গ্রেফতার হল আড়িয়াদহের জয়ন্ত, বেলঘরিয়া থানায় আত্মসমর্পণ
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাস্তায় ফেলে ছেলে ও মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল উত্তর শহরতলির আড়িয়াদহ এলাকায়। সেই অভিযোগ উঠেছিল স্থানীয় দুষ্কৃতী জয়ন্ত সিংহের(Jayanta Singh) দলবলের বিরুদ্ধে। ঘটনার দিন তারা সায়নদীপ পাঁজা ও তাঁর মা বুবুন পাঁজাকে রীতিমতো রাস্তায় ফেলে হকি স্টিক, লাঠি, ইট দিয়ে পেটায়। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে ৬’জনকে ও বুধবার জয়ন্তের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সৈকত মান্না ওরফে জঙ্ঘাকে গ্রেফতার করে। যদিও ঘটনার চার দিন পরেও অধরা ছিল জয়ন্ত। এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সে নিজেই বেলঘরিয়া থানায়(Belghoria PS) গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। তারপরেই পুলিশ গ্রেফতার করে জয়ন্তকে। তবে প্রশ্ন উঠছে, জয়ন্তকে কেন থানায় যেতে হল আত্মসমর্পণের জন্য? কেন তার আগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারল না? সেটা কী জয়ন্তের রাজনৈতিক যোগ থাকার জন্য! যদিও পুলিশের দাবি, জয়ন্ত আত্মসমর্পণ করেনি। তাকে বনহুগলি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, কলেজ পড়ুয়া সায়নদীপ পাঁজার সঙ্গে কিছু একটা বিষয় নিয়ে পাড়ারই ছেলেদের বচসা হয়। সাময়িকভাবে বিষয়টা মিটেও যায়। গত সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির সামনেই বসেছিলেন সায়নদীপ। তখন ৮-১০ জন যুবক তাঁর ওপর হামলা চালায়। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর মাও। মারের চোটে সায়নদীপের দাঁত ভেঙে যায়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ হাতে পায় পুলিশ। মূল অভিযুক্তের তালিকায় উঠে আসে জয়ন্ত সিংহের নাম। তারপর থেকে পুলিশের চোখে ফেরারই ছিল জয়ন্ত। বৃহস্পতিবার সকালে অবশ্য ছবি বদলেছে। বেলঘরিয়া থানায় নিজেই এদিন হাজিরা দেন জয়ন্ত। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, গ্রেফতারির পরে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। এদিন অথবা আগামীকাল তাকে আদালতে তোলা হতে পারে।
উল্লেখ্য, পেশায় গোয়ালা জয়ন্ত বছর ৭-৮ আগে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক(TMC MLA) তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রের(Madan Mitra) হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকায় রীতিমতো তাণ্ডব চালায় জয়ন্ত। গত বছর বোমাবাজির ঘটনায় জেল খাটলেও আধিপত্য বজায় রেখেছে ওই দুষ্কৃতী। প্রথমে জয়ন্ত ইমারতি দ্রব্যের সিন্ডিকেট তৈরি করে। কামারহাটি জুড়ে অসংখ্য জুয়া-সাট্টার ঠেকের নিয়ন্ত্রকও সে। পরে কম দামে জমি হাতিয়ে প্রোমোটারির সিন্ডিকেটও শুরু করে। কামারহাটির ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের মদতপুষ্ট একটি অংশ কম দামে জমি কিনে বেআইনি নির্মাণ থেকে শুরু করে সরকারি জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ।