হুগলির সিঙ্গুরের পরে মালদার মানিকচকেও সমবায়ের ভোটে জয় তৃণমূলের
নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যের দুটি সমবায় নির্বাচনে তাৎপর্যপূর্ণ জয়ের স্বাদ পেল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। একদিকে তাঁরা হুগলি জেলার(Hooghly District) সিঙ্গুরের(Singur) বুকে যেমন ৩৫ বছর ধরে বামেদের দখলে থাকা সমবায় সমিতি ভোটে জিতে ছিনিয়ে নিয়েছে, তেমনি মালদার(Malda District) মানিকচকে(Manikchawk) কংগ্রেসের(INC) সঙ্গে জোট গড়ে বামেদের(Left) পরাস্ত করে আরও একটি সমবায়ের দখল নিয়েছে। আর এই জয় এসেছে এমন একতা সময়ে যখন, জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে কংগ্রেস ও তৃণমূল কাছাকাছি আসছে। একই সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে অধীররঞ্জন চৌধুরীর বিদায়ও কার্যত ঘোষিত হয়ে গিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, জাতীয় স্তরের রাজনীতির মতন রাজ্য স্তরের রাজনীতিতেও কংগ্রেস ও তৃণমূলের সম্পর্ক ভালো হলে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২ দলের জোট হলেও হতে পারে। যদি সেই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ পায় তাহলে অস্বীকার করার উপায় থাকবে না যে, বিজেপির পাশপাশি বামেরাও ধাক্কা খাবে।
হুগলি জেলার সিঙ্গুরের গোবিন্দপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেড ৩৫ বছর ধরে বামেদের দখলে ছিল। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরেও সেই সমবায় সমিতির নির্বাচনের চিত্রটা পাল্টানো যায়নি। ক্ষমতায় থেকেই গিয়েছিল লাল ঝান্ডা। কিন্তু গতকাল রবিবার সেই সমবায় সমিতিতেই ছিল ভোট। দেখা যায় সমিতির নির্বাচনে তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা ৪৫টি আসনেই জয়ী হয়েছেন। যদিও এই লড়াইয়ে বামেরা যেমন সব আসনে প্রার্থী দিয়েছিল, তেমনি বিজেপিও ১২টি আসনে প্রার্থী দেয়। কিন্তু ভোটাররা তাঁদের মান্যতা দেননি। তাঁরা দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের পাশে। রবি রাতে ফল ঘোষণা হতেই বিপুল জয়ের পরেই আবির খেলায় মেতে ওঠে তৃণমূল কর্মী সমর্থক ও জয়ী প্রার্থীরা। উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সাল থেকে ৩৫ বছর সমবায়টি বাম সমর্থিত প্রতিনিধিদের দখলে ছিল। কয়েক বছর আগে কিছু সদস্য এই সমবায়ে অনাস্থা আনলেও ভোটাভুটিতে বামফ্রন্ট সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হয়। কিন্তু এবার তাঁদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়েই নিল তৃণমূল।
আবার লোকসভা নির্বাচনে মালদা সহ বাংলার মাটিতে বাম আর কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়াই করলেও, এখন সেই জোট কার্যত প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে। কেননা মালদা জেলার মানিকচকের উত্তর চণ্ডীপুর গ্রামীণ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচনে বাম আর কংগ্রেস লড়াই করেছিল। কিন্তু কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে জোট না গড়ে জোট গড়ে তৃণমূলের সঙ্গে। সমবায়ের পরিচালন কমিটির নির্বাচনে ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতে প্রার্থী দেয় তৃণমূল, ২টিতে তাঁরা সমর্থন দেয় কংগ্রেসকে। বামেরা অবশ্য সব আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু দেখা যায় ৩৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার পরেও, সেখানে ১টি আসনেও জিততে পারেনি বাম প্রার্থীরা। ৬টি আসনেই জেতেন কংগ্রেস ও তৃণমূলের প্রার্থীরা। উল্লেখ্য, আদালতের নির্দেশে প্রায় ৩০ বছর পর ভোট হল এই সমবায় সমিতিতে। আর সেখানেই বড়সড় রাজনৈতিক জয়। এই সমবায় সমিতির মোট ভোটার সংখ্যা ৭২১ জন। যার মধ্যে ৩৭৭ জন ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।