‘শপথ নিন, মর্নিং ওয়াক করা দাদা পার্কে থাক, বাংলার মেয়ে দিল্লি যাক’, বেলদায় গর্জন অভিষেকের
নিজস্ব প্রতিনিধি: শুক্র বিকালে জনগর্জনের সাক্ষী থাকল পশ্চিম মেদিনীপুরের(Paschim Midnapur) মাটি। এদিন জেলার মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য জেলারই নারায়ণগড় বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা বেলদাতে(Belda) বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) নির্বাচনী প্রচার সভায় যোগ দেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। বেলদা স্টেডিয়ামে সেই সভা করা হয়ে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা মেদিনীপুরের তৃণমূল বিধায়ক ও অভিনেত্রী জুন মালিয়ার(June Malia) জন্য। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে মোট ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র। এগুলি হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় থাকা কেশিয়াড়ি, দাঁতন, নারায়ণগড়, মেদিনীপুর, খড়গপুর টাউন, খড়গপুর গ্রামীণ বিধানসভা কেন্দ্র এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মধ্যে থাকা এগরা বিধানসভা কেন্দ্র। উনিশের ভোটে এই লোকসভা কেন্দ্র থেকেই জিতেছিলেন বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh)। সম্ভবত এবারেও তিনি এই কেন্দ্র থেকেই বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন। এদিন বেলদা থেকে সেই দিলীপকেই নিশানা বানিয়েছেন অভিষেক।
একুশের ভোটে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিই গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। কেবলমাত্র খড়গপুর টাউন বিধানসভায় জয়ী হয়ে বিজেপি। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে এই নির্বাচনে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ঢ্যাং ঢ্যাং করে জিতে যাওয়ার কথা। সব থেকে বড় কথা বিজেপির তরফে এখনও পর্যন্ত মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। যদিও দিলীপের দাবি, তিনিই প্রার্থী হচ্ছেন। আর তাই সম্ভবত অভিষেকও এদিন বেলদা থেকে তাঁকে নিশানা বানিয়েছেন। দিলীপ জুনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে আগেই জানিয়েছেন যে, ২ লক্ষ ভোটে তিনি জুনকে হারাবেন। সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণও করেছেন জুন। সেই সঙ্গে তাঁর পাল্টা দাবি, ‘যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই হবে। খেলা হবে। হাসি হবে। কান্না হবে। মাইন্ড করবেন না দিলীপদা।’ এদিন অভিষেক কিন্তু সেই দিলীপকেই দিল্লি যাওয়ার ছাড়পত্র না দিতে মেদিনীপুরবাসীকে অনুরোধ করেছেন।
দিলীপকে নিশানা বানিয়ে এদিন তৃণমূলের সেনাপতি জানিয়েছেন, ‘৫ বছর আগে এখান থেকে দিলীপ ঘোষ যে জিতেছিলেন, তারপর ৫ বছরে ৭টা বিধানসভা কেন্দ্রে যদি একটাও উন্নয়নমূলক বৈঠক হয়েছে বলে দেখাতে পারেন, তা হলে আমি আর ভোট চাইতে আসব না। এত বড় কথা বলে দিয়ে যাচ্ছি। অন্য দিকে দেখুন মুখ্যমন্ত্রীকে। কথা দিয়ে কথা রেখেছেন। কোনও ভদ্রলোক বিজেপি করে না। দেখুন না এদের চরিত্র। সব চোর, চিটিংবাজ, দু’নম্বরি, দুর্নীতিগ্রস্ত, পাতাখোর, মাতাল— সব বিজেপিতে। দিলীপ ঘোষ কী পরিষেবা দিয়েছে আপনারা দেখেছেন। সকালবেলা খালি মর্নিং ওয়াক ওর কাজ। খালি মর্নিং ওয়াক করছেন। চা খান। চায়ে আপত্তি নেই। শরীরচর্চা আর মর্নিংওয়াক যিনি করছেন তাঁকে সাংসদ করবেন না কি যে মেয়ে রাস্তায় লড়বেন, তাঁকে সংসদে পাঠাবেন? শপথ নিন, মর্নিং ওয়াক করা দাদা পার্কে থাক, বাংলার মেয়ে দিল্লি যাক। দিলীপ ঘোষ বার বার নারীশক্তিকে আক্রমণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে অসম্মানজনক কথা বলেছেন। তিনি কুড়মি সম্প্রদায়কেও অসম্মান করেছেন। এবার আপনারাই ঠিক করুন দিল্লি যাবে কে! তৃণমূলের প্রার্থী নাকি বিজেপির প্রার্থী!’