ভরতপুরে পঞ্চায়েত অফিসে অস্ত্র নিয়ে দাপালেন এক ব্যক্তি
নিজস্ব প্রতিনিধি,ভরতপুর: টাকা হারিয়ে যাওয়ার গণ্ডগোলের জেরে পঞ্চায়েত প্রধানের ঘরে ঢুকে এক বাসিন্দা ধারাল অস্ত্র উঁচিয়ে শাসানি দিল। এমনকি পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীর বুকে ওই অস্ত্র ঠেকিয়ে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ভরতপুর(Bharatpur) ১ ব্লকের ভরতপুর পঞ্চায়েতে। পরে পঞ্চায়েত প্রধান গোটা বিষয়টি জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ করেছেন। তবে অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক। পুলিশ তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, রওশন আকবর মল্লিক ওরফে মুক্তার মল্লিক (Muktar Mallick)নামে বছর ৪৫ এর ওই ব্যক্তি হঠাৎ করে পঞ্চায়েতে ঢুকে হম্বিতম্বি করতে থাকে। সেখানে তিনি পঞ্চায়েতের সদস্য রীতা হাজরার স্বামী কার্তিক হাজরার খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু তাঁকে না পেয়ে সোজা মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানের ঘরে ঢুকে একটি চেয়ারে বসে পড়েন। সেখানে পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা মণ্ডলের স্বামী কালী কুমার মণ্ডলের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন।সিসি ক্যামেরার(CCTV) ফুটেজে দেখা যায় ওই সময় হঠাৎ করেই ওই ব্যক্তি প্যান্টের পিছন থেকে প্রায় এক ফুটের ধারালঅস্ত্র বের করে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে মারতে উদ্যোত হয়। বুকে লাগিয়ে শাসাতে থাকে। সেইসময় পঞ্চায়েত প্রধান চিৎকার শুরু করলে অফিস কর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। প্রধানের ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় ওই ব্যক্তিকে। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরে সেখানে ভরতপুর থানার পুলিস এসে পৌঁছলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এবিষয়ে পঞ্চায়েত সদস্য(Panchayet Member) রীতা হাজরার স্বামী কার্তিক হাজরা বলেন, এবারের পঞ্চায়েত ভোটে অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রী আমার স্ত্রীর কাছে হেরে গিয়েছিল। এদিকে অক্টোবরের ২১ তারিখে আমাদের পাড়াতে মুক্তারের ঘনিষ্ট এক লটারি বিক্রেতা নেশা করছিল। সেইসময় পাড়ার কয়েকজন ছেলে তাকে উদ্ধার করে রাস্তার এক পাশে রেখে দেয়। এর পরদিন সকালে ওই লটারি বিক্রেতা পাড়ায় এসে অভিযোগ করে যে নেশাগ্রস্থ অবস্থায় তার ব্যাগ থেকে কেউ ১০ হাজার টাকা বের করে নিয়েছে। এই সমস্যা নিয়ে এদিন সকালে অভিযুক্ত কার্তিক বাবুর কাছে এসে টাকা উদ্ধার করার প্রস্তাব দেন। পরে শালিসি হলেও হারিয়ে যাওয়া টাকা উদ্ধার করা যায়নি।তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তের দাবি হল হারিয়ে যাওয়া টাকা আমাকে মেটাতে হবে। আমি তাতে রাজি না হওয়ায় পঞ্চায়েতে এসে আমার খোঁজ চালাচ্ছিল।
এদিকে অভিযুক্ত ওই বাসিন্দাকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বাড়িতে গেলেও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তের স্ত্রী বেলি বিবি বলেন, উনি কোথায় আছেন, কী হয়েছে আমার কিছুই জানা নেই। তবে মোবাইল বাড়িতে পড়ে রয়েছে।পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, এদিন আমার ঘরে ঢুকে হঠাৎ করে বসে পড়ে ওই ব্যক্তি। স্বামী উনাকে কী ব্যাপার জীজ্ঞাসা করতেই প্যান্টের পিছন থেকে ধারালঅস্ত্র বের করে কোপাতে যায়। সেই সময় ওনাকে অনুরোধ করি যে দাদা আপনার সমস্যার কথা বলুন। কিন্তু উনি আমাকেও অস্ত্র দেখিয়ে শাসাতে থাকেন। তখন আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করি।পঞ্চায়েত প্রধান আরও বলেন, যতক্ষন না অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে,ততক্ষন পঞ্চায়েত কর্মীরা কর্মবিরতি পালন করবে।ভরতপুর থানার পুলিস জানিয়েছে, অভিযুক্ত পলাতক। তবে ওই ব্যক্তির নামে একাধিক অপরাধমূলক ধারায় মামলা রয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।