মমতার দেখানো পথেই Allout খেলা শুরু কেজরির
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাস্তা আগেই দেখিয়েছেন বাংলার অগ্নিকন্যা। এবার একে একে দেশের তাবড় তাবড় নেতারা সেই পথেই হাঁটা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ২৪’র ভোটে(General Election 2024) নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) এবং তাঁর দল বিজেপিকে(BJP) হারাতে জোটব্দধ হয়েছিল দেশের সব বিজেপি বিরোধী দল। গড়ে উঠেছিল INDIA। কিন্তু প্রথম থেকেই সেই জোটকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে চলেছিল কংগ্রেস(INC)। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করে না জিততে পারা কংগ্রেস নেতৃত্ব বেশ সুকৌশলে শরিকদের কাঁধে ভর দিয়ে নিজেদের আসন বাড়ানোর রাস্তা খুলে নিয়েছিল। এমনকি যে সব রাজ্যে বা এলাকায় তাঁদের একজনও বিধায়ক নেই সেখানেও ১০-১২টি করে আসনের দাবি করা শুরু করেছিলেন নানান রাজ্যের প্রাদেশিক কংগ্রেসী নেতারা। সেই দাবিকে শিলমোহর দিয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডও দাবি জানাতে থাকে। সেই নোংরামি সবার আগেই রুখে দিয়েছেন বাংলার অগ্নিকন্যা তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলার মাটিতে ২৪’র ভোটে কোনও জোট নয়। বাংলায়(Bengal) তৃণমূল(TMC) একাই লড়বে। এবার তাঁর দেখানো সেই পথেই হাঁটা দিলেন আপ(AAP) সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল(Arvind Kejriwal)। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি, পঞ্জাব ও দিল্লিতে একাই লড়বে আম আদমি পার্টি।
মমতা তৃণমূলকে নিয়ে INDIA জোটে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিকে হারাতে। অথচ বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বাংলার কংগ্রেসি নেতারা বিজেপি বান্ধব হয়ে বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকেই হারাতে উঠে পড়ে লেগেছেন। বাংলার বিধানসভায় কংগ্রেসের ১জন বিধায়ককেও জিতিয়ে আনানোর ক্ষমতা নেই যে সব নেতাদের তাঁরা প্রকাশ্যেই বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে মমতা আর তৃণমূল বিরোধিতা শুরু করেছেন। বাধ্য হয়ে মমতাও এখন তাই বাংলায় একা লড়াই করের পথ নিয়েছেন। এই একই ছবি দেখা যাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, পঞ্জাব, মহারাষ্ট্রের বুকে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট চাইছেন না, চাইছেন মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে। অথচ মায়াবতী এখনও INDIA-তে যোগই দেননি। তিনি রীতিমত বিজেপি বান্ধব হিসাবে পরিচিতে পেয়ে গিয়েছেন। অথচ অখিলের দল শুধু যে INDIA জোটে আছে তাই নয়, তাঁরাও উত্তরপ্রদেশের প্রধান বিরোধী দল। অথচ উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতারা বিজেপিকে হারানোর জায়গায় সমাজবাদী পার্টিকে হারাতে উঠে পড়ে লেগেছে।
একই ছবি দিল্লি ও পঞ্জাবের বুকেও। সেখানেও কংগ্রেসি নেতারা শুধু যে আপের বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছেন তাই নয়, রীতিমত ক্ষমতার বাইরে বেড়িয়ে গিয়ে আসন দাবি করছেন। যেমন পঞ্জাবের বিধানসভায় ১১৭টি আসনের মধ্যে একা আপের দখলেই আছে ৯২টি আসন। কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১৮টি আসন। এনডিএর আছে ৭টি আসন। অথচ সেখানেই কংগ্রেস আপের কাছে রাজ্যের ১৩টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টি আসনের দাবি জানিয়েছে। কংগ্রেস ভুলে গিয়েছে আপ ওই ৯২টি বিধানসভা কেন্দ্র দখল করেছে একা লড়ে। কোনও জোট তাঁরা গড়েনি। সেখানে কেন তাঁরা কংগ্রেসকে রাজ্যের ৬টি লোকসভা কেন্দ্র ছেড়ে দেবে। তাই কেজরি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন পঞ্জাবের ১৩টি আসনেই প্রার্থী দেবে আপ। একাই লড়বেন তাঁরা সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে। দেখার বাকি ছিল দিল্লিতে কী হয়। এখন কেজরি জানিয়ে দিয়েছেন দিল্লিতেও ৭টি লোকসভা কেন্দ্রেই তাঁরা প্রার্থী দেবেন এবং একাই লড়বেন বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই মমতার দেখানো পথেই। বিজেপির বিরুদ্ধে Allout লড়াই। কেননা কংগ্রেস আপের কাছে দিল্লির ৪টি লোকসভা কেন্দ্র চেয়েছে। অথচ দিল্লির বিধানসভায় ৭০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ১জনও বিধায়ক নেই। আপের আছে ৬২জন বিধায়ক, আর বিজেপির মাত্র ৮জন। সূত্রের খবর হরিয়ানার ১০টি লোকসভা কেন্দ্রেই প্রার্থী দিতে পারেন কেজরি।