For the best experience, open
https://m.eimuhurte.com
on your mobile browser.
OthersWeb Stories খেলা ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ বিনোদন শিক্ষা - কর্মসংস্থান শারদোৎসব লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না রাজ্য বিবিধ আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর
Advertisement

অনুব্রতহীন বীরভূমে প্রচারের জমিই খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি

অনুব্রত মন্ডলের জেলায় তাঁর অনুপস্থিতিতেও বিন্দুমাত্র জমি দখল করতে পারছে না পদ্মশিবির। বিজেপি কার্যত ভোটের আগেই সেখানে হেরে বসে আছে।
05:07 PM Apr 06, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
অনুব্রতহীন বীরভূমে প্রচারের জমিই খুঁজে পাচ্ছে না বিজেপি
Courtesy - Facebook
Advertisement

কৌশিক দে সরকার: তিনি থাকলে এতদিনে হয়তো আরও একবার গুড়-বাতাসার মাধ্যমে বিরোধী পক্ষকে স্বাগত জানানোর নিদান দিয়েই দিতেন। সেই সঙ্গে চড়াম চড়াম ঢাক বাজানোর কথাও হয়তো বলতেন। কিন্তু তিনি আপাতত নেই। মানুষের মানস জগতে তিনি থেকে গেলেও এটা চরম সত্য যে লোকসভা নির্বাচনের আবহে বীরভূমের(Birbhum) মাটিতে তিনি চূড়ান্ত ভাবে অনুপস্থিত। কিন্তু সেই অনুপস্থিতির ফায়দা বিন্দুমাত্র নিতে পারছে না বিরোধীরা। বিশেষ করে বিজেপি(BJP)। গেরুয়া শিবিরের প্রচারের দশা দেখলে এখন বাচ্চা ছেলেও হাসবে। হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন, অনুব্রত মন্ডলের(Anubrata Mondol) জেলায় তাঁর অনুপস্থিতিতেও বিন্দুমাত্র জমি দখল করতে পারছে না পদ্মশিবির। কিবা বীরভূম, কিবা বোলপুর, দুই লোকসভা কেন্দ্রেই কার্যত ছন্নছাড়া দশা পদ্মশিবিরের। প্রার্থীর দেখা মেলে তো প্রচারের লোক মেলে না, আর প্রচারের লোক আসে তো প্রার্থীর দেখা মেলে না। তুলনায় বামেরা ছোট ছোট সভা করে গ্রামে গ্রামে গিয়ে কিছুটা হলেও প্রচারের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

Advertisement

বীরভূম জেলা দীর্ঘদিনের লালদুর্গ। পরিবর্তনের ঝড়ে সেই দুর্গ ধসে গিয়েছে বছর ১০ আগেই। ধস নামা শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকেই। ৮ বারের বাম সাংসদ রামচন্দ্র ডোমকে হারিয়ে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হন শতাব্দী। যদিও সেই বছরও বোলপুর লোকসভা কেন্দ্র ধরে রেখেছিল বামেরা। কিন্তু ২০১৪ সালে সেই দুর্গও ধসে পড়ে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শেষবারের মতো লাল পার্টি জিতেছিল বীরভূমের মাটি থেকে। জেলার ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে শুধুমাত্র নানুরে জয়ী হয়েছিল বামেরা। কার্যত পরিবর্তনের পরে সময় যতই এগিয়েছে ততই বীরভূম জুড়ে অনুব্রত মন্ডলের প্রভাব ও প্রতিপত্তি বেড়েছে। তাঁর হাত ধরে জেলার প্রতিটি কোনায় কোনায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। বামেদের জমিহারা দশা কিছুটা হলেও অক্সিজেন জুগিয়েছিল বিজেপিকে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই জেলার প্রধান বিরোধী পক্ষ হিসাবে উঠে আসে বিজেপি। আর সেই উঠে আসার নেপথ্যে ছিলেন দুধকুমার মন্ডল(Dudh Kumar Mondol)। কার্যত তাঁর হাত ধরেই লাভপুর, রাজনগর, খয়রাশোল, সিউড়ি, মহম্মদবাজার, সাঁইথিয়া, ময়ূরেশ্বর, রামপুরহাট, নলহাটির মতো এলাকায় বিজেপির সংগঠন বেড়ে গিয়েছিল হু হু করে।

Advertisement

অনেকেই ভেবেছিল অনুব্রতকে টেক্কা দিয়ে দুধকুমার জেলার একাধিক আসনে পদ্ম ফোটাতে সক্ষম হবেন একুশের ভোটে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, দুধ ভাল সংগঠক হলেও অনুব্রত’র বিকল্প নন। আর তাই কেষ্টের দয়ায় জেলায় শুধুমাত্র দুবরাজপুর আসনে পদ্ম ফুটলেও জেলায় আর কোথাও বিজেপি সেভাবে দাগ কাটতে পারেনি। তবে জেলার বাকি ১০টি বিধানসভা কেন্দ্রেই তাঁরা উঠে আসে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে। কিন্তু এর পর থেকেই ছবিটা বদলে যেতে থাকে। দুধ ছিলেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ। একুশের ভোটের পরে দিলীপের গদি যাওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে দুধকেও জেলা বিজেপির সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরিবর্তে যাদের হারে দল যায় তাঁরা সেভাবে দলের সংগঠনই সাজিয়ে উঠতে পারেননি আজও। দুধ যেটা কেষ্ট’র উপস্থিতিতে জেলার একটা বড় অংশজুড়ে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন সেই সংগঠন আর ধরে রাখতে পারেননি দুধের উত্তরসুরীরা। এবারে ২৪’র ভোটে(Loksabha Election 2024) অনেকেই আশা করেছিলেন দুধকে হয়তো দল বীরভূম লোকসভা আসনে প্রার্থী করবে। কিন্ত তা করা হয়নি। পরিবর্তে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে একুশের ভোটে কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি চালানোর ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত প্রাক্তন পুলিসঝ আধিকারিক দেবাশিষ ধরকে। তাঁকজে প্রার্থী হিসাবে মেনে নিতেই পারেনি দলের অনেকেই। একই ছবি বোলপুরের ক্ষেত্রেও। সেখানে পিয়া সাহাকে প্রার্থী হিসাবে মানতে পারছেন না বিজেপিরই নীচুতলার কর্মীরা।

প্রার্থী নিয়ে আপত্তি কোথায়? বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেত্যাদের দাবি, শীতলকুচির ঘটনার সঙ্গে বিজেপির সরাসরি কোন যোগ এতদিন সামনে আসেনি। কিন্তু এখন দেবাশিষকে প্রার্থী করে কার্যত বুঝিয়ে দেওয়া হল বিজেপির নির্দেশেই সেখানে গুলি চলেছিল। আর সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন দেবাশিষ ধর। এই লোককে কে ভোট দেবে? এর জন্য কোন মুখে দলের নীচুতলার কর্মীরা মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চাইবে। যার নিজের মা আর মেয়ে তাঁর মুখ দেখতে চায় না, তাঁকে কে ভোট দেবে? তাঁর জন্য কে ভোট চাইবে? মানুষই বা কেন ভোট দেবে? স্বাভাবিক ভাবেই দেবাশিষের প্রচারে বিজেপি কর্মীদেরই দেখা মিলছে না। প্রচারও সেভাবে শুরুও করতে পারেননি তাঁরা। অন্যদিকে পিয়া একুশের ভোটে সাঁইথিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। হেরেছিলেন ১৫ হাজারেরও বেশি ভোটে। যাকে মাঠেঘাটে, দলের মিটিংয়ে, মিছিলে, সভাতে, কর্মসূচীতে দেখতেই পাওয়া যায় না, তাঁকে কে ভোট দেবে? কেনই বা দেবে! আর তাই বীরভূম জুড়ে দাপটে চলছে তৃণমূলের(TMC) প্রচার। বিজেপি কার্যত ভোটের আগেই সেখানে হেরে বসে আছে।

Advertisement
Tags :
Advertisement