হরিশ্চন্দ্রপুরে কৃষক বন্ধুদের টাকা দুর্নীতি ঘটনায় তদন্তে উঠে এলো গভীর ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা
নিজস্ব প্রতিনিধি,হরিশ্চন্দ্রপুর: কৃষক বন্ধুর টাকা নিয়ে দুর্নীতির তদন্তে নামলেন বিডিও এবং সহকারী কৃষি আধিকারিক।শনিবার সরজমিনে গিয়ে তদন্তে উঠে আসলো পুরোপুরি উল্টো চিত্র।প্রশাসনিক আধিকারিকদেরকে বদনাম করার চক্রান্ত ফাঁস করলেন অভিযোগকারীরাই।আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি প্রশাসনের।অভিযোগ উঠেছিল হরিশ্চন্দ্রপুর(Harishchandrapur) ২ ব্লকের তেলজান্না স্লুইসগেট এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষক,কৃষক বন্ধুরা টাকা পাচ্ছেন না।তাদের টাকা ঢুকছে নাবালকদের অ্যাকাউন্টে।
এমনকি বিহারের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ঢুকছে বলে অভিযোগ তুলে শুক্রবার বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্লুইসগেট এলাকার কয়েকজন চাষি।খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই শনিবার ওই এলাকায় গিয়ে তদন্ত করেন হরিশ্চন্দ্রপুর ২ এর বিডিও(BDO) তাপস পাল এবং কৃষি দপ্তরের আধিকারিক প্রভাত উৎপল আচার্য।তদন্তের পর তাঁরা জানতে পারেন এলাকার একটি সিএসপির মালিক এলাকার কিছু চাষিকে ডেকে ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন করিয়েছিল।যারা অভিযোগ করেছিল তাদের সমস্ত ডকুমেন্টস ঠিক রয়েছে এবং তারা প্রত্যেকে স্বীকার করেছেন টাকা পাচ্ছেন। এই ঘটনায় প্রশাসন চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে।অন্যদিকে, ফুড সাব ইন্সপেক্টরের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। অভিযোগকারী যুবক কখনো পরীক্ষাতেই বসেন নি।করেননি ফর্ম ফিলাপ।কিন্তু ওয়েবসাইটে সফলদের তালিকায় তার নাম।প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত এক শিক্ষকের কারসাজিতে এই ধরনের জালিয়াতি।চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে চাঁচল থানায়(Chachal P.S.) লিখিত অভিযোগ করেন মালতিপুরের বাসিন্দা গোলাম সারোয়ার আলম সিদ্দিকী। অভিযোগকারী দাবি নদীয়া জেলার ভীমপুরের বাসিন্দা পরিমল কুন্ডু ২০১৭ সাল নাগাদ চাঁচলের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তার সঙ্গে পরিমল কুন্ডুর পরিচয় হয়। পরিমল তাকে প্রলোভন দেন ২০১৮ সালের ফুড সাব ইন্সপেক্টরের পরীক্ষায় তার চাকরি করে দেবে।
পরিবর্তে তাকে চাকরি হওয়ার পর সাত লক্ষ টাকা দিতে হবে।পরিমল আরো বলে তিনিও এইভাবে টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছেন। আরো অনেককেই চাকরি করে দিয়েছেন।প্রমাণ স্বরূপ বেশ কিছু ব্যক্তির জয়নিং লেটারও দেখান।সেই সময় অভিযোগকারী তাকে বলেন তিনি তো পরীক্ষাতে বসেননি। সেক্ষেত্রে কিভাবে তিনি চাকরি করবেন। কিভাবে ওয়েবসাইটে(Website) তার নাম দেখাবে।অভিযুক্ত দাবি করেন সেটাও সম্ভব হবে। তারপর এই চলতি মাসের ১৪ তারিখে অভিযোগকারীর চক্ষুচড়ক গাছ হয়ে যায়। পরিমল কুন্ডুর সহযোগী পরিচয় হচ্ছে একটি নম্বর থেকে ফোন আসে অভিযোগকারীর কাছে। জানানো হয় ফুড সাব ইন্সপেক্টরের ২০১৮ সালের তালিকায় তার নাম উঠে গেছে।দেওয়া হয় একটি রোল নম্বর।অভিযোগকারী চেক করে দেখে হতবাক হয়ে যান। পরবর্তীতে পরিমল কুন্ড এবং আরো বেশ কয়েকটি নাম্বার থেকে আধিকারিকদের পরিচয় দিয়ে বারবার ফোন আসে অভিযোগকারীর কাছে। তার কাছে টাকার দাবি করা হয়। তিনি অবৈধ উপায়ে টাকার বিনিময়ে চাকরি করতে অস্বীকার করলে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ এবং হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।সমগ্র ঘটনা নিয়ে চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সঠিক এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ওই যুবক। গোলাম সারোয়ার আলম সিদ্দিকী এই প্রসঙ্গে বলেন," মাঝে ঈদের জন্য আমি অভিযোগ করিনি।আজ স্বেচ্ছায় এসে অভিযোগ করলাম। এই পরিমল কুন্ডুর সঙ্গে আরো বেশ কয়েকজন রয়েছে। আমি বারবার বলছি আমি এইভাবে চাকরি করতে চাই না। কিন্তু তারা আমার কাছে টাকার দাবি করছে এবং হুমকি দিচ্ছে। আমি কোন রকম পরীক্ষা দিয়নি। এরা এই ভাবে অনেক চাকরি করিয়েছে বলে দাবি করেছে। আমি চাই পুলিশের তদন্ত করে এই দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করুক। তদন্তের জন্য আমি সমস্ত রকম সহযোগিতা করব।"