For the best experience, open
https://m.eimuhurte.com
on your mobile browser.
OthersWeb Stories খেলা ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ বিনোদন শিক্ষা - কর্মসংস্থান শারদোৎসব লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না রাজ্য বিবিধ আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর
Advertisement

প্রয়াত 'নেহেরুর বউ’ বুধনি মেঝেন, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন DVC’র

জীবনের বহু ঝড়জল অতিক্রম করে নেহেরুর হাত থেকে মালা পড়া বুধনি মেঝেন শুক্রবার রাতে প্রয়াত হলেন অতন্ত অনাদরে পাঞ্চেতের হাসপাতালে।
05:15 PM Nov 18, 2023 IST | Koushik Dey Sarkar
প্রয়াত  নেহেরুর বউ’ বুধনি মেঝেন  শ্রদ্ধাজ্ঞাপন dvc’র
Courtesy - Google
Advertisement

নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু(Jawaharlal Nehru) ১৯৫৯ সালে ৬ ডিসেম্বর পাঞ্চেতে(Panchet) এসেছিলেন DVC’র জলাধার ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করতে। সেদিন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে সুইচ অন করে দামোদর নদের(Damodar River) ওপর গড়ে ওঠা পাঞ্চেত বাঁধের উদ্বোধন করেছিলেন ১৫ বছরের সাঁওতাল মেয়ে বুধনি মেঝেন(Budhni Mejhen)। সেদিন ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে নেহেরুকে গলায় মালা পড়িয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন বুধনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, নেহরু সেই মালা পরিয়ে দিয়েছিলেন বুধনিকে। শুধু তাই নয়, নেহরু সে দিন বাঁধের উদ্বোধনও করিয়েছিলেন বুধনিকে দিয়ে। কিন্তু বুধনির গলায় নেহেরুর মালা পড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি আদিবাসী সমাজ। আজ থেকে ৬৪ বছর আগে সেদিনের মাত্র ১৫ বছরের বুধনিকে তাঁরা চিহ্নিত করেছিলেন, ‘নেহেরুর বউ’ বলে। আর সেই কারণেই বুধনিকে সামাজিক বয়কট করার পাশাপাশি তাঁকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়াও হয়েছিল। জীবনের বহু ঝড়জল অতিক্রম করে সেই বুধনি শুক্রবার রাতে প্রয়াত হলেন অতন্ত অনাদরে।

Advertisement

ঠিক কী হয়েছিল? ১৯৫৯ সালে ৬ ডিসেম্বর DVC’র পাঞ্চেত জলাধারের উদ্বোধনে এসেছিলেন দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেহেরু। বাঁধ নির্মাণের কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন আশপাশের গ্রামগুলির বেশ কিছু আদিবাসী নারী-পুরুষ। উদ্বোধনের দিন নেহরুকে দেখার জন্য তাঁরাও হাজির ছিলেন সে দিন। সেই দলে ছিলেন ১৫ বছরের বুধনিও। নেহরুর গলায় মালা পরিয়ে স্বাগত জানাবে কে? DVC’র কর্তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দায়িত্ব পড়েছিল ১৫ বছরের সাঁওতাল মেয়ে বুধনির ওপর। নেহরুর গলায় মালা পরিয়ে স্বাগত জানিয়েছিলেন বুধনি। খালি সেদিন বুধনি কেন কেউই জানতো না সেই ঘটনা বুধনির নিজের জীবন কীভাবে ছারখার করে দিতে চলেছে। পরপুরুষের সঙ্গে মালাবদলের ‘অপরাধে’ তাঁকে আদিবাসী সমাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ছাড়তে হয়েছিল গ্রাম। আদিবাসী সমাজের নিয়মে পরপুরুষের গলায় মালা দেওয়া মানেই বিয়ে। কিন্তু নেহরু তো আদিবাসী নন। তাই সমাজ থেকে বহিষ্কার।

Advertisement

তারপর বহু ঝড়ঝাপটা সামনে বুধনিকে কিছুটা পায়ের নীচে জমি দিয়েছিল DVC। জুটেছিল অস্থায়ী একটি চাকরিও। সেটাই ছিল তাঁর বেঁচে থাকার রসদ। যদিও ১৯৬২ সালে সেই চাকরিও চলে যায়। বুধনিও চলে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে। ১৯৮৫ সালে আসানসোলের তৎকালীন কংগ্রেসের সাংসদ আনন্দগোপাল মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধির সঙ্গে দেখা করেছিলেন বুধনি। আবার তাঁর চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছিল DVC। পরবর্তী কালে অবসর নিয়েছিলেন বুধনি। ডিভিসির আবাসনেই থাকতেন তিনি। আবাসনে সহকর্মী আর প্রতিবেশীরাই তাঁর কাছে আপনজন হয়ে ওঠেন। কিন্তু নিজের সমাজে তিনি সঠিক সম্মান পাননি বলে অনুযোগ এলাকাবাসীর একাংশের। গ্রামেও ফিরে যেতে পারেননি কোনও দিন। শুক্রবার গভীর রাতে সেই পাঞ্চেতেরই হাসপাতালে অনাদরে মৃত্যু হল ‘নেহেরুর বউ’ বলে পরিচিত বুধনির। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। স্মৃতিশক্তিও হারিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর শনিবার সকালে পাঞ্চেতে তাঁর আবাসনে মৃতদেহ আনা হয়। এদিনই তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। তার আগে DVC কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে সম্মান জানানো হয় প্রয়াত বুধনিকে।

Advertisement
Tags :
Advertisement