National Medical College and Hospital-এ লাঠিচার্জের ঘটনার তদন্তে গঠিত ৫ সদস্যের কমিটি
নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার(Kolkata) National Medical College and Hospital চত্বরে এক রোগীর আত্মীয়দের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায়(Lathicharge Incident) কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত গতকালই দিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব(Health Secretary) নারায়ণ স্বরূপ নিগম(Narayan Swaroop Nigam)। সেই বার্তা যে নিছক মুখের কথা নয় সেটা সামনে চলে এল এদিন। কেননা ঘটনার তদন্তে গঠিত হয়েছে ৫ সদস্যের কমিটি। সেই কমিটিতে রয়েছেন ডিন, নার্সিং সুপার-সহ পদস্থ আধিকারিকরা। একইসঙ্গে এই লাঠিচার্জের গঠনায় যে ৫জন পুলিশ কর্মীকে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তাঁদের বিরুদ্ধেও এবার কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে লালবাজার। সম্ভবত চাকরি যেতে চলেছে এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত রবিবার বুকে ব্যথা নিয়ে শাহনাজ হুসেন নামে এক ব্যক্তি ভর্তি হয়েছিলেন কলকাতার National Medical College and Hospital-এ। জরুরি বিভাগে তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তার পরেই হাতে প্রবল যন্ত্রণা হতে থাকে রোগীর। সেই ব্যথা নিয়ে প্রশ্ন তোলে রোগীর পরিবার। কর্তব্যরত নার্সের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কী ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে? কেন ব্যথা হচ্ছে? নার্সরা সেই জবাব দিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। তাতে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স পুলিশ ডাকে। পুলিশ এসেই ওই পরিবারকে ধাক্কা মারতে মারতে এবং লাঠিচার্জ করতে করতে বের করে দেয়। সেই লাঠিপেটার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে গতকাল অর্থাৎ সোমবার। আর তার জেরে শুধু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই নয়, নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীও ঘটনাটি নিয়ে নাকি খোঁজ নিয়েছেন।
এদিন জানা গিয়েছে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে National Medical College and Hospital কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের মেডিকেল সুপার অর্ঘ্য মৈত্রর তত্ত্বাবধানে ডিন, নার্সিং সুপারদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে বলে দেওয়া হয়েছে, আগামী ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এই কমিটি শুধু হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা, চিকিৎসক এবং নার্সদের ভূমিকা দেবে। কিন্তু যে পুলিশের লাঠিচার্জ নিয়ে সব থেকে বড় ক্ষোভ ছড়িয়েছে সেই পুলিশদের বিরুদ্ধে তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করতে পারবেন না। কেননা কমিটির সদস্যরা নিজেরাই জানেন না যে হাসপাতালে ঢুকে পুলিশ এভাবে কী আদৌ রোগীর আত্মীয়দের মারধর করতে পারে! যদিও হাসপাতালের কিছু রোগীর পরিজনদের দাবি, হাসপাতালের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা যত না সিদ্ধান্ত নেন, তার থেকে বেশি সিদ্ধান্ত নেন হাসপাতালের কর্মীরা যারা সরাসরি শাসক দলের সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। গতকালের ঘটনার জন্য মূলত তাঁরাই দায়ী।
লালবাজার থেকে অবশ্য গতকাল রাতেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হাসপাতালে রোগীর আত্মীয় পরিজনদের যারা লাঠিপেটা করেছে তাদের আপাতত ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বেনিয়াপুকুর থানার ওই পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ঠিক কী তথ্য দেওয়া হয়েছিল হাসপাতালে আসার আগে সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেননা হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক, কর্মী বা নার্স এখনও এমন অভিযোগ করেননি যে তাঁদের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে বা মারধর করা হয়েছে কিংবা হাসপাতালে ভাঙচুর করা হয়েছে। খালি রোগীর ৪-৫জন আত্মীয়ের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়েছিল। সেই জায়গায় কেন পুলিশ ডেকে মারধর করানো হল! কেই বা তা করালো? পুলিশই বা কেন হুট করে মারধর করতে শুরু করে দিল? অনেক প্রশ্ন ঘুরছে যার উত্তর আপাতত মিলছে না। চট করে যে মিলবে তেমনটাও কেউ মনে করছেন না।