গাজায় যু্দ্ধ বন্ধে ইজরায়েলের নতুন প্রস্তাব মেনে নিতে হামাসের প্রতি আহ্বান বাইডেনের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজায় ইজরায়েলের নারকীয় হত্যাকান্ড দীর্ঘ সাত মাস পেরিয়ে গেছে। তবুও থামার কোন লক্ষণই নেই। যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে এবার ইজরায়েলের নতুন প্রস্তাব মেনে নিতে হামাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি জানান, এই যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে ইজরায়েলের নতুন প্রস্তাব যদি হামাস মেনে নেন তবেই যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে। তিনি আরও জানান, ‘এই যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় এসেছে।’
স্থানীয় সময় (৩১ মে) শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বাইডেন এই আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ‘তিন পর্যায়ের নতুন এই প্রস্তাবে গাজায় পুরোপুরি যুদ্ধবিরতি কার্যকরের সুযোগ রয়েছে। এখণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে।’ এই প্রসঙ্গে তিনি হামাসের উদ্দেশ্যে আরও জানিয়েছেন যে হামাসের প্রমাণ করার সুযোগ এসেছে তাঁরা সত্যিই যুদ্ধ বিরতি চায় কি না। যেহেতু তাঁরা (হামাসরা) বরাবরই জানায় তাঁদের যুদ্ধবিরতি চায়। এই প্রস্তাব তাঁদের সামনে একটা বড় সুযোগ। তারা যদি চায় এই যু্দ্ধ বন্ধ হতে পারে। হামাস চাইলে যুদ্ধবিরতি হবে।
ইজরায়েলের নতুন প্রস্তাবে যা আছে তা হল- আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, প্রস্তাবটি তিনটি পর্যায়ে বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছে।
প্রথম পর্যায় : প্রথম পর্যায়ে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে। এ সময়ে গাজার সব জনবহুল এলাকা থেকে ইজরায়েলি সেনাদের তুলে নেওয়া হবে।যুদ্ধবিরতির সময় হামাস ‘নির্দিষ্ট সংখ্যক’ জিম্মিকে মুক্তি দেবে। তাদের মধ্যে নারী, বয়স্ক ব্যক্তি এবং আহত জিম্মিরা থাকবেন। এর বিনিময়ে ইজরায়েলে বন্দি থাকা কয়েক’শ মানুষকে মুক্তি দেওয়া হবে। শুধু তাই নয় গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানো হবে। গাজায় প্রতিদিন মানবিক সহায়তাবাহী ৬০০ ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজাবাসীর জন্য হাজারো সাময়িক আবাসনের ব্যবস্থা করবে।
দ্বিতীয় পর্যায় : বাকি জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। তাদের মধ্যে জিম্মি পুরুষ সেনারাও থাকবেন। সেই সঙ্গে গাজা উপত্যকা থেকে ইজরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ সেনাকেও সরিয়ে নেওয়া হবে। এই যুদ্ধবিরতিকে ‘স্থায়ীভাবে শত্রুতা বন্ধে’ উন্নীত করা হবে।
তৃতীয় পর্যায় : জিম্মি ফেরানোর প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ করা হবে। গাজার জন্য বড় ধরণের একটি ‘পুনর্গঠন পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন শুরু করা হবে। এর আওতায় মার্কিন ও আন্তর্জাতিক সহায়তায় গাজা উপত্যকায় বাড়ি, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল পুনর্নির্মাণ করা হবে।
উল্লেখ্য জাতিসংঘের মতে, ইজরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, জল এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।