বেআইনি শব্দবাজি রুখতে বড়বাজারে পুলিশের হানাদারি
নিজস্ব প্রতিনিধি: হাতে আর আমাত্র কয়েকটা দিন। তারপরেই কালিপুজো(Kali Puja) সহ দীপাবলীতে(Diwali) মেতে উঠবেন বাংলার মানুষজন। এইবছর আদালতের নির্দেশে কোথাও সবুজ বাজি(Green Crackers) ভিন্ন অন্য কোনও বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। তবুও সাবধানের মার নেই। সবুজ বোমার আড়ালে ফাটতে পারে চকোলেট বোমা থেকে শেল বা দোদোমাও। তাই বেআইনি শব্দবাজি রুখতে এদিন অর্থাৎ শনিবার সকাল থেকেই কলকাতার(Kolkata) বড়বাজারের(Barabazaar) একের পর এক গোডাউনে চলছে পুলিশের তল্লাশি অভিযান। এবার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটানোর অনুমতি দিলেও তা ‘সবুজ বোমা’ হতেই হবে, এমনই নির্দেশ আদালতের। একই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court) রাজ্য সরকারের কাছ থেকে জবাবদিহি চেয়ে পাঠিয়েছে যে, কেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটানোর অনুমতি দিল। কিসের ভিত্তিতে সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেটাও জানাতে চাওয়া হয়েছে। তার মাঝেই শুরু হয়েছে পুলিশের অভিযান।
প্রায় ২৫ বছর ধরে কলকাতা-সহ রাজ্যে শব্দবাজি নিষিদ্ধ। তাই কালিপুজো, দীপাবলি বা ছটপুজোর সময় পুলিশের নজর থাকে শব্দবাজির দিকে। কোথাও বাজির শব্দ শুনতে পেলে বা কোনও অভিযোগ এলেও সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে গিয়েছে পুলিশ। যারা শব্দবাজি ফাটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে আইনি ব্যবস্থা। শব্দবাজি নিয়ে রকমফেরের কথা কখনও পুলিশকে ভাবতে হয়নি। অনেকে চোরাপথে শব্দবাজি কিনলেও পুলিশের ভয়ে তাদের পিছিয়ে আসতে হয়েছে। এই বছরও নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানো যাবে না। কিন্তু ‘সবুজ শব্দবাজি’, যার শব্দের মাপ ১২৫ ডেসিবেল পর্যন্ত, এমন বাজি ফাটানো যাবে। ওই ধরনের বাজি সম্পর্কে পুলিশও জানার চেষ্টা করছে। ঘটনাচক্রে এদিনই টালা পার্কে বাজি পরীক্ষা করবে পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ। তাতে ‘সবুজ শব্দবাজি’র বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হবে পুলিশের কাছে। যদিও পুলিশকর্তাদের মতে, ‘সবুজ শব্দবাজি’ হয়তো পরিবেশ বান্ধব। কিন্তু শব্দদূষণে তা হয়তো অন্যান্য নিষিদ্ধ শব্দবাজির থেকে কম না-ও হতে পারে। ফলে বাজি ফাটানোর শব্দ শুনতে পাওয়া গেলেও তা আসলে নিষিদ্ধ শব্দবাজি না কি বৈধ ‘সবুজ শব্দবাজি’, তা বোঝা খুব সহজ না-ও হতে পারে।
তাই এখন থেকেই নিষিদ্ধ শব্দবাজি রুখতে মাঠেনেমে পড়েছে পুলিশ। লালবাজারের হাতে রয়েছে এমন বাজি ব্যবসায়ীদের তালিকা যাদের লাইসেন্স রয়েছে বাজি বিক্রি করার। এরাই শুধু গোডাউনে বাজি মজুত করতে পারেন। তাঁদের গোডাউন ছাড়া অন্য কোনও গোডাউনে বাজি মজুত করা আছে কিনা, এখন থেকেই তার খোঁজ চালাতে শুরু করেছে পুলিশ। তাই এদিন সকাল থেকেই বড়বাজার, পোস্তা, জোড়াবাগান, জোড়াসাঁকো-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় গোডাউনে শুরু হয়েছে পুলিশের তল্লাশি। সংশ্লিষ্ট থানা ছাড়াও রিজার্ভ ফোর্স, গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা চালাচ্ছেন এই তল্লাশি। কারণ লাইসেন্সবিহীন কোনও গোডাউনই কোনও ধরনের বাজিই মজুত করতে পারেন না। যদিও এক পুলিশকর্তা জানান, এখনও কোনও গোডাউন থেকে বেআইনি বাজি ধরা পড়েনি। বৈধ গোডাউনগুলিতেও তল্লাশি চালিয়ে দেখা হয়েছে, কিউ আর কোড-সহ বৈধ বাজি ছাড়া সেখানে কোনও নিষিদ্ধ আতসবাজি বা শব্দবাজি মজুত করা রয়েছে কি না।