ইজরায়েলি আগ্রাসনের জেরে গাজায় প্রতিদিন গড়ে পঙ্গুর শিকার হচ্ছে ১০ জন শিশু
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা যুদ্ধে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পঙ্গুত্বের সংখ্যা বেড়েছে ব্যাপকভাবে।জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইজরায়েলি আগ্রাসনে প্রতিদিন গড়ে ১০টি শিশু একটা অথবা দুটো পা হারিয়ে পঙ্গু হচ্ছে। তাঁদের ভবিষৎ খুব অন্ধকার এখন।
আনরোয়ার(জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহর থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন।তিনি জানিয়েছেন, এই হিসেবের মধ্যে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের দেওয়া তথ্য নেই।
ইউনিসেফের তথ্য জানিয়েছিল , ইজরায়েলের হামলায় বহু শিশু তাদের হাত অথবা বাহু হারিয়েছে। যদিও সেখানে সংখ্যা বা শতাংশ উল্লেখ ছিল না। ফিলিপ লাজারিনি সংবাদিক সম্মেলনে আরও জানিয়েছেন যে, প্রতিদিন গড়ে ১০ জন শিশু একটি পা বা দুটি পা হারাচ্ছে। এটা থেকে সহজেই বোঝা যায়, গাজার শিশুদের শৈশব কেমন ভয়ানক । তিনি আরও বলেন, প্রায় ৮ মাস ধরে টানা যুদ্ধ চলছে গাজায়। এতে প্রায় ১৭ হাজার শিশু তাঁদের আত্মীয় পরিজন এবং অভিভাবক হারিয়েছে। অপুষ্টির চরম পর্যায়ের কথা তুলে ধরে তিনি জানান, গাজার মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশেরও বেশি তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। সেখানে পরিস্থিতি এতটাই চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জন এই সমস্যায় ভুগছে। তাঁদের জীবন এখন বিপন্ন।
উল্লেখ্য, গাজার ছোট ছোট শিশুরা লাইনে দাঁড়িয়ে জলটুকু পাওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে। কিন্তু সমাধান নেই। খালি হাতে ফিরে আসতে হচ্ছে তাঁদের। একদিকে রয়েছে জলের তীব্র সংকট। অন্যদিকে বেঁচে থাকার লড়াই। কোনরকম বেঁচে থাকার তাগিদে হাজার হাজার পরিবার এখন সাগরের নোনা জল ব্যবহার করতে শুরু করেছে। একমাত্র নোনা জলই এখন ভরসা তাঁদের।
জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, গাজা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ইজরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ আগ্রাসনে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাকও সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না। ট্রাকে করে খাবার এবং বিশুদ্ধ জল নিয়ে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে গাজায় শিশুরা অপুষ্টি এবং জলশূন্যতায় মারা যাচ্ছে। বেঁচে থাকার জন্য শেষ সম্বল জলটুকুও পাচ্ছে না তাঁরা।বারবার হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েল। আর তাতেই গাজাবাসীর কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেছে না। এই কঠিন পরিস্থিতিতে গাজার মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হচ্ছে ত্রান সংস্থা। ফলে একদিকে খাবার নিয়ে ত্রাণবাহী গাড়ি অপেক্ষা করছে ততক্ষণে তীব্র খিদের জ্বালায় ছটফট করছে গাজার নিরীহ শিশুরা। শুধু শিশু নয় নারী, পুরুষ এবং বয়স্ক লোকজনদেরও অনাহারে থাকতে হচ্ছে।