এখনও পর্যন্ত অস্কারে পাঠানো হয়েছে মোট ৫৬ টি ভারতীয় ছবি
নিজস্ব প্রতিনিধি: গতবছর ৯৫ তম আকাডেমি অ্যাওয়ার্ড শো দেখার জন্যে একটু বাড়তি উত্তেজনা ছিল ভারতবাসীদের। কারণ অস্কার প্রেজেন্টার হয়েছিলেন অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। এছাড়াও সেরা গানের জন্য অস্কার পেয়েছিল 'RRR'-এর নাটু নাটু। তথ্যচিত্রের জন্যে অস্কার পেয়েছিল গুণীত মঙ্গার 'দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স।' তাই ভারতের একাধিক ছবি অস্কারের মনোনয়ন পেয়েছিল বলে ভারত বাসীদের একটু বাড়তি উত্তেজনা ছিল এই শো দেখার। এবারেও ৯৬ তম আকাডেমি অ্যাওয়ার্ড দেখার জন্যেও সমান উত্তেজনা রয়েছে ভারতীয়দের। ১০ মার্চ লস অ্যাঞ্জেলেসের হলিউডের মর্যাদাপূর্ণ ডলবি থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হবে ৯৬ তম আকাডেমি অ্যাওয়ার্ড। ভারত থেকে এই শো দেখা যাবে ১১ মার্চ সকাল ৪ টায়। Disney Plus Hotstar OTT-তে Oscar 2024-এর লাইভ টেলিকাস্ট হবে। এছাড়াও, এটি স্টার মুভিজ, স্টার মুভিজ এইচডি এবং স্টার ওয়ার্ল্ডের মতো চ্যানেল গুলিতেও লাইভ হবে ৯৬ তম অস্কার শোয়ের। এ বছর 'টু কিল আ টাইগার' সেরা তথ্যচিত্র বিভাগে অস্কারে পাঠিয়েছে ভারত। যার সহ প্রযোজক প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। গোটা বিশ্বের বিনোদন ইতিহাসের একটি সম্মানিত পুরস্কার অনুষ্ঠান হল অস্কার। তবে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাস অস্কারের চেয়েও পুরনো। তবে ১৯৫৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অস্কারে ভারতীয় সিনেমার যাত্রা বেশিরভাগই ব্যর্থ হয়েছে। ২০২৩ সালের আগেও অস্কার জিতেছিলেন ভারতীয় সুরকার এ আর রহমান। চলুন এক ঝলকে জেনে নেওয়া যাক, অস্কারের ইতিহাসে ভারতীয় সিনেমার যাত্রা কেমন ছিল?
১৯২৯ সালে শুরু হওয়া অস্কার অ্যাওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্রটি ছিল মাদার ইন্ডিয়া (১৯৫৭)। পরিচালক মেহবুব খানের ফিল্ম মাদার ইন্ডিয়া প্রথমবার ৩০ তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডে পাঠানো হয়েছিল। যেটি ছিল বলিউডের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ছবি। এই ছবিটি অস্কার গ্যালারিতে পৌঁছেছিল কিন্তু এর যাত্রা কেবল সেখানেই থেকে যায়। এর পরে, প্রায় ৫৫ টি চলচ্চিত্র অস্কারে পৌঁছেছিল, যার মধ্যে মধ্যে জিতেছে মাত্র কয়েকটি। ৩৮ তম অস্কারে হিন্দি ভাষা 'গাইড' (১৯৬৫), ৪৫ তম অস্কারে হিন্দি ভাষা 'উপর' (১৯৭১), ৪৬ তম অস্কারে হিন্দি ভাষা 'সওদাগর' (১৯৯১), ৬০ তম অস্কারে তামিল ভাষা'নায়কান' (১৯৮৭), হিন্দি ছবি 'ব্যান্ডিট কুইন (১৯৯৪), ৭৫ তম অস্কারে হিন্দি ভাষা 'দেবদাস' (২০০২), ৮৫ তম অস্কারে হিন্দি ভাষা 'বরফি' (২০১২), ৯৩তম অস্কারে মালায়ালাম ভাষা 'জাল্লিকাট্টু' (২০১৯) গিয়েছিল। এবার ৯৬তম অস্কারে গিয়েছে মালায়ালাম ভাষার ছবি '২০১৮'।
এই ভাষাগুলি ছাড়াও তেলেগু, মারাঠি, বাংলা, উর্দু এবং গুজরাতি ছবিও অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রতি বছর ফিল্ম ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার জুরি অস্কারের জন্য অনেক ছবি পাঠায়। ১৯৫৭ সালে মাদার ইন্ডিয়া চলচ্চিত্রটি মনোনীত হয়েছিল। ১৯৮৮ সালের সালাম বোম্বে চলচ্চিত্রটিও মনোনীত হয়েছিল। ২০০১ সালের ছবি লাগানও মনোনয়ন পেয়েছিল। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চেলো শো চলচ্চিত্রটি শর্টলিস্ট করা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন এ আর রহমান ও 'নাটু-নাটু'। ভানু আথাইয়া ১৯৮৩ সালের গান্ধী চলচ্চিত্রের পোশাক ডিজাইন করেছিলেন এবং এর জন্য অস্কার পুরস্কারে ভূষিত হন। ১৯৯১ সালে, প্রবীণ ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় 'অনারারি লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট' অস্কার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। গীতিকার গুলজার ২০০৯ সালের স্লামডগ মিলিয়নিয়ার চলচ্চিত্রের 'জয় হো' গানটির জন্য অস্কার পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছিলেন। ২০২৩ সালে, দক্ষিণের সুপারহিট ছবি RRR-এর একটি গান ৯৫ তম আকাডেমি পুরস্কারে পেয়েছিল। এই ছবির বিখ্যাত গান 'নাটু-নাটু' এমএম কিরওয়ানি এবং চন্দ্রবোসকে সেরা মৌলিক গানের জন্য অস্কার পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছিল। চলচ্চিত্র নির্মাতা গুনীত মঙ্গা 'দ্য এলিফ্যান্ট হুইসপারস'-এর জন্য সেরা তথ্যচিত্রের জন্য অস্কারে ভূষিত হয়েছালেষ। এভাবে যদি দেখা যায়, এই ৬৭ বছরে প্রায় ৮ বার বিভিন্ন উপায়ে ভারতে এসেছে অস্কার।