হাসিনার মন্তব্যের প্রতিবাদে মধ্যরাতেই রাস্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা, উত্তাল বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনকারীদের নিশানা করতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তাঁর ওই মন্তব্যের প্রতিবাদে রবিবার মধ্যরাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল ছেড়ে রাস্তায় নামলেন পড়ুয়ারা। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল রাজধানী ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন অংশ। বেশ কয়েক জায়গায় পথ আবরোধও করেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নাকানিচোবানি খেতে হয় পুলিশকে।
গত কয়েকদিন ধরেই সরকারি চাকরিতে কোটা তুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন ঢাকা-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। ওই বিক্ষোভের জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা দেশ। রাষ্ট্রপতি, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের অনুরোধেও আন্দোলন প্রত্যাহারে রাজি হননি বিক্ষোভকারীরা। সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের ফলে অনেকটাই অস্বস্তিতে পড়েছে সরকার। চিন সফর সেরে দেশে ফিরে রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসেন তিনি। খানিকটা কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনিরা কোটা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিরা কোটা পাবে? তা তো আমরা দিতে পারি না।’
শেখ হাসিনার ওই মন্তব্য আন্দোলনকারীদের ক্ষোভের আগুনে ঘৃতাহুতি দেয়। রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা হস্টেল ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। আন্দোলনকারীরা শ্লোগান দিতে থাকেন, ‘আমি কে, আমি কে- রাজাকার রাজাকার’, ‘এই বাংলার মাটি- রাজাকারের ঘাঁটি’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’। পড়ুয়াদের শ্লোগানে রাতের নিস্তব্ধতা খানখান হয়ে যায়। অধিকাংশ বিক্ষোভকারীই প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘ভোট লুঠ করে ক্ষমতা দখল করা প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচারীর মতো কথা বলছেন। ছাত্র সমাজকে ‘রাজাকার’ আখ্যা দিয়ে চরম অপমান করেছেন।’