Rath Yatra 2024: কেন জগন্নাথের রথ থেমে যায় মাজারের সামনে?
নিজস্ব প্রতিনিধি: রহস্যে ঘেরা শ্রী শ্রী জগন্নাথের লীলা। অপার করুণাময় তিনি। তিনি তাঁর বড়ো বড়ো গোলাকার চোখে ভক্তের দুঃখ, কষ্ট বড়ো করে দেখেন। সদাহাস্য মুখে তিনি যেন সকল ভক্তদের আলিঙ্গনের জন্য বাড়িয়ে রয়েছেন তাঁর দুই বাহু। মহাপ্রভুর সবচেয়ে বড়ো উৎসব রথযাত্রার সময়ও তাঁর ভক্তবাৎসল্যের এক উজ্জ্বল নিদর্শন পাওয়া যায়। মহাপ্রভুর রথ এসে রহস্যজনকভাবে দাঁড়িয়ে যায় শ্রীমন্দিরের অদূরে একটি মাজারের সামনে। কিন্তু কেন ? মহাপ্রভুর সাথে মাজারের সম্পর্ক কোথায় ?
কথিত আছে, কোনও এক সময়ে শালবেগ নামে মহাপ্রভুর এক মুসলমান ভক্ত ছিল। জানা যায় শালবেগের মা ছিলেন একজন ব্রাহ্মণ বিধবা ও শালবেগের পিতা বলবেগ ছিলেন একজন মুসলিম সেনাপতি, যিনি সেই বিধবা ব্রাহ্মণীর প্রেমে পড়ে তাকে বিয়ে করেছিলেন। সেই বিধবা মহিলা মহাপ্রভু জগন্নাথের ভক্ত ছিলেন। একবার এক যুদ্ধে বলবেগ মারা যান ও শালবেগ গুরুতর আহত হলে সেই মহিলা মহাপ্রভুকে পূজার্চনা শুরু করেন। খুব শীঘ্রই শালবেগ সুস্থ হয়ে উঠলে তার মায়ের আদেশে সে হয়ে ওঠে মহাপ্রভুর পরম ভক্ত।
এরপর শালবেগ শ্রীমন্দির এসেছিলেন মহাপ্রভুর দর্শন পেতে, কিন্তু, তিনি বিধর্মী বলে তাঁকে মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। শালবেগ অপেক্ষা করেছিলেন রথযাত্রা পর্যন্ত, কারণ, তিনি জানতেন শুধুমাত্র সেই সময়েই জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রাকে মন্দিরের বাইরে নিয়ে এসে রথে তোলা হবে। তাই রথের যাত্রাপথেই তিনি একটি কুঁড়েঘর তৈরি করেছিলেন, বর্তমানে সেটি সেই মাজার ।
একবার রথযাত্রার ঠিক আগে শালবেগের সেই কুঁড়েঘরে ফিরতে দেরি হচ্ছিল। উদ্বিগ্ন শালবেগ মহাপ্রভুকে করুণ আর্তি সহযোগে ডাকায় তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন যে, তিনি তাঁর পরম ভক্তের জন্য অপেক্ষা করবেন। যথাসময়ে রথযাত্রা হল। রথের চাকা গড়ালো। কিন্তু, অদ্ভুতভাবে মহাপ্রভুর রথ এসে থেমে গিয়েছিল শালবাগের কুঁড়েঘরের সামনে। সকলে বহু চেষ্ঠা করেও মহাপ্রভুর রথ সরাতে ব্যর্থ হয়েছিল। অবশেষে প্রায় সাতদিন পর শালবাগ ফিরে এলে তিনি মহাপ্রভুকে দর্শন করে সেখানেই তাঁর নশ্বর দেহ ত্যাগ করেন। তাই সেই নিয়ম মেনেই আজও শালবেগের অটুট ভক্তি ও উৎসর্গের স্মরণ হিসেবে মহাপ্রভু শ্রী শ্রী জগন্নাথের রথ সেই মাজারের সামনে দাঁড় করানো হয়।