কঙ্গনাকে চড় মারার ঘটনায় মেয়ের সমর্থনে মুখ খুললেন কুলবিন্দরের মা
নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপি সাংসদ তথা বিতর্কিত বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতকে সপাটে চড় কষানো CISF মহিলা জওয়ান এখন ট্রেন্ডিংয়ে। গত বৃহস্পতিবার দিল্লি আসার পথে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরের মহিলা CISF জওয়ান কুলবিন্দর কউর হিমাচলের মান্ডির সাংসদক্ষ কঙ্গনা রানাউতকে সপাটে চড় কষান বলে অভিযোগ। কিন্তু ঘটনার ভিডিও প্রকাশ পেলেও তাতে কঙ্গনাকে চড় মারার দৃশ্য ফুটে ওঠেনি। কিন্তু ইতিমধ্যেই ওই ঘটনার জেরে অভিযুক্ত মহিলা জওয়ানকে সাসপেন্ড করেছে সিআইএসএফ কর্তৃপক্ষ। তাঁর বিরুদ্ধে FIR রুজু করা হয়েছে। এমনকি গ্রেফতারও করা হয়েছে। কুলবিন্দর কৌরের পিতামাতার বাড়ি সাতলুজ নদীর ধুসি বাঁধের কাছে। তাঁর বাবা-মা, দাদা-দাদি এবং তাঁর ভাইয়ের পরিবার একসঙ্গেই থাকেন। তাঁরা প্রত্যেকেই মধ্য-স্তরের কৃষক। কুলবিন্দর কৌর ২০০৮ সালে সিআইএসএফ-এ যোগ দিয়েছিলেন এবং ২০১৫ সালে জম্মুতে বিয়ে করেন। কিন্তু তাঁদের মেয়ে কাউকে চড় মারতে পারে, তা একেবারেই বিশ্বাস করে না তাঁর বাবা-মা।
কুলবিন্দর কৌরের ভাই শের সিংও কিষাণ মজদুর সংগ্রাম কমিটির একজন নেতা। তিনিও বিশ্বাস করেন না তাঁর দিদির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ। এত দীর্ঘ কেরিয়ার জীবনে কখনই কুলবিন্দর এমন কাজ করেননি। কিন্তু বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা রানাউত ভিডিওতে দাবি করেছেন যে, কুলবিন্দর তাঁকে থাপ্পড় মেরেছে। কুলবিন্দরের মা বীর কৌর বলেছেন, "আমি কৃষক আন্দোলনের অংশ ছিলাম, আন্দোলনের সময় দিল্লি সীমান্তে বসেছিলাম। কঙ্গনা মন্তব্য করেছিলেন বলে আমি কি এক পয়সাও পাবো? কঙ্গনা তাঁকে প্রথমে কিছু বলে থাকতে পারে, অন্যথায় আমার মেয়ে খুব ভালো। আমি একটি ভিডিয়ো থেকে মামলার ঘটনা জানতে পারি।" অন্যদিকে কুলবিন্দরের বাবা প্রায় এক বছর ধরে অসুস্থ। তাই মেয়ের সম্পর্কে এমন অভিযোগ কুলবিন্দরের বাবাকে জানিনো হয়নি। কুলবিন্দরের দুই কাকা সেনাবাহিনীতে ছিলেন এবং ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় কাজ করেছিলেন। এদিকে কুলবিন্দরের সমর্থনে কৃষক নেতারা তাঁর এবং তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। শিখ নেতারাও সিআইএসএফ কনস্টেবলের পিতামাতার বাড়িতে গিয়ে দেখা করছেন। অভিযুক্ত জওয়ানের সমর্থনে রবিবার (৯জুন) রাজপথে নামছেন কৃষক সংগঠনের সদস্যরা। ওই দিন 'ইনসাফ' যাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কৃষক আন্দোলনের সময়ে কঙ্গনা একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। কৃষকদের 'খালিস্তানি' বলে কটাক্ষের পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদির সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে অভিনেত্রী বলেছিলেন, 'কৃষকরা সন্ত্রাসী। ১০০ টাকার বিনিময়ে তারা তাঁদের আন্দোলনে লোক ঢোকাচ্ছে। মহিলাদের সামিল করছেন।' ওই পোস্ট ঘিরে শোরগোল পড়ে যেতেই তড়িঘড়ি তা মুছে দেন বিতর্কিত বলি অভিনেত্রী। তবে তাঁর মন্তব্যে কতটা ফুঁসে রয়েছেন পঞ্জাবের বাসিন্দারা তা বৃহস্পতিবারই প্রমাণ হয়েছে। যে মহিলা জওয়ান কঙ্গনাকে সপাটে চড় কষিয়েছেন তাঁর মা-ও আন্দোলনে সামিল ছিলেন। মায়ের অপমান ভোলেননি কুলবিন্দর। তার জেরেই এমন কাণ্ড! সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়াল এবং কৃষক মজদুর সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারওয়ান সিং পান্ধের জানিয়েছেন, কঙ্গনার কথার ভিত্তিতে সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়ে পঞ্জাবের ডিজিপির সঙ্গেও দেখা করেছেন।