ভোটের ডিউটি থেকে ছাড়, খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশের
নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোট এলেই সরকারি কর্মচারীদের দফারফা। তা সে কেন্দ্রের কর্মচারী হোক কী রাজ্যের। সকলেরই পড়বে ভোটের ডিউটি(Election Duty)। এবারেও ছবিটা আলাদা কিছু দেখা যাচ্ছে না বাংলার(Bengal) বুকে। তবে রাজ্য সরকার চাইছে, দীর্ঘ প্রায় ৪ মাস ধরে চলা ভোটপর্বের মাঝে যেন কোনও ভাবেই কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার প্রক্রিয়া এবং রেশন বন্টন ব্যবস্থায় কোনও ধাক্কা না পড়ে। ভোট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে লাগু হয়ে গিয়েছে আদর্শ আচরণ বিধি(Model Code of Conduct)। বাংলাতেও তা কার্যকর হয়েছে। রাজ্য সরকার চাইছে, বাংলায় জেলায় জেলায় কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার প্রক্রিয়া বজায় থাকুক। কেননা এই প্রক্রিয়া নির্বাচন ঘোষণার অনেক আগে শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এটি প্রতি বছরই দুই পর্যায়ে করা হয় খারিফ ও রবি মরশুমের ধান কেনার(Paddy Procurement) জন্য। একই সঙ্গে রাজ্য সরকার রেশন বন্টন(Ration Distribution) ব্যবস্থাও এই কয়মাস সুদৃঢ় রাখতে চায়। আর তাই এই দুই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের(Officers of Food Department) ভোটের ডিউটির সঙ্গে যুক্ত না(No Election Duty) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের মাঝেও যাতে ধান কেনা আর রেশন ব্যবস্থা যাতে বজায় থাকে তার জন্য ওই দুই ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের ভোটের কাজে যুক্ত না-করার ব্যাপারে রাজ্যের সব জেলার খাদ্য আধিকারিকদের সতর্ক করা হয়েছে। নবান্ন থেকে বলে দেওয়া হয়েছে, জেলা নির্বাচনী আধিকারিক বা জেলা শাসকের সঙ্গে কথা বলে খাদ্য দফতরের Purchase এবং Disbursing অফিসারদের ভোটের কাজ থেকে Release করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে খাদ্য সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা দেখা দিলে ব্যবস্থা নিতে হবে দ্রুত। বিশেষভাবে রুখতে হবে রেশনের খাদ্যসামগ্রী বাইরে পাচার হওয়ার ঘটনা। খাদ্যের গুণমান ও ওজনের ওপরেও নজরদারি বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে BENFED, ECSC’র মতো সরকারি সংস্থাকে ধান কেনার কাজে আরও সক্রিয় হতে হবে।
চলতি খরিফ মরশুমে রাজ্য সরকার ৭০ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। এই ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নেওয়া হবে। খোলাবাজারে ধানের দাম এখন বেশ চড়া। তাই সরকারের কাছে ধান বেচার ব্যাপারে চাষিদের একাংশের মধ্যে উৎসাহের অভাবও লক্ষণীয়। এই পরিস্থিতিতে চাষির দরজায় গিয়ে ধানক্রয়ের উপর জোর দেওয়ায় সুফল মিলছে। পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ে গ্রামে গিয়ে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধানক্রয় বাড়ানো হয়েছে। বাড়িতে বসে ধান বিক্রির সুযোগ পেয়ে অবশ্য অনেক চাষি এগিয়েও আসছেন। এখন দৈনিক ৩০ হাজার টন ধান কেনা যাচ্ছে। তবে হাওড়া, হুগলি, কোচবিহার, দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রভৃতি জেলায় কিছুটা ঘাটতি আছে। চলতি মরশুমে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৯ লক্ষ টন ধান কেনা হয়েছে। চলতি মরশুমের মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তাই আশা করা হচ্ছে, লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলা যাবে।