আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করছে, পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের
নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করতে চলেছে। শুক্রবার আলিপুর আবহাওয়া দফতরের(Alipur Weather Office) পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা সোমনাথ দত্ত এই খবর জানিয়েছেন। তিনি বলেন,দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু আগামী চার-পাঁচ দিনের মধ্যে ওড়িশা, অন্ধ্র উপকূল, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশ এবং বিহারের কিছু অংশে অগ্রসর হবে। ফলে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের(North Bengal) বাকি জায়গায় বর্ষা ঢোকার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে। তবে তার আগে প্রাক্-বর্ষার বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গ ভিজতে পারে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। শুক্রবারও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়-বৃষ্টি পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। রবিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে একাধিক জেলায় বৃষ্টি শুরু হবে বলে পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে।পূর্ব থেকে পশ্চিম একটি অক্ষরেখা রয়েছে উত্তরপ্রদেশ থেকে মেঘালয় পর্যন্ত সেটি অসম ও উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে গেছে। এছাড়াও একটি ঘুনাবর্ত রয়েছে পূর্ব বিহার ও উত্তরবঙ্গের উপরে। মূলত এর টানেই বর্ষা। অবশেষে দক্ষিণবঙ্গে আসবে বর্ষা ৩১ শে মে থেকে ইসলামপুরের উপরেই অবস্থান করছিল দক্ষিন পশ্চিম মৌসুমি বায়ু।
পরিস্থিতি অনুকূল হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গে আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ঢুকবে বর্ষা। ১৮ই জুন থেকে কুড়ি জনের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করতে পারে বলে অনুমান আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের। আজ ভারতের মৌসম ভবন জানিয়েছে আগামী চার পাঁচ দিনের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু উত্তরবঙ্গের বাকি অংশ এবং দক্ষিণবঙ্গের কিছু অংশে ঢুকে পড়বে। অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার এর মধ্যে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি বর্ষা ঢোকার প্রবল সম্ভাবনা।উত্তরবঙ্গে অতি বৃষ্টিতে দুর্যোগে দুর্ভোগ বাড়ছে। আরো পাঁচ দিন প্রবল বৃষ্টি ও দুর্যোগ চলবে। শুক্রবার অতিভারী বৃষ্টি হয় আলিপুরদুয়ার ,জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং জেলায়। এই তিন জেলার কয়েক জায়গায় ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা। দার্জিলিং, কোচবিহার জেলার কিছু অংশে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া থাকবে।শনিবারেও আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলতে থাকবে।দার্জিলিং ও কালিম্পং এর পার্বত্য এলাকাতে ভারী বৃষ্টি সঙ্গে দমকা ঝোড়ো বাতাসের সম্ভাবনা।বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝড়ো বাতাস বইবে মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে।
শনিবারের মতোই পরিস্থিতি থাকবে রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত।দক্ষিণবঙ্গে চরম তাপপ্রবাহ এবং তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি পশ্চিমের জেলাগুলিতে। শুক্রবারে চরম তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি এবং তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান ,পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতে। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে ঝাড়গ্রাম ,পূর্ব বর্ধমান, বীরভূমও বাঁকুড়া জেলাতে। এই জেলাগুলিতে দুপুরের পর থেকে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে। চরম গরম ও অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকবে হুগলি, হাওড়া, কলকাতা, উত্তর চব্বিশ পরগনা ,নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলাতে। বিকেল সন্ধ্যায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার দমকা ঝড়ো হাওয়া।শনিবার পশ্চিমের পাঁচ জেলাতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি। পশ্চিম মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম পুরুলিয়া বাঁকুড়া পশ্চিম বর্ধমান জেলায় তাপপ্রবাহ চলবে। দুপুরের পর থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন। বেশ কয়েক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস। বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে।রবিবার ও সোমবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা। ঝড়ের গতিবেগ ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার এবং বৃষ্টির পরিমাণ আরো একটু বাড়বে।মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার ফেয়ারলি ওয়াইড স্প্রেইড রেইন এর সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গে। বুধবার থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলাতে।
সিকিম (Sikkim)সহ জলপাইগুড়ি ও বিস্তীর্ণ এলাকায় নদীগুলিতে জল স্তর বাড়তে শুরু করেছে।সিকিমের মঙ্গন সাংকালাং-এ ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর লাচুং এবং চুংথাং-এ আটকা পড়েছেন ১৫০০এর বেশি পর্যটক। ৪ অক্টোবর, ২০২৩এ, সিকিমের লোনাক হ্রদের জলে মাঙ্গানের সাংকালং ব্রিজটি সম্পূর্ণভাবে ভেসে যায়। এরপর চলতি বছরের সাংকালংয়ে তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত নতুন সেতুটি বৃহস্পতিবার বিকেলে তিস্তার বন্যায় ভেঙে পড়ে। মঙ্গন জংগু এবং চুংথাং এর সাথে গ্যাংটকের একমাত্র সংযোগকারী রাস্তা হল সাংকালাং ব্রিজ। সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেতু ভেঙে পড়ায় এখনও পর্যন্ত জঙ্গু, চুংথাং, লাচেন ও লাচুং সাংকালাংয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ফলস্বরূপ, চুংথাং এবং লাচুং-এ ১৫০০ এরও বেশি পর্যটক আটকা পড়েছেন। দুর্ঘটনা এড়াতে আটকা পড়া পর্যটকদের যেখানে সেখানে থাকতে বলা হয়েছে।পর্যটকরা(Tourist) যাতে কোনও অসুবিধার সম্মুখীন না হয় তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সূত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় তথ্য পাঠানো হয়েছে এবং সিকিম সরকারও সজাগ দৃষ্টি রাখছে। সিকিম প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে যে প্রশাসন এই অঞ্চলে সংযোগ পুনরুদ্ধার করতে দিনরাত কাজ করছে, তবে অবিরাম বৃষ্টি এবং নতুন ভূমিধসের কারণে রাস্তা মেরামত ব্যাহত হয়েছে। সিকিমের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে যোগাযোগের সমস্যা হচ্ছে। প্রবল বৃষ্টিতে উত্তর সিকিমে এখনও পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে,জলপাইগুড়িতে একটানা বৃষ্টি, NH- 31 জলঢাকায় সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করল সেচ দফতর। জলপাইগুড়ি গজলডোবা ব্যারেজ থেকে শুক্রবার সকাল ছটায় ১৫৫০.৫৬ কিউমেক জল ছাড়া হয়েছে।আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে শুক্রবার সকাল থেকেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলছে জলপাইগুড়িতে।