বেহালার হোমে ধর্ষণের ঘটনায় Supplementary Charge Sheet জমা দেওয়ার উদ্যোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার(Kolkata) বেহালায়(Behala) সখেরবাজারে Voice of World Blind নামের NGO কাম Shelter Home’র দুই শীর্ষ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ধর্ষণে মদত দেওয়া, যৌন হেনস্থা, অপরাধ ঘটানো ও তাতে মদত দেওয়া, খুনের চেষ্টা ও ভয় দেখানোর মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম দিকে। গত ৮ মার্চ হরিদেবপুর থানায়(Haridevpur PS) ওই হোমের প্রিন্সিপ্যাল সুকুমার চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের পাশাপাশি পকসো এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের অধিকার সংক্রান্ত আইনের একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়। তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ সুকুমারকে গ্রেফতারও করে। সেই থেকে তিনি পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন। একই সঙ্গে Voice of World Blind হোমের মূল কর্ণধার তথা দেশের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ‘নারীশক্তি’ পুরস্কারপ্রাপ্ত গার্গী গুপ্তর বিরুদ্ধেও খুনের চেষ্টা, যৌন অপরাধে মদতের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যদিও তদন্তে সহযোগিতা ও এনজিও চত্বরে প্রবেশ করতে পারবেন না— এই শর্তে তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। এবার সেই ঘটনাতেই পুলিশ Supplementary Charge Sheet জমা দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বলেই জানা যাচ্ছে।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, Voice of World Blind হোমের বিরুদ্ধে শুধু যৌন হেনস্থা বা খুনের চেষ্টার অভিযোগই নয়, ওই সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতিরও অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় সম্প্রতি প্রাথমিক চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। তবে এবার তাঁরা Supplementary Charge Sheet জমা দেওয়ার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন। কেননা, যৌন হেনস্থা বা খুনের চেষ্টার অভিযোগের তদন্ত চলাকালীনই সপ্তাহখানেক আগে ওই হোমের প্রধান কার্যালয়ে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডে কী কী ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে পুলিশ বা সংস্থার তরফে কোনও মন্তব্য না-করা হলেও এর পিছনে রহস্য রয়েছে বলেই মনে করছেন পুলিশের আধিকারিকেরা। তাঁদের ধারনা, আগুন লাগেনি, তা লাগানো হয়েছে। আর তা করা হয়েছে কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি নষ্ট করার জন্যই। ঘটনা হচ্ছে, শুধু একজন নাবালিকাই সুকুমারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেনি। এর আগেও একাধিক নাবালিকা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছিল। সেই সব ঘটনায় পুলিশি তদন্ত না হলেও এই ঘটনার তদন্তে নেমে সেই সব ঘটনার কথা জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সেই সব নাবালিকাদের সঙ্গে পুলিশের আধিকারিকেরা কথাও বলেছেন।
এই অভিযোগ সামনে আসার পর পরেই সুকুমারের বিরুদ্ধে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের Special Juvenile Unit তদন্ত শুরু করেছে। সূত্রের খবর, এই মামলায় DCRT বা Directorate of Child Rights and Trafficking’র তরফ থেকে Mass Education দফতরের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধেও Enquiry রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, ব্লাইন্ড স্কুল যে হেতু মাস এডুকেশন বিভাগের অধীন, তাই সেখানকার সংশ্লিষ্ট এক পদস্থ আধিকারিকের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনও তদন্তের গতিপ্রকৃতিতে নজর রাখছে। উল্লেখ্য, আলিপুরের পকসো আদালত হরিদেবপুর থানার ‘ক্যাজ়ুয়াল তদন্তে’ উষ্মা করছিল। বিস্ময় প্রকাশ করেছিল থানার ইনভেস্টিগেটিং অফিসারকে নিয়েও। কেননা, কোর্টের মতে, যিনি তদন্ত করছেন তিনি স্পেশ্যাল জুভেনাইল ইউনিটের সদস্যই নন ও এই সব বিষয়ে তদন্তের কোনও অভিজ্ঞতা নেই। ফলে, তদন্ত দায়সারা হচ্ছে।