মাঝরাতে গাড়ি ঘিরে ধরে বাইকের চক্কর, ভয়ে গৃহবন্দি বিরিয়ানি ব্যবসায়ী
নিজস্ব প্রতিনিধি: মধ্যরাতের আতঙ্ক(Midnight Terror)। রাস্তার মাঝে ব্যবসায়ীর গাড়ি ঘিরে ধরে চারপাশে চক্কর কাটল নম্বর প্লেটহীন বাইক(Number Plaitless Bike)। বছর দুয়েক আগে এই ব্যবসায়ীর দোকানেই গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। তখন প্রাণে বেঁচে গেলেও এবার কী হবে? এই ভয়েই নিজেকে গৃহবন্দী করে রেখেছেন বিরিয়ানি ব্যবসায়ী অনির্বাণ দাস(Anirban Das)। উত্তর শহরতলি ও ব্যারাকপুরের এলাকায় তাঁদের বিরিয়ানি দোকানে সুনাম আছে। ডি বাপি(D Bapi Biriyani) নামেই পরিচিত সেই দোকানের নাম। মঙ্গলবার রাতে সেই অনির্বাণকেই পড়তে হল আতঙ্কের মুখে। শুধু তাই নয়, গত কয়েক মাস ধরেই তাঁর কাছে এসেছে ফোন। দিতে হবে ২০ লক্ষ টাকা। আর না দিলেই হতে হবে গুলিতে ঝাঁঝরা। তার মাঝেই গতকাল তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে বাইকের চক্কর। এখনও অনির্বাণের শিরদাঁড়া দিয়ে নামছে শীতল হিমস্রোত। আতঙ্কের স্রোত।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত ১টার কিছু পরে ব্যারাকপুরের(Barracpur) দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন অনির্বাণ। সেই সময় থেকেই তাঁর পিছু নেয় দুই বাইক আরোহী। অনির্বাণ বাড়ির কাছাকাছি যেতেই তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরে চক্কর কাটে সেই দুই নম্বর প্লেটহীন বাইক। এরপর একজন বাইক আরোহী তাঁর মোহনপুর বাড়ির দিকে চলে যায়। অপরজন অনির্বাণকে নজরে রাখে। এর পর অনির্বাণ রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশের কাছে যেতেই বেগতিক বুঝে বাইক আরোহী এলাকা থেকে চলে যায়। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। ঘটনার পর কার্যত গৃহবন্দি ব্যবসায়ী অনির্বাণ। বছর দুয়েক আগে তাঁদের বিরিয়ানির দোকানে গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। আবারও কি তেমন কিছু ঘটতে চলেছে? আতঙ্কে রাতে ঘুম উড়েছে ব্যবসায়ীর পরিবারের চোখ থেকে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে কিছু সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। কিন্তু এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ২০২২ সালের ১৬ মে বাইকে করে ৩জন দুষ্কৃতী ব্যারাকপুর ওয়ারলেস মোড় সংলগ্ন ডি বাপির দোকানে হামলা চালায়। সেদিন ওই দোকানে পরপর ৭ রাউন্ড গুলি চলে। এই ঘটনায় জখম হন দোকানের কর্মী এবং একজন ক্রেতা। তারপর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন ও মেসেজ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ২০ লক্ষ টাকা না দিলে মধ্যমগ্রামের দোকানেও গুলি চালানো হবে। ফলে প্রবল আতঙ্কে রয়েছেন অনির্বাণ ও তাঁর পরিবার।
এই অবস্থায় এদিন অনির্বাণ জানিয়েছেন, ‘এইভাবে আমরা ব্যবসা করতে পারছি না। সাধারণ মানুষ এলেও ভয় লাগছে। ভাল মানুষকেও সন্দেহের চোখে দেখছি। ভাল শার্ট-প্যান্ট পরে এসে গুলি করে দিয়ে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে বেরতে পারছি না। সিপি-কে জানিয়েছি। ২০ লক্ষ টাকা তোলা চাওয়া হয়েছিল আগে। না দিলে অ্যাকশান নেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। কখনও ফোন করে, কখনও মোবাইলে মেসেজ করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। কখনও বিহার থেকে এসেছে ফোন। আতঙ্কে নিজেকে বাঁচাতে কখনও বাড়ি পাল্টেছি, কখনও গাড়িও পাল্টেছি। কিন্তু এইভাবে আর ক’দিন? হয় মরতে হবে, নাহলে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।’