ঘোড়ামারায় সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদ্যুৎ মিলবে ফেব্রুয়ারি থেকেই
নিজস্ব প্রতিনিধি: তিন দিক নদী, এক দিকে বঙ্গোপসাগর(Bay of Bengal)। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সেই দ্বীপেই বসবাস ১১২৫টি পরিবারের। মোট জনসংখ্যা ৫ হাজারের কিছু বেশি। প্রাকৃতিক বন্ধুরতার জন্যই এতদিনেও বিদ্যুৎ(Electricity) পৌঁছয়নি সেখানে। সন্ধের পরে দ্বীপের অধিকাংশ এলাকাই অন্ধকারে ডুবে যায়। সেই অন্ধকার কাটিয়ে এবার আলোয় ফেরার পালা। নজরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) জেলার কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর ব্লকের প্রত্যন্ত দ্বীপ ঘোড়ামারা(Ghoramara Island)। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ঘরে ঘরে আলো জ্বলবে সেখানে। ১৮ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পাবে পরিবারগুলি। প্রতিটি পরিবার ৪টি করে আলো, ১টি পাখা ও ১টি টিভি চালাতে পারবে। ইউনিট প্রতি ৫ টাকা করে দিতে হবে তাঁদের। থাকবে পানীয় জল তোলার ব্যবস্থাও। এ ছাড়া ই-রিকশা চলবে এলাকায়। পঞ্চায়েত অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আলো লাগানো হবে। দ্বীপের রাস্তাঘাট, বাজার এলাকায় পথবাতিও বসবে। বিদ্যালয়গুলিতেও আলো-পাখার ব্যবস্থা করা হবে। আর এইসব কিছু সম্ভব হবে ঘোড়ামারা দ্বীপের মিলন বিদ্যাপীঠ স্কুলের মাঠে ২৫০ কিলোওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের Power Plant চালু হতে চলায়।
কেন্দ্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে ওড়িশা, অসম, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের ৪টি বিচ্ছিন্ন দ্বীপাঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের(Solar Power Plant) অনুমোদন মেলে। তার মধ্যে ঘোড়ামারার প্রকল্পটিই সবচেয়ে বড়। প্রকল্পের জন্য ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ৫ বছরের জন্য দেখাশোনা করবে Kharagpur IIT। বিচ্ছিন্ন, দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত ঘোড়ামারা দ্বীপে প্রচলিত শক্তি নিয়ে যাওয়া প্রযুক্তিগত ভাবে কঠিন। তাই ঘোড়ামারা দ্বীপে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা হয়। সবচেয়ে বড় আধুনিক সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প এখানে চালু হচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাসেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। প্রকল্পটি চালু হয়ে গেলে ফেরিঘাট, বাজার, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও রাস্তায় আলো থাকবে সবসময়। এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পেও কিছু কর্মসংস্থান হবে। সেই সঙ্গে ঘোড়ামারা থেকে কাকদ্বীপের লট ৮ ঘাট পর্যন্ত একটি সৌরশক্তিচালিত বোটও চালু হবে। জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ২৪ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ মিলবে। এখন বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। আর তাই আনন্দে খুশ গ্রামবাসীরা।