আরও ২ মিটার খোঁড়া বাকি, মুক্তির দ্বারপ্রান্তে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকরা
নিজস্ব প্রতিনিধি, উত্তরকাশী: মুক্তির দ্বারপ্রান্তে টানা ১৭ দিন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে বন্দি ৪১ শ্রমিক। আর মাত্র ২ মিটার খোঁড়া বাকি। ওই ২ মিটার খোঁড়া সম্পন্ন হওয়ার পরেই শ্রমিকদের সুড়ঙ্গের ভিতর থেকে বাইরে বের করে আনা সম্ভব হবে। মঙ্গলবার বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতা হাসনাইন। ওই খননকার্যে আরও ৩ থেকে ৪ ঘন্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। শেষ মুহুর্তে উদ্ধারকার্যে কোনও তাড়াহুড়ো করা হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। পরিজনদের একবার চোখে দেখতে সুড়ঙ্গের পাশে ভিড় জমিয়েছেন আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা।
গত ১২ নভেম্বর আচমকাই ধস নামায় উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়েছিলেন ৪১ শ্রমিক। ১৭ দিন ধরে উদ্ধারকার্যের জন্য একাধিক প্রচেষ্টা নিয়েছিল। কিন্তু সেই সব প্রচেষ্টাই জলে গিয়েছিল। আটকে থাকা শ্রমিকদের মনোবল ঠিক রাখতে চিকিৎসা। এত দিন সুড়ঙ্গের ভিতরে রোজ তাঁদের পাঁচ ঘণ্টা করে কাউন্সেলিং চলেছে। পাশাপাশি বাইরে থেকে চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে আনা হয়েছিল আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিক্সের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ দলকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক আগার মেশিনও নিয়ে আশা হয়েছিল। কিন্তু গত শুক্রবার মাঝরাতে সুড়ঙ্গ খুঁড়তে গিয়ে খানখান হয়ে ভেঙে পড়েছিল সেই যন্ত্র। তার পরেই বিকল্প পথ অবলম্বন করে প্রশাসন। ভারতীয় সেনার তত্ত্বাবধানে শাবল, গাঁইতি দিয়ে হাতেই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ শুরু হয়।
ইঁদুরের মতো গর্ত খুঁড়ে তৈরি করা হয় মাইক্রোটানেল বা ক্ষুদ্র সুড়ঙ্গের কাজ। এদিন দুপুরে সেই কাজ শেষ হয়। সঙ্গে সঙ্গেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুখবর জানানো হয় শ্রমিকদের পরিবারগুলিকে। সেই সঙ্গে বলা হয়, ‘প্রস্তুত থাকুন। শ্রমিকদের ব্যাগপত্র, জামাকাপড় তৈরি রাখুন।’ সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধারের পরেই অ্যাম্বুলান্সে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় চিনিয়ালিসৌরের অস্থায়ী হাসপাতালে। সুড়ঙ্গের ভিতরে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকার কারণে শ্রমিকরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন। তাই তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক প্রশাসনিক আধিকারিক।