। যদিও এখনও পর্যন্ত পিরামিড নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা।