OthersWeb Stories
খেলা | অন্যান্যক্রিকেটফুটবল
ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ
বিনোদন | ধারাবাহিকটলিউডবলিউডহলিউড
শিক্ষা - কর্মসংস্থান
শারদোৎসব | মহালয়াবনেদিবাড়ির পুজোপুজো ভ্রমণপুজো বাজারতাহাদের কথাতারাদের পুজোগ্রামবাংলার পুজোআজকের দশভূজা
লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না
রাজ্য | হুগলিহাওড়ামুর্শিদাবাদমালদহবীরভূমবাঁকুড়াপূর্ব মেদিনীপুরপূর্ব বর্ধমানপুরুলিয়াপশ্চিম মেদিনীপুরপশ্চিম বর্ধমাননদিয়াদার্জিলিংদক্ষিণ দিনাজপুরদক্ষিণ চব্বিশ পরগনাঝাড়গ্রামজলপাইগুড়িকোচবিহারকালিম্পংউত্তর দিনাজপুরউত্তর চব্বিশ পরগনাআলিপুরদুয়ার
বিবিধ | আনন্দময়ী
আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর

‘মতুয়া ভাইবোনদের বলছি’, কী বললেন মমতা

সব হারাবেন। এটাও যাবে। ওইটাও যাবে। এই দরখাস্ত করার আগে বারবার ভাবুন। একবার নয় হাজার বার ভাবুন - মতুয়াদের উদ্দেশ্যেই বার্তা মমতার।
05:10 PM Mar 12, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
Courtesy - Facebook

নিজস্ব প্রতিনিধি: গতকাল থেকে দেশজুড়ে লাগু হয়েছে CAA বা Citizenship Amendment Act। সেই আইন ঘিরে দেশজুড়ে উদ্বেগ, আতঙ্ক, আশঙ্কা, চিন্তা ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বাংলায় সব থেকে বেশি উদ্বেগে রয়েছেন সংখ্যালঘুরা এবং পূর্ব বাংলা থেকে আসা মানুষেরা। একই সঙ্গে বাংলায় বসবাস করেন কয়েক লক্ষ মতুয়া সমাজের মানুষ। এরাই দীর্ঘদিন ধরে নাগরিকত্বের দাবি জানিয়ে আসছেন। এদের নাগরিকত্ব প্রদানের আশ্বাস দিয়েই কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার Citizenship Amendment Act নিয়ে এসেছে। গতকাল থেকে তা সারা দেশে চালু হতেই মতুয়াদের একাংশ রীতিমত উৎসবে মেতে উঠেছে। কিন্তু এদিন অর্থাৎ ১২ মার্চ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবড়া থেকে প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকে সেই মতুয়াদের উদ্দেশ্যেই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কী বললেন তিনি?

এদিন মমতা মতুয়াদের(Matua) উদ্দেশ্য জানিয়েছেন, ‘CAA-র কোনও যৌক্তিকতা নেই। আইন বিশেষজ্ঞরাও আমাদের একই কথা বলেছেন। যদি সত্যি কেউ নাগরিকত্ব পায় আমি খুশি হব। এর কোনও স্বচ্ছতা নেই। নিশ্চয়তা নেই। মতুয়া ভাইবোনদের বলছি, আপনারা দরখাস্ত করলে সব নাগরিকত্ব বাতিল করে দেবে। অধিকার বাতিল করে দেবে। এটা NRC-র সঙ্গে কানেকটেড। আপনাদের ডিটেনশান ক্যাম্পে নিয়ে যাবে। এই দরখাস্ত করার আগে বারবার ভাববেন। একবার নয় হাজার বার ভাবুন। বিজেপি মতুয়াদের নিয়ে ভাবে না। ওদের যা ভাল করার আমরা করেছি। মমতাবালা ঠাকুর করেছেন। ওরা শুধু ভুল বুঝিয়েছে। একটা মানুষ অধিকার পেলে খুশি হব। কিন্তু কেউ বঞ্চিত হলে আমি তার সামনে দাঁড়িয়ে সেলটার দেব। বাংলা থেকে কাউকে বিতাড়িত করতে দেব না। এতদিন ভোট দিয়েছেন? আধার কার্ড ছিল? জমি আছে? এই আইনে যেই দরখাস্ত করবেন আপনি বিদেশি হয়ে যাবেন। এটা ধর্মনিরপেক্ষতায় আঘাত করেছে। আপনাদের ভাঁওতা দিচ্ছে। ধাপ্পা দিচ্ছে। সব হারাবেন। এটাও যাবে। ওইটাও যাবে। সব হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৌন ২০১৫ সালের পর যাঁরা ভারতে এসেছেন তাঁরা বেআইনি হয়ে যাবেন। সংখ্যালঘুরা তো আছেনই।’

এর পাশাপাশি মমতা জানিয়েছেন, ‘আমি বই লিখেছিলাম নাগরিকত্বের আতঙ্ক। বইটা পারলে কিনে পড়বেন। যারা খুশি হচ্ছেন তাঁরা পড়ে দেখবেন আইনটা কত ভয়ঙ্কর। আমরা বাংলায় থাকতে ডিটেনশান ক্যাম্প করতে দেব না। কোনও এনআরসি করতে দেব না। কোনও বঞ্চনা-লাঞ্চনা করতে দেব না। এর জন্য আমার যদি জীবন যায় আমি জীবন দেব। বাংলার মানুষের অধিকার কাড়তে দেব না। ফর্মের এক জায়গায় বলা হয়েছে বাবার বার্থ সার্টিফিকেট জমা দাও। সবার বাবার বার্থ সার্টিফিকেট আছে? আমার বাবার বার্থ সার্টিফিকেট নেই। আমি বাবা-মার জন্মদিনই কবে জানি না। আমার মতো আপনাদেরও এমন অনেক পরিবার আছে যাঁদের বাবার ৫০-৬০ বছর বয়স। তাঁরা বার্থ সার্টিফিকেট পাবেন তো? খবরদার এই পথে যাবেন না। বিজেপি বিভিন্ন কথা বলবে। কিন্তু এই পথে হাঁটবে না। একজনের ১৮ বছরের আগে নাগরিকত্ব পাবে না। সে কন্যাশ্রী পাবে না, শিক্ষাশ্রী পাবে না, মেধাশ্রী পাবে না, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবে না। আপনাকে বেআইনি হতে হবে। এটা একটা জুমলা। যদি সত্যি কেউ নাগরিকত্ব পায় আমি খুশি হব।’

মমতা এদিন মতুয়াদের কাছে CAA’র বিভৎসতা বোঝাতে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনও তুলে ধরেন। বলেন, ‘ইউনাইটেট নেশনে(UNO) বলা হয়েছে, অনুপ্রবেশকারীরা যেন বৈধ কারণ ছাড়া রাষ্ট্রহীন না হয়ে পড়ে। এমনকী শরণার্থীরাও যদি পাশের জায়গায় গিয়ে আশ্রয় নেয় তাদেরও কিন্তু মানবিকতার খাতিরে তাঁদের আশ্রয় দিতে রাষ্ট্র বাধ্য থাকে। এই CAA হল NRC-র সঙ্গে যুক্ত। সব রাষ্ট্রহীন হবে। আপনি যদি নাগরিক না হন তাহলে সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা, ২১ নম্বর ধারায় সব অধিকার থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন কী করে? আদালতেও চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। সারা পৃথিবীতে নিয়ম আছে। কোনও দেশে পাঁচ বছর, কোনও দেশে তিন বছর সেখানে থাকে তাহলে গ্রিন কার্ড পায়। আগে ডিএম-রা এই গ্রীন কার্ড দিত। সেইটাও ওরা বন্ধ করল। আপনারা তুলে দেবেন নিজের ভাগ্য বিজেপি-র হাতে? এপার বাংলার সঙ্গে ওপার বাংলার কত সম্পর্ক। কত বিয়ে, কত প্রেম, কত বন্ধুত্ব। এপারের ছেলের সঙ্গে ওপারের মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। হিন্দুদেরও হচ্ছে, মুসলিমদেরও হচ্ছে। তাদের কী হবে? মেয়ে বাপের বাড়ি যেতে পারবে না? ছেলে শ্বশুরবাড়ি যেতে পারবে না? ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব কখনও শুনেছেন? প্রথমে ওরা আপনাদের অনুপ্রবেশকারী বলবে। আর যারা নাগরিক তাঁরাও বেআইনি হবেন। মনে রাখবেন আমরা, আপনারা সকলেই নাগরিক। এই আইনের উদ্দেশ্য একটাই সকলের মধ্যেই ভেদাভেদ তৈরি করে দেওয়া।’

Tags :
CAAMamata BanerjeeMatuaNRCUno
Next Article