ভাঙড়ে নওশাদের ঘরে হানা তৃণমূলের, জার্সি বদল ৪ পঞ্চায়েত সদস্যের
নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোট মিটতে না মিটতে কলকাতার কান ঘেঁষে থাকা ভাঙড়ের(Bhangar) মাটিতে নওশদ সিদ্দিকির(Nowshad Siddiqui) ঘরে হানাদারি চালালো তৃণমূল(TMC)। এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লার(Showkat Molla) হাত ধরে ভাঙড়ের মাটিতে ISF ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন ৪জন পঞ্চায়েত সদস্য সহ প্রায় ২০০০ ISF কর্মী। ভাঙড়-২ ব্লকের চালতাবেড়িয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। এদিনের যোগদান ঘিরে শওকত মোল্লার দাবি, আগামীদিনে ISF-এ আরও ভাঙন ধরবে। সকলেই তৃণমূলে যোগ দিতে আগ্রহী। আবার তৃণমূলে যোগদান করা নওশাদের দলের প্রাক্তনীদের দাবি, বিজেপিকে রুখতে পারে একমাত্র তৃণমূল। সেই কারণেই তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ISF’র তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে ISF প্রার্থীরা লড়াই করেছিল RSMP বা Rashtriya Secular Majlis Party’র ব্যানারে। চারবেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তাঁরা গতবছর তৃণমূলকে বেশ বেগও দেয়। কিন্তু এবারে লোকসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছে, ভাঙড় থেকে বেশ ভাল ভোটের লিড পেয়েছে তৃণমূল। পিছিয়ে পড়েছে ISF। এর পরে পরেই ভাঙড়ে জমি হারানো শুরু হয়ে গিয়েছে নওশদ সিদ্দিকির দলের। তৃণমূল নেতাদের স্পষ্ট দাবি, মানুষ বুঝে গিয়েছেন যদি বিজেপিকে কেউ ঠেকাতে পারে তা তৃণমূল। তার ওপর আরাবুল ইসলাম এখন জেল বন্দী। তাই যারা আরাবুলের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ISF-এ গিয়েছিলেন, তাঁরা এবার আস্তে আস্তে তৃণমূলে ফিরে আসছেন। লোকসভা নির্বাচনের পর ভাঙড়ের রাজনৈতিক জমিতে বেশ কিছু বদল হতে পারে, সেই আঁচ আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। এদিন দেখা গেল সেই আঁচ মোটেও ভুল নয়।
একুশের ভোটে বাম, কংগ্রেস এবং ISF জোট করে লড়াই করেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই জোটকে আবার তলে তলে মদত দিয়েছিল বিজেপিও। উল্লেখযোগ্যভাবে দেখা যায়, রাজ্য বিধানসভা থেকে বাম-কংগ্রেস ধুয়ে মুছে গেলেও সেখানে খাতা খুলেছে ISF। ভাঙড়ের বুকে নওশাদ সিদ্দিকির সেই জয়ের জন্যই ISF খাতা খুলতে পেরেছিল বিধানসভায়। এবারে লোকসভা নির্বাচনের আগেই সেই নওশাদ দাবি করেন, তিনি ডায়মন্ডহারবার থেকে নির্বাচনে লড়াই করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। যদিও পরে পিছিয়ে যান সেই সিদ্ধান্ত থেকে। এখন দেখা যাচ্ছে, নওশাদ তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে পিছিয়ে গেলেও তৃণমূল পিছুপা হচ্ছে না ভাঙড়ে নওশাদের ঘরে হানা দিতে।