OthersWeb Stories
খেলা | অন্যান্যক্রিকেটফুটবল
ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ
বিনোদন | ধারাবাহিকটলিউডবলিউডহলিউড
শিক্ষা - কর্মসংস্থান
শারদোৎসব | মহালয়াবনেদিবাড়ির পুজোপুজো ভ্রমণপুজো বাজারতাহাদের কথাতারাদের পুজোগ্রামবাংলার পুজোআজকের দশভূজা
লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না
রাজ্য | হুগলিহাওড়ামুর্শিদাবাদমালদহবীরভূমবাঁকুড়াপূর্ব মেদিনীপুরপূর্ব বর্ধমানপুরুলিয়াপশ্চিম মেদিনীপুরপশ্চিম বর্ধমাননদিয়াদার্জিলিংদক্ষিণ দিনাজপুরদক্ষিণ চব্বিশ পরগনাঝাড়গ্রামজলপাইগুড়িকোচবিহারকালিম্পংউত্তর দিনাজপুরউত্তর চব্বিশ পরগনাআলিপুরদুয়ার
বিবিধ | আনন্দময়ী
আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর

শীতের শুরুতে খেজুর গাছের রস সংগ্রহ শুরু করল গাছিরা

07:59 PM Nov 14, 2023 IST | Subrata Roy

নিজস্ব প্রতিনিধি,দক্ষিণ দিনাজপুর: হিমেল হাওয়া ও হালকা কুয়াশায় দক্ষিন দিনাজপুর জেলায় এখন শীতের আমেজ চলছে।শীত মৌসুম শুরুর সঙ্গে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ।শুরু হয়েছে শীতের মধু- খেজুর রস আহরণ।এই রস আহরণে গাছিরা এখন যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ মৌসুমে আবহমান বাংলায় খেজুর রস আহরণ, খেজুর গুড় আর নবান্নের উত্‍সব একটি প্রাচীন ঐতিহ্য।আর খেজুর রসের পিঠা পায়েস বাংলার উপাদেয় খাদ্য তালিকায় এখনও জনপ্রিয়।

গাছিরা জানান, বছরজুড়ে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থাকলেও শীতকালে চাষিদের কাছে খেজুর গাছের কদর বেড়ে যায়।কারণ এ গাছ থেকেই আহরিত হয় সুমিষ্ট রস।আর এ রস জ্বালিয়ে ঝোলা গুড়, দানা গুড় ও পাটালি তৈরি করা হয়।খেজুরের গুড় থেকে এক সময় বাদামি চিনিও তৈরি করা হতো।যার মৌতানো স্বাদ ও ঘ্রাণ সর্ম্পূণ ভিন্ন।খেজুর গাছের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে।শীতের সকালে খেজুর রস পান শরীর ও মনে প্রশান্তি এনে দেয়।খেজুর রস আহরণ আর তার থেকে বিভিন্ন উপাদেয় খাদ্য তৈরি আবহমান বাংলার সংস্কৃতির অনুষঙ্গ।খেজুরের নলেন গুড় ছাড়া শীত মৌসুমের পিঠা খাওয়া জমেনা। দক্ষিন দিনাজপুর জেলার কৃষকরা নতুন ধান সংগ্রহের পাশাপাশি খেজুর রস আহরণের প্রস্তুতি শুরু করেছে।এখন চলছে খেজুর গাছের ডগা চাছার কাজ।এরপর চাছা ডগায় বাশের তৈরি বিশেষ নল লাগিয়ে সংগ্রহ করা হবে ফোটায় ফোটায় রস।মাটির হাড়িতে খেজুর রস(Date Juice) সংগ্রহ করা হয়।তবে আজকাল প্লাস্টিকের বোতলেও খেজুর রস আহরণ করে চাষিরা।শীতের পুরো মৌসুম জুড়ে চলবে রস, গুড়, পিঠা-পুলি, পায়েস খাওয়ার পালা।আর কিছুদিন পর নতুন গুড়ের মিষ্টি গন্ধে ধীরে ধীরে আমোদিত হয়ে উঠবে গ্রাম-বাংলা। দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বাউল এলাকার গাছি মিন্টু বসাক জানান, গাছের ডগা চেছে বাশের খিল লাগানোর কাজ চলছে।অল্পদিনের মধ্যেই রস আহরণ শুরু হবে।খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।এর পরিকল্পিত আবাদ তেমন নেই।উপরন্তু নির্বিচারে খেজুর গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।যা পল্লী বাংলার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।খেজুর গাছ থেকে শুধু সুমিষ্ট রস ও গুড়ই হচ্ছে না, প্রকৃতির ভারসাম্য সুরক্ষায় খেজুর গাছের আবাদ সম্প্রসারণ জরুরি।

প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা সমাগত।বাঙালির এ সময়ের অন্যতম আকর্ষণ খেজুর গুড়ের পিঠা-পায়েশ।প্রাচীনকাল থেকেই খেজুর গুড়ের জন্য গ্রাম বাংলা বিখ্যাত।দিন বদলের সঙ্গে মানুষের জীবন-যাত্রায় অনেক কিছু বদলে গেলেও বদলায়নি খেজুরের রস সংগ্রহ এবং গুড়-পাটালি তৈরির পদ্ধতি।তাই শীতের আগমনী বার্তা জানান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এখানকার 'গাছিরা' প্রস্তুতি নেন খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের।এ জন্য প্রথমেই খেজুর গাছ(Date Tree) কেটে পরিষ্কার করেন তারা।এরপর শুরু হয় রস সংগ্রহ। চিরাচরিত সনাতন পদ্ধতিতে মাটির ভাঁড়ে (কলসি) রাতভর রস সংগ্রহ করা হয়।সূর্য ওঠার আগেই তা আবার গাছ থেকে নামিয়ে আনে তারা।পরে এই রস মাটির হাঁড়িতে কিংবা টিনের তৈরি কড়াইয়ে জ্বালিয়ে তৈরি করে গুড়-পাটালি। ইতিমধ্যে জেলার নানান জায়গায় শুরু হয়েছে গুড়-পাটালি তৈরির সেই প্রক্রিয়া। গাছিরা এখন কাজের ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন। অল্প দিনের মধ্যেই বাজারে পাওয়া যাবে নতুন খেজুর গুড়।গ্রামে গ্রামে পড়ে যাবে খেজুরের রস দিয়ে পিঠা, পায়েশসহ নানা মুখরোচক খাবার তৈরির ধুম।শীতের আগমনী বার্তা গ্রামবাংলায় নিয়ে আসে নানা রকম সুস্বাদু খাবারের সমাহার।বিভিন্ন রকমের খাবারের মধ্যে গ্রামবাংলায় শীতের প্রধান অনুষঙ্গ সুস্বাদু খেজুরের রস।সেই রসে তৈরি পাটালি গুড় আর শীতের রকমারি পিঠাপুলি সবার মন ভরিয়ে দেয়।লোভনীয় খেজুর রসের জোগান দিতে এখন থেকেই ব্যস্ত গাছিরা।চলছে খেজুর গাছ চাছা-ছোলার কাজ। সেসব গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, দল বেঁধে গাছিরা খেজুর গাছ পরিষ্কারের কাজ করছেন।মরশুমের শুরুতেই বাজারে পাটালি গুড় ও খেজুর রস ওঠে গাছিদের আগাম গাছ ঝোড়ার কারণে।

বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কোমরে মোটা রশি বেঁধে ঝুলে ঝুলে খেজুর গাছ ঝুড়ে মাথায় চাঁচ দিচ্ছেন।এ গ্রামের পেশাদার গাছিদের পাশাপাশি গৃহস্থরাও বসে নেই, নিজের গাছ তৈরি করছেন তারা, দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বুনিয়াদপুর ও গঙ্গারামপুরের যথাক্রমে বড়াইল, শেরপুর, শিববাড়ি ও সর্বমঙ্গলা গ্রামের কয়েকজন গাছিরা জানান, কার্তিক মাসের শুরু থেকেই খেজুর গাছের পরিচর্যা চলছে।গাছের বাইগা (ডাল) ঝোড়া, গাছের মাথা ছেনি অথবা ধারালো হাঁসুয়া দিয়ে কয়েক দফা চাঁচ দেওয়ার কাজ চলছে।রস জ্বালানো ভাটি, জ্বালানি ও রসের ঘটি সংগ্রহের কাজ শেষের দিকে।আরেক গাছি নীরদ সরকার বলেন, এই গ্রামের খেজুর রস ও পাটালির সুনাম আছে।তাই আমরা আগাম কাজ করি। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এখানকার গুড় বিক্রি হয়।জেলার গ্রামীণ মেঠোপথের ধারেই রয়েছে সারি সারি খেজুর গাছ।তাই এ অগ্রহায়নের বিকেলের দিকে গ্রামের যে পথেই হাঁটা যাক না কেন, চোখে পড়বে খেজুর গাছ ঝোড়ার অপূর্ব দৃশ্যটি অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহেই গ্রামের ঘরে ঘরে খেজুর রস আর গুড় দিয়ে নতুন আমন ধানের পিঠা-পুলি ও পায়েশ তৈরির ধুম পড়বে।আসন্ন পৌষপার্বন-পুষনা বা পীঠেপুলির উত্‍সবে এই খেজুর গুড় ও রস নতুন মাত্রা আনবে গ্রামের গৃহস্থদের রসুইখানায়।

Tags :
Dakhin Dinajpur Date Juice Collection StartDakhin Dinajpur District
Next Article