পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই AIIMS Kalyani’র, কাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি: উদ্বোধনের নামে কী গিমিক দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী? এই প্রশ্নটা উঠেই গেল। কেননা আগামিকাল অর্থাৎ ২৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার, গুজরাতের রাজকোট থেকে দেশের যে AIIMS হাসপাতালের উদ্বোধন করবেন নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) তার মধ্যে আছে আমাদের বাংলার(Bengal) নদিয়া(Nadia) জেলার Kalyani AIIMS-ও। মজার কথা আগামিকাল উদ্বোধন হতে চলা এই হাসপাতালের পরিষেবা প্রদান অনেকদিন আগেই থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০১৫ সালে এই হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০১৯ সালের মধ্যে এই হাসপাতাল নির্মাণ শেষ হওয়ার পর পরিষেবা চালু করা শুরু হয়ে যায়। এতদিন ধরে এই হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক কোনও উদ্বোধন হয়নি। প্রায় পাঁচ বছর পর আনুষ্ঠানিক ভাবে এই হাসপাতালের উদ্বোধন করা হচ্ছে। আর তা নিয়ে যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্ধ হচ্ছে কেন্দ্র সরকার তেমনি সামনে এসেছে পরিবেশগত ছাড়পত্র(Environmental Clearance) ছাড়াই আগামিকাল এই হাসপাতালের উদ্বোধন হতে চলেছে। আর তাই প্রশ্ন উঠেছে, এই হাসপাতালের উদ্বোধন কী মোদির নয়া নির্বাচনী গিমিক!
রাজ্যে পালাবদলের আগে থেকেই কংগ্রেসের নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি উত্তরবঙ্গের বুকে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে AIIMS হাসপাতাল নির্মাণের দাবি তুলেছিলেন। সেই দাবি মেনেও নেয় মনমোহন সিংয়ের সরকার। কিন্তু গোল বাঁধে জমি নিয়ে। রাজ্যের ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সেখানে জমি পাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয়। এমনকি জমি নিয়ে বিক্ষোভের আঁচে রাজ্য সরকার সেখানে জমি অধিগ্রহণও করতে এগোয়নি। পরিবর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রস্তাব দিয়েছিল, রায়গঞ্জের বদলে নদিয়ার কল্যাণীতে সেই হাসপাতাল গড়ে উঠুক। পরে রাজ্যের সেই প্রস্তাবেই শিলমোহর দেয় মোদি সরকার। সেই সূত্রেই কল্যাণীর জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হাসপালাতের পাশেই ১৮০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে AIIMS Kalyani। ২০১৯ সাল থেকে সেখানে আউটডোর পরিষেবা চালু হয়ে যায়। আগামিকাল থেকে ইন্ডোর পরিষেবা চালু হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানেই দেখা দিয়েছে বিপত্তি।
রাজ্য প্রশাসনের তরফে এদিন জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনই পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে AIIMS Kalyani-কে। নির্মাণের পর পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের রায়ের কারণেই এই ক্ষেত্রে ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে। শীর্ষ আদালতের নতুন কোনও নির্দেশ না আসা অবধি এই ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব হবে না। আর পরিবেশগত ছাড়পত্র না থাকলে দেওয়া যাবে না Consent to Operate-ও। অর্থাৎ আগামিকাল এই হাসপাতালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে কোনও বাধা না থাকলেও, হাসপাতালের মূল ইন্ডোর পরিষেবা এখনই চালু করা যাবে না। তবে আগের মতো আউটডোর পরিষেবা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। এই হাসপাতালের পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশের রায়ের কারণেই এই ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানানো হয়েছিল। তারপরেও কেন তড়িঘড়ি করে এই হাসপাতালের উদ্বোধন করা হচ্ছে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দেয়। সেই সূত্রেই প্রশ্ন ওঠে, এই হাসপাতালের উদ্বোধন কী প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী গিমিক!