ঘূর্ণিঝড় রিমলের তাণ্ডবে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাংলাদেশ: ঘূর্ণিঝড় রিমলের তাণ্ডবে বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ২১ জন। প্রাণহানির সিংহভাগ ঘটনা ঘটেছে উপকূলীয় এলাকাতে। ঝড়ের দাপটে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নও হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের বহু এলাকায়। ভেঙে পড়েছে কাঁচা ঘরবাড়ি, দেওয়াল ও গাছপালা। এছাড়া ঝড়ের তাণ্ডবে বেশকিছু জায়গায় বাঁধ ভেঙে নদীর জল ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। যার ফলে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ। গত রবিবার বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ের আকারে উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। যার প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। মোট ১৯টি জেলার ১০৭ উপজেলার এবং ৯১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার রেশ এখনও চলছে। রিমলের তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের পটুয়াখালীতে ৩, চট্টগ্রামে ২, ঢাকায় ৪, ভোলায় ৩, বরিশালে ৩, খুলনা, সাতক্ষীরা, লালমনিরহাট, বরগুনা, কুষ্টিয়া ও কুমিল্লায় একজন করে মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বন্যার কবল থেকে বাঁচার জন্যে নিরাপদ স্থানে সাঁতরে যাওয়ার পথেই জোয়ারের জলে ভেসে যান শরীফ নামক এক যুবক। ঝড়ো হাওয়ায় গাছচাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধের। এছাড়াও ঝোড়ো হাওয়ায় একটি পরিত্যক্ত টিনশেড দোতালা ঘরের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় আরেক যুবকের। চট্টগ্রামে ঝড়ের তাণ্ডবের মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের দেওয়ালে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক যুবকের। আরেকজন ঝড়ের সময় নদীর জলে ডুবে মারা যান। ঢাকাতে টিনের বেড়া, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে স্পর্শ, বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। যাঁদের নাম- মরিয়ম বেগম (৪৫), লিজা আক্তার (১৫), মোহম্মদ রাকিব (২৫) ও আলামিন (২২)।
এছাড়াও বাংলাদেশের তিন উপজেলায় শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। কেউ ঘরের দেওয়ালে চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন এবং কেউ গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন। এদিকে বরিশালে রিমলের দাপটে তিননের মৃত্যু হয়েছে। রুপাতলী এলাকায় নির্মানাধীন ভবনের দেওয়াল ধসে মৃত্যু হয়েছে লোকমান হোসেন ও কর্মী মোকসেদুর রহমান নামের দুইজনের। বাকেরগঞ্জ উপজেলার চর দাড়িয়ালের বাসিন্দা জালাল সিকদার গাছের ডাল পড়ে মারা গিয়েছেন। এছাড়াও লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলায় ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। খুলনায় গাছে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছেন লালচাঁদ মোড়ল নামের একজনের। এছাড়াও সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বাজ পড়ে মারা গিয়েছেন এক বৃদ্ধ। কুমিল্লাতে একটি নির্মাণাধীন ভবনের দেওয়াল ধসে মারা গিয়েছে ১২ বছরের এক শিক্ষার্থী। কুষ্টিয়ার মিরপুরে টিনের চালার নিচে পড়ে মারা গিয়েছেন বাদশা মল্লিক নামের এক বৃদ্ধ। বরগুনাতেও ঘরের ওপর পড়া গাছ সরাতে গিয়ে মারা গিয়েছেন ৫৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি।