বিশ বাঁও জলে সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি
নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের(West Bengal State Government) সঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের(West Bengal State Government Employees) লড়াই চলছে সুপ্রিম কোর্টে(Supreme Court)। সেই লড়াই মহার্ঘ্য ভাতা পাওয়া আর না পাওয়া নিয়ে। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দাবি, তাঁদের কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ্য ভাতা দিতে হবে, যা মানতে নারাজ রাজ্য সরকার। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) দুই দফায় চলতি বছরে মহার্ঘ্য ভাতা বাড়িয়েছেন। এই অবস্থায় আগামী ১৫ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার(DA Case) শুনানি হওয়ার কথা আছে। কিন্তু তথ্য মিলছে সেদিনও এই মামলার শুনানি শেষ পর্যন্ত নাও হতে পারে। কেননা অনান্য গুরুত্বপূর্ণ মামলার চাপ থাকায় সেই মামলাটি শেষ পর্যন্ত শুনানির জন্য নাও উঠতে পারে বেঞ্চে। একই সঙ্গে সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলার শরিক হতে চেয়ে সংগ্ৰামী যৌথ মঞ্চের তরফে যে আবেদন জানানো হয়েছে সেই আবেদনের পক্ষে সাওয়াল করতে পারেন গেরুয়া শিবিরের নেতা হিসাবে পরিচিত কোনও এক আইনজীবী। যদিও এই মামলার খুব শীঘ্রই নিষ্পত্তি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
গত ১৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে শেষ বারের জন্য উঠেছিল ডিএ মামলা। তবে সেদিনও মামলাটির শুনানি হয়নি। মামলাটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর তাই বেশ কয়েক মাস ধরে এই মামলার অগ্রগতি দেখতে অপেক্ষায় আছেন বাংলার সরকারি কর্মীরা। চলতি মাসে ৬ জুলাই শেষ হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টে গরমের ছুটি। ৭ তারিখ থেকে ফের খুলে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপরেই ১৫ জুলাই ডিএ মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চে। এরই মাঝে ১৫ জুলাইয়ের মামলার Advanced List প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকায় থাকা মামলাগুলির শুনানি ১৫ জুলাই হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। সেই তালিকাতে রয়েছে ডিএ মামলার উল্লেখ। তালিকার ১৭৪তম মামলাটি হল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ সংক্রান্ত স্পেশাল লিভ পিটিশন। এই আবহে হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চে কত নম্বর সিরিয়ালে মামলাটি নথিভুক্ত হয়, তার ওপরেই নির্ভর করছে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
এদিকে সংগ্ৰামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ জানিয়েছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে ডিয়ারনেস অ্যালোওয়েন্স মামলার জন্য সংগ্ৰামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে জোরকদমে আইনি প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বিখ্যাত আইনজীবীকে নিয়োগ করা হবে।’ তবে কোন আইনজীবী তাঁদের হয়ে মামলা লড়বেন, আপাতত তা খোলসা করে বলেননি সংগ্ৰামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টে ডিএ সংক্রান্ত যে মামলা চলছে, সেটা পঞ্চম বেতন কমিশন সংক্রান্ত। ২০১৬ সাল থেকে সেই মামলা চলছে। যা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল, কলকাতা হাইকোর্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে এসেছে। প্রথমে স্যাটে জয় পেয়েছিল রাজ্য সরকার। তারপর থেকে প্রতিটি ক্ষেত্রে জয় পেয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। এর আগে গত ২০২২ সালের ২০ মে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে ৩ মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য। তা খারিজ হয়ে গিয়েছিল। তারইমধ্যে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার দায়ের করেছিল ৩টি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন। সেই মামলার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে রাজ্য।