ভাষা দিবসের আগেই চলে গেলেন বিশিষ্ট ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলা সাহিত্য মহলে ফের শোকের ছায়া! প্রয়াত বাংলা কবিতার স্রষ্টা তথা ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার (Bhabani Prasad Majumder)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস, তার আগেই সব শেষ! বিশ্বের দরবারে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্যে কম আন্দোলন হয়নি, কিন্তু যে ভাষা নিয়ে এত আন্দোলন হয়েছিল আজ সেই বাঙালির কাছেই বাংলা ভাষার প্রতি চরম অনীহা। এজন্যই তো এখনও অনেক বাঙালিরা বলেন, ‘জানেন দাদা আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না।’ সেই বাংলা ভাষা কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন ভবানী প্রসাদ মজুমদার। তাঁর ক্ষুরধার লেখা, শব্দের প্রয়োগ, নজরকাড়া কিছু কথা অনেকের কাছে আজও অজানা। কিন্তু শিল্পী তাঁর যোগ্য সম্মান পেল না।
৭ ফেব্রুয়ারি মারা গেলেন ভবানী প্রসাদ মজুমদার। কবির মৃত্যুতে স্বাভাবিক ভাবেই শোকের ছায়া সাংস্কৃতিক জগতে। হাওড়া জেলার জগাছা থানার অন্তর্গত দাশনগরের দক্ষিণ শানপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। পিতার নাম নারায়ণচন্দ্র মজুমদার এবং মা নিরুপমাদেবী। গ্রামের সবুজ ঘেরা পরিবেশ দেখতে দেখতেই তাঁর বেড়ে ওঠা। প্রকৃতির সৌন্দর্য, সময়ের সঙ্গে মানুষের জীবনের পরিবর্তন, দিনযাপনের আদবকায়দা সবটাই নিজের হৃদয়ে সঞ্চয় করে কলমের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন তাঁর লেখায়।
বাঙালি ঘরের ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি হওয়া ছেলেমেয়েদের বাংলা ভাষার প্রতি অবহেলা, সবটাই ফুটে উঠেছে তাঁর লেখনিতে, ছড়ার আকারে তা তুলে ধরতেন। কবিতা লেখার পাশাপাশি ভবানীপ্রসাদ মজুমদার পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন। হাওড়া জেলার শানপুর গ্রামের কালিতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন তিনি, প্রথমে সাধারণ শিক্ষক হয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করলে পরে তিনি সেই বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষক হয়ে কর্মজীবন পার করেন। তিনি মজার মজার ছড়া-কবিতা লেখায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। তাঁর প্রকাশিত ছড়ার সংখ্যা কুড়ি হাজারেরও বেশি। তাঁর রচিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, মজার ছড়া, সোনালি ছড়া, কোলকাতা তোর খোল খাতা, হাওড়া-ভরা হরেক ছড়া, ডাইনোছড়া প্রভৃতি। তাঁর বিখ্যাত কবিতাগুলোর মধ্যে অন্যতম, 'জানেন দাদা, আমার ছেলের, বাংলাটা ঠিক আসে না।’