অনুপমের ‘ঘরওয়াপসি’ জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন কাজল শেখ
নিজস্ব প্রতিনিধি: ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ(Former TMC MP)। দলবদলে হয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক। পেয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা। আপাতত সেটাও অতীত। প্রত্যাহার হয়েছে সেই নিরাপত্তা বলয়। দল বদলে লাভের লাভ সে অর্থে কিছুই হয়নি। এবার তাঁর ‘ঘরওয়াপসি’ জল্পনাকে বাড়িয়ে দিলেন বীরভূম(Birbhum) জেলার সভাধিপতি কাজল শেখ(Kajal Sheikh)। নজরে বীরভূম জেলার বোলপুর লোকসভা(Bolpur Constituency) কেন্দ্রের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ অনুপম হাজরা(Anupam Hazra)। অনুপমের তৃণমূল ছাড়ার নেপথ্যে ছিল জেলায় দলের মাথা অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়া। আবার অনুব্রতের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল না কাজলেরও। সেই অর্থে কাজল ও অনুপম দুইজনই অনুব্রত বিরোধী। এবার সেই কাজলই জানিয়ে দিলেন, ‘অনুপম তৃণমূলে এলে আমি তাঁকে স্বাগত জানাব। অনুপম যদি আমাদের দলে আসতে চায়, সেটা রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবে। তাই সেই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’
বেশ কয়েকমাস নানা কারণে বিজেপির বীরভূম নেতৃত্বের সঙ্গে অনুপমের সংঘাত সর্বজনবিদিত। সেই আবহে বিশ্বভারতীর ফলক-বিতর্কে তৃণমূলের ধর্নামঞ্চে হাজির হয়েছিলেন অনুপম। তখনই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছিল, তৃণমূলের সঙ্গে কি ফের সখ্যভাব তৈরি করছেন অনুপম? তবে, এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি বিজেপির এই সর্বভারতীয় নেতা। তবে, বিজেপির জেলা নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে গিয়েছেন। এমতাবস্থায় তাঁর কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে অনুপম কোনও মন্তব্য না করলেও একটি পোস্ট করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে তিনি লেখেন—‘আমি চোরমুক্ত বিজেপি চাই। খেলা এখনও অনেক বাকি।’ কী খেলা বাকি, তা অবশ্য খোলসা করেননি অনুপম। আর ঠিক তার পরেই কাজল শেখের ‘আমন্ত্রণ বার্তা’ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
ঠিক কী বলেছেন কাজল? বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি জানিয়েছেন, ‘অনুপম অত্যন্ত ভালো ছেলে। শিক্ষিত বলেই বিজেপির সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না ওঁর। তৃণমূলে আসতে চাইলে আমার তরফে স্বাগত। বাকিটা রাজ্য নেতৃত্বের উপর নির্ভর করছে। আশা করি, ওঁর শুভবুদ্ধির উদয় হবে। অনুপম হাজরা একটা শিক্ষিত ছেলে। ওঁর সঙ্গে আমি মিশেছি, তাই জানি। যদিও এখন তিনি আমাদের দলে নেই, বিজেপি করেন। কিন্তু যে ভাল তাঁকে তো আর খারাপ বলতে পারব না। শিক্ষিত মানুষ হিসেবে উনি হয়তো বুঝতে পারছেন যে কোথাও নিশ্চয়ই অন্যায় হচ্ছে। গোটা দেশে বিজেপি মানুষের মধ্যে ধর্ম ও জাতের নামে বিভেদ করতে চাইছে। অনুপম হয়তো সেটা মেনে নিতে পারছে না। সেই কারণে সত্যিটা বলছেন। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য যা করেছেন, যে কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ তার প্রতিবাদ করবে। বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র ও অধ্যাপক হিসেবে অনুপমও প্রতিবাদ করেছেন। এই জন্য বললাম ও ভাল ছেলে। আমরা আলাদা দল করি, তাই আমাদের মধ্যে কোনও যোগাযোগ নেই। তৃণমূলে আসতে হলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনও লাভ নেই। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তবে তৃণমূলে এলে আমি তাঁকে স্বাগত জানাব।’ কাজলের মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য দেননি অনুপম। বরং ‘নীরব’ অবস্থান নিয়ে তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনাকে আরও উস্কে দিচ্চেন ক্ষণে ক্ষণে।