সান্দাকুফু যাবেন, সঙ্গে রাখুন Fit Certificate, না হলেই যাত্রা বাতিল
নিজস্ব প্রতিনিধি: দার্জিলিংয়ের(Darjeeling) ভিড়ভাট্টা যারা পছন্দ করেন না, তাঁদের অনেকেই এখন ভিড় জমাচ্ছেন সান্দাকুফুতে(Sandakuphu)। গরমে স্বস্তির খোঁজে পাহাড়ে যাওয়া পর্যটকদের(Tourists) কাছে এখন অন্যতম আকর্ষণের জায়গা হয়ে উঠেছে সান্দাকুফু। কেউ সেখানে পরিবার নিয়ে, কেউ বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে গিয়ে কয়েকটা দিন কাটিয়ে আসছেন। কিন্তু ১১ হাজার ৯৩০ ফুট বা ৩৬৩৬ মিটার উঁচুতে থাকা সান্দাকুফুতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে অনেক পর্যটকই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কারও শ্বাসজনিত সমস্যা হচ্ছে, কারও গা বমি দিচ্ছে, কারও মাথা যন্ত্রণা করছে, কারও বা মাথা ঘুরছে। আবার একই সঙ্গে পাহাড়ি ও ওই দুর্গম এলাকায় চট করে না কোনও ডাক্তার মেলে, না আশেপাশে কোনও বড় হাসপাতাল আছে। ফলে শারীরিক সমস্যার মুখে পড়লে পর্যটকদের গোটা দলকেই সমস্যায় পড়তে হয়। একইসঙ্গে সমস্যার সন্মুখীন হন হোটেল বা হোম-স্টের মালিক কর্তৃপক্ষ। এই সব কথা মাথায় রেখেই এবার জিটিএ(GTA) কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে এবার থেকে যারা সান্দাকুফুতে যেতে চান তাঁদের আবশ্যিক ভাবে সঙ্গে রাখতে হবে Fit Certificate। অন্যথা যেতে দেওয়া হবে না।
জিটিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, সান্দাকুফুর মতো পাহাড়ি দুর্গম এলাকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। তাই এবার তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় বিশেষ করে সান্দাকুফুতে যেসব পর্যটক আসবেন, তাঁদের সঙ্গে আবশ্যিক ভাবে Fit Certificate সঙ্গে রাখতে হবে এবং তা দেখাতে হবে। জিটিএ’র তরফেই সান্দাকুফুগামী পর্যটকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের একটি টিম থাকবে সান্দাকুফুতেও। সেই দুই জায়গাতেই পর্যটকদের Fitness Certificate যাচাই করা হবে। চিকিৎসকদের দাবি, আবহাওয়ার তারতম্যে শরীরে নানা পরিবর্তন আসে। মেটাবলিজম বা বিপাক প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়। এতে হঠাৎ করে শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। হৃদযন্ত্র, কিডনির লুকিয়ে থাকা সমস্যা এমনকী সুগারের ঝুঁকিও মাথাচাড়া দেয়। এ অবস্থায় পাহাড়ে ঘুরতে এসে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই নয়া নিয়ম আবশ্যিক ভাবে সকলের মেনে চলা উচিত।
কিছু চিকিৎসকের আবার দাবি, সমতল থেকে পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার আগেই কিছু পরীক্ষা করে শরীরের প্যারামিটারগুলি জেনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়া উচিত। পাহাড়ে যাওয়ার আগে ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি করা দরকার। ফুসফুসের অবস্থা জানার জন্য বুকের এক্স-রে এবং পালমোনারি ফাংশন টেস্ট করানো আবশ্যিক। রক্তে লোহিত কণিকা, শর্করার পরিমাণ জেনে নেওয়া প্রয়োজন। এই পরীক্ষাগুলির পরই বোঝা যাবে, পাহাড়ে ওঠার ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্র ও ফুসফুস কতটা সক্ষম। কিডনির সমস্যা ও রক্তে লোহিত কণিকা কম থাকলে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। এ কারণে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। ফুসফুসে সমস্যা থাকলেও শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। হাতের বাইরে চলে যেতে পারে পরিস্থিতি। তাই আগে থেকে সব জেনে তবেই পাহাড়ের উদ্দেশ্যে পা বাড়ানো উচিত। অন্তত মধ্যবয়স্ক ও ৫০ এর ওপরে যাওয়া মানুষদের ক্ষেত্রে।