বাম-বিজেপি-কংগ্রেসকে একাসনে বসিয়ে মতুয়া থেকে তফসিলিদের পাশে মমতা
নিজস্ব প্রতিনিধি: যে তপশিলী ও মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের(SC and Matua Vote Bank) কাঁধে ভর দিয়ে বিজেপি(BJP) উনিশের ভোটে বাংলার(Bengal) বুকে ১৮টি আসন দখল করে রাজ্য রাজনীতির ইতিহাসে এক নজির গড়েছিল, সেই তফসিলি আর মতুয়ারাই এখন বিজেপিকে নিয়ে তীব্র আতঙ্কিত। কেননা বাংলার বুকে হাজারে হাজারে আধার কার্ড বাতিল(Aadhar Card De-Activation) করে দেওয়া হচ্ছে। আর যাদের তা বাতিল হচ্ছে তাঁদের একটা বড় অংশই আবার তফসিলি বা মতুয়া। এবার সেই তফসিলি আর মতুয়াদের পাশেই দাঁড়ালেন বাংলার অগ্নিকন্যা। দিলেন তাঁদের অভয়। সেই সঙ্গে নিশানা বানালেন একাসনে বসে থাকা বাম-বিজেপি ও কংগ্রেসকে। সোম দুপুরে নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) কার্যত তুলোধনা করলেন বিজেপির পাশাপাশি বাম-কংগ্রেসকেও(Left and Congress)।
এদিন মমতা বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে রাজ্যের মানুষকে বিপদে ফেলছে কেন্দ্র সরকার। কিন্তু বাংলার মানুষের ক্ষতি করার ক্ষমতা কারও নেই। বিজেপির একমাত্র কাজ হল মানুষকে বিরক্ত করা। অপদার্থ রাজনৈতিক দল একটা। মানুষের বিপদে পাশে নেই। এর মদতদাতা হচ্ছে সিপিএম এবং এখানকার কংগ্রেস। ওরা বাংলাকে ভয় পায়, তাই এসব করছে। রাজ্যকে না জানিয়েই এইসব করছে। এটা ফ্যাসিবাদী চক্রান্ত। রাজ্যকে জানাবে না মানে? রাজ্যই তো নিরাপত্তা দেবে। বিজেপি পার্টি অফিস মিথ্যা কথা ছাড়া আর কী করবে? সবাই বলে ভারতীয় জঞ্জাল পার্টি। বাংলায় রোজ কেন্দ্র থেকে একাধিক টিম আসছে, চোপড়ায় কটা টিম গিয়েছে? ৩৫৫টা কমিটি পাঠিয়েছে বাংলায়। রোজই কাউকে না কাউকে পাঠায়। আর চোপড়ায় শিশু মারা গেলে টিকিটাও দেখা যায় না। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এটাকে বন্ধ করতে হবে। আমরা ওয়েব পোর্টাল চালু করছি। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবে কাদের নাম কাটা হয়েছে। যাদের নাম কাটা হচ্ছে তাদের আমরা আলাদা কার্ড দেব যাতে তাঁরা কোনও সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে হয়ত টাকা যাবে না। তবে ক্যাম্প করে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে দিয়ে দেব। সুবিধা তাদের দেবই। কোনও গরিব মানুষকে না খেয়ে মরতে দেব না। আমি তফসিলি, সংখ্যালঘু, জেনারেল কাস্ট সকলকে নিশ্চিত করতে পারি, বাংলায় এনআরসি আমরা করতে দেব না। আমরা জীবন দিয়ে লড়াই দিয়ে রুখব।’
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনেও একটা টিম পাঠাচ্ছি। তারা জানুক এটা। এভাবে চলতে পারে না। প্রয়োজনে আইনের সাহায্য নেব। ভোটের আগে এটা কেমন লুকোচুরি খেলা? এভাবে জোর করে গুন্ডামি করে ভোটে জেতা যায় না। প্রতি পদে আমরা রাজনৈতিক যুদ্ধ করছি। মানুষকে বঞ্চিত হতে না দেওয়ার জন্য যা যা করার আমরা করব। গায়ের জোরে ইলেকশন ঘোষণার ১০-১৫ দিন আগে এটা কীসের রাজনীতি? স্বৈরাচারীদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। এরপর বলবে আগে কাটলাম, পাঁচ বছর পর নাগরিকত্ব দেব। এবার মতুয়া বন্ধু, তফসিলি বন্ধু, সকলে বুঝতে পারছেন তো ওদের গেমপ্ল্যানটা? আপনাকে না জিজ্ঞাসা করে ক্ষমতা কেড়ে নিচ্ছে। আগে জবাব দিন কেন আধার কার্ডগুলো কেটেছেন। আমরা আধার গ্রিভান্সেস পোর্টাল রাজ্য সরকারের তরফে মঙ্গলবার থেকে চালু করছি। যাদের আধার কার্ড ডিঅ্যাক্টিভেট হয়েছে আমাদের দ্রুত জানান। তারা কোনও সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে না। সামাজিক, গণতান্ত্রিক, অর্থনৈতিক অধিকার সবটা পাবেন। এটা দিল্লি নয়, পশ্চিমবঙ্গ।’