Cyclone Rimal’র Eye’র অবস্থানের জেরেই জলোচ্ছ্বাস কম সুন্দরবনে
নিজস্ব প্রতিনিধি: একে ঘূর্ণিঝড়, তার ওপর ভরা কটাল! এর ফল যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, সেটা দেখিয়ে দিয়েছিল আয়লা আর যশ। সেই দুই ঘূর্ণিঝড়ের সময় বঙ্গোপসাগরে এবং সুন্দরবনের নদীগুলিতে সুতীব্র ও সুউচ্চ ঢেউ তথা জলোচ্ছাস(Tidal Wave) দেখা দিয়েছিল। আয়লার সময় তো সুন্দরবনের(Sundarban) শয়ে শয়ে মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছিল এই জলোচ্ছাস। ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল গ্রামীণ সুন্দরবনের একটা বড় অংশই। যশের সময় বাঁধ ভেঙে সাগরের জল ঢুকে পড়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ অংশে। সেই সময়ও দেখা গিয়েছিল হাজারো মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে বা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জলোচ্ছাসের জেরে ধেয়ে আসা প্লাবনে। এবারেও সুতীব্র আশঙ্কা ছিল ঘূর্ণিঝড় রিমলের জেরে জলোচ্ছাসে(Tidal Waves) প্লাবিত হতে পারে সুন্দরবন ও পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur)। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তা হয়নি। এর নেপথ্যে কাজ করছিল Cyclone Rimal’র Eye’র অবস্থান। তা পড়েছিল সুন্দরবনের উপকূলের উত্তর দিকে। আর তার জেরেই অসম থেকে উত্তুরে হাওয়া এসে পালটা ধাক্কা দিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের বুকে। আর তার জেরে তীব্র জলোচ্ছাস থেকে বেঁচেছে বাংলা।
ঘূর্ণিঝড়ে জলোচ্ছ্বাস হয় সাধারণত পুবালি হাওয়াতেই। ভরা কটালের মধ্যে রিমলের ঝাপটায় প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছিল সুন্দরবন ও পূর্ব মেদিনীপুর জুড়ে। রিমল এবং ভরা কটালের সাঁড়াশি আক্রমণের কথা মাথায় রেখেই আগেভাগে সুন্দরবন সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) ও পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কবার্তা জারি করেছিল রাজ্য প্রশাসন। সেই সতর্কবাণী যে ভুল নয়, তার প্রমাণ মিলেছিল রবিবার দুপুর থেকেই। গঙ্গাতেই দেখা যাচ্ছিল সাগরের মতো ঢেউ। তার ফলে কপালে ভাঁজ পড়েছিল সুন্দরবনের বাসিন্দাদের। সেই মতো প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল, পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলে সেভাবে জলোচ্ছাস হলই না। আর সুন্দরবনের বুকে যা হল তা নামমাত্র। অল্প কিছু জায়গা ছাড়া আর কোথাও বাঁধ ভাঙেনি। এমনকী, বাঁধ ছাপিয়ে প্লাবিতও হয়নি তেমন বড় এলাকা।
এর নেপথ্যে কাজ করেছে উত্তর-পূর্বের হাওয়া যাকে টেনে এনেছে Cyclone Rimal’র Eye। দিল্লির মৌসম ভবনের বিশেষজ্ঞদের দাবি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা উপকূল এলাকার উত্তর দিকে পড়েছিল Cyclone Rimal’র Eye বা ঝড়ের কেন্দ্রস্থল। রিমল এপার বাংলার উপকূল সংলগ্ন বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে স্থলভাগে ঢুকেছে। যদি Rimal’র Eye দক্ষিণ ২৪ পরগনা উপকূলে পড়তো তাহলে উত্তর দিক থেকে তীব্র হাওয়া আসত না। আর Rimal’র Eye’ র এই অবস্থানের জন্যই বাংলাদেশ উপকূলে জলস্ফীতির মাত্রা দক্ষিণ ২৪ পরগনা উপকূলের থেকে বেশি হয়েছে। যদিও ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সময় ঝোড়ো হাওয়ার তীব্রতা ও বৃষ্টির পরিমাণ দুই বাংলার উপকূলেই প্রায় একই রকম ছিল।