মোদি জমানায় ভারতে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণামূলক ভাষণ বেড়ে চলেছে, দাবি মার্কিন সংস্থার
নিজস্ব প্রতিনিধি : ভারতে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণামূলক বক্তব্য বাড়ছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংস্থার গবেষণায় এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। সবকটি অভিযোগ আসছে বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যগুলির থেকে। জানা গিয়েছে, সুযোগ পেলেই মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করছেন হিন্দুত্ববাদীরা।
মার্কিন গবেষণা সংস্থার সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ২০২৩ সালের প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণামূলক বক্তব্য ৬২ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এই ঘৃণামূলক বক্তব্য বেড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইনের মধ্যে সংঘাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। মার্কিন গবেষণা সংস্থাটির তরফে জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে ২৫৫টি ঘৃণামূলক ভাষণ নথিভুক্ত হয়েছে। এর পরের ছয় মাসে ৪১৩টি মুসলিমদের প্রতি ঘৃণামূলক ভাষণ নথিভুক্ত হয়েছে।
গবেষণায় উঠে এসেছে, ৬৬৮টি ঘৃণামূলক ভাষণের মধ্যে ৭৫ শতাংশ ঘটনাই ঘটেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রতি সবচেয়ে বেশি ঘৃণামূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মহারাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখার ঘটনা ঘটেছে ১১৮টি। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে এই ধরনের ঘটনাটি ঘটেছে ১০৪টি ও মধ্যপ্রদেশে মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য রাখার ঘটনা ঘটেছে ৬৫টি। দেখা যাচ্ছে, যে তিন রাজ্যে এই ঘৃণামূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে, সেই তিন রাজ্যেই বিজেপির শাসন রয়েছে। পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, ২০২৩ সালে যতগুলি ঘৃণামূলক ভাষণের ঘটনা ঘটেছে, তার ৪৩ শতাংশই ঘটেছে এই তিন রাজ্যে।
গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে হামাস গোষ্টী ও ইজরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। সেই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই মুসলিমদের প্রতি ঘৃণামূলক ভাষণ বেড়ে গিয়েছে। গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ৪১টি ঘৃণামূলক বক্তব্যের ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টে উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রসংঘের তরফে ঘৃণামূলক বক্তব্যের সংজ্ঞা ব্যবহার করা হয়েছে। ধর্ম, জাতীয়তা, বর্ণ বা লিঙ্গগত বৈশিষ্ঠ্যের ওপর ভিত্তি করে কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি যদি বৈষম্যমূলক ভাষা প্রয়োগ করা হয়, তাহলে সেটিকে ঘৃণামূলক বক্তব্য হিসাবে ধরা হয়।