‘নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ, রাজনীতির কোনও কথাই হয়নি’, দাবি মহারাজের
নিজস্ব প্রতিনিধি: স্থানীয়রা বলেন ‘প্রাসাদ’। কেউ কেউ বলেন ‘আশ্রম’ও। বিশাল জমির ওপর প্রাসাদোপম বাড়ি। সাদা-সোনালি রঙের সেই বাড়ির প্রবেশপথ থেকে অন্দরসজ্জা – সবেতেই রাজকীয় ছাপ! সেই প্রাসাদের অন্দরে বাহিরে ঘুরে বেড়ান নারায়ণী সেনার পোশাকে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা। সব কিছু দেখে রাজপুতানার রাজামহারাজদের বাড়ির কথা মনে পড়ে যায়। হ্যাঁ এটাই উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের অঘোষিত বা স্বঘোষিত মহারাজ অনন্তের বাড়ির বিবরণ। উত্তরবঙ্গের(North Bengal) কোচবিহার জেলার(Coachbehar District) কোচবিহার-২ ব্লকের চকচকা গ্রাম পঞ্চায়েতে(Chakchaka GP) রয়েছে সেই প্রাসাদ। এদিন সেই প্রাসাদেই পা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee)। অনন্ত মহারাজের(Ananta Maharaj) সঙ্গে সেখানে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। বিজেপির(BJP) রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত তৃণমূল(TMC) সুপ্রিমোকে অভ্যর্থনা জানিয়ে গলায় পরিয়ে দেন রাজবংশী উত্তরীয়। হাতে তুলে দেন রাজবংশী ঐতিহ্যবাহী গুয়াপান। আর মুখ্যমন্ত্রী চলে যেতে সেই অনন্ত জানান, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিছক সৌজন্যের। সেখানে রাজনীতি নিয়ে নাকি কোনও আলোচনাই হয়নি।
এদিন মমতা-অনন্তের সাক্ষাৎ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বেশ কৌতুহল তৈরি হয়েছিল। সেই সঙ্গে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছিল বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। আশঙ্কা ছড়িয়েছিল যে অনন্ত হয়তো এবার তৃণমূলে চলে যাবেন। যদিও এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে অনন্ত জানান সাক্ষাৎ পর্ব নিতান্তই ‘সৌজন্য’মূলক। আধঘণ্টারও বেশি সময় মুখ্যমন্ত্রী অনন্তের বাড়িতে ছিলেন। তবে দুজনের মধ্যে রাজনীতির কোনও কথা হয়নি বলেই দাবি বিজেপি সাংসদের। তবে নিজে হাসিমুখে জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি দেখে ভারী খুশি হয়েছেন মমতা, দারুণ প্রশংসা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন ছিলেন অরূপ বিশ্বাস, উদয়ন গুহ। অনন্ত মহারাজ ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা হয়। তবে সবটাই অরাজনৈতিক বলে দাবি বিজেপি সাংসদের।
মুখ্যমন্ত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পর অনন্ত জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন আমার বাড়িতে, এটা খুবই আনন্দের। উনি এসেছিলেন। আমি যথাসম্ভব আপ্যায়ণ করেছি। তবে রাজনীতির কোনও কথা হয়নি। সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। আমার বাড়ি দেখে উনি খুব খুশি। বললেন, এত সুন্দর বাড়ি আমি আগে দেখিনি। খুব ভালো লেগেছে ওঁর। বাড়ির প্রশংসা করছিলেন। না আমি তৃণমূলের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, না মুখ্যমন্ত্রীকে বাড়িতে আমন্ত্রণ করেছি। কে কী বলছেন, কিছু জানি না আমি। তবে উনি আমার বাড়ি আসায় খুব আনন্দ পেয়েছি।’