হাথরসে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১৬
নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তরপ্রদেশের হাথরসে পুণ্যের খোঁজে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে বেঘোরে প্রাণ হারালেন শতাধিক পুণ্যার্থী। সময় যত গড়াচ্ছে ততই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুমিছিলের সারি। মঙ্গলবার রাত আটটা নাগাদ আলিগড়ের বিভাগীয় কমিশনার জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ১১৬ জন পুণ্যার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। গুরুতর জখম হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ১৮ জন। উদ্ধারকার্য চালাতে ইতিমধ্যেই হাথরসের উদ্দেশে রওনা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। ভয়াবহ দুর্ঘটনার দায়ভার কার তা নিয়ে আয়োজকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কাজিয়া শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন হাথরসের রতিভানপুরের মুঘলাগড়ি গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন নারায়ণ সাকার ওরফে ‘ভোলে বাবা’ নামে স্বঘোষিত এক ধর্মীয় গুরু। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল। সৎসঙ্গের জন্য যে মণ্ডপ বাঁধা হয়েছিল, তা ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা ছিল। প্রচণ্ড আর্দ্রতা এবং গরমের কারণে সকলেই হাঁসফাঁস করছিলেন। ফলে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেই হাজির পুণ্যার্থীরা হুড়মুড়িয়ে মাঠের বাইরে বেরনোর চেষ্টা করেন। আর তাতেই বিপত্তি ঘটে। প্রবেশ এবং বহির্গমনের জন্য যে গেট তৈরি হয়েছিল, সেটিও অত্যন্ত সংকীর্ণ হওয়ার কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অনেকেই হুড়োহুড়িতে মাটিতে পড়ে যান। আর মাটিতে পড়ে যাওয়া পুণ্যার্থীদের মাড়িয়ে যান বাকিরা। অনেকে পদপিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে সিকন্দরারাউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আহতদের নিয়ে গেলেও সেখানে চিকিৎসা করার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছিল না। হাসপাতালে মাত্র এক জন চিকিৎসক ছিলেন। ফলে চিকিৎসার গাফিলতির কারণে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর দেড় ঘণ্টা কেটে গেলেও প্রশাসনের কোনও আধিকারিককে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।
যে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই অনুষ্ঠানের আয়োজক মহেন্দ্র চন্দ্র দুর্ঘটনার দায়ভার জেলা প্রশাসনের কাঁধেই চাপিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানে যে লক্ষাধিক পুণ্যার্থী যোগ দেবেন, তা আগেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু জেলা প্রশাসন অনুষ্ঠানের অনুমতি দিলেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি।’ যদিও জেলাশাসক আশিসকুমার এবং পুলিশ সুপার রাজেশ কুমার সিংহ ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।