‘একটু স্বাভাবিক হলে আমি নিজে এরিয়া সার্ভে করব’, বড়বাজারে আশ্বাস মমতার
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে এখন লোকসভা নির্বাচন(Loksabha Election 2024) চলছে। লাগু আছে আদর্শ আচরণবিধি(Model Code of Conduct)। পুলিশ এবং প্রশাসন দুইই রয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের(Election Commission off India) অধীনে। একই সঙ্গে এই সময়ে কোনও ঘোষণাও করা যাবে না, কোনও ক্ষতিপূরণও প্রদান করা যাবে না অতিরিক্ত হারে। আর তাই ঘূর্ণিঝড় রিমলের(Cyclone Rimal) ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্থ বঙ্গবাসীর মনে প্রশ্ন জেগেছিল, ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির জন্য কী কোনও ক্ষতিপূরণ মিলবে না! ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তরের এই উদ্বেগ অনুভব করেই এদিন দুপুরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়েছিলেন ক্ষতিপূরণ প্রদান নিয়ে। আশ্বাস দিয়েছিলেন ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে থাকার। তবে তিনি শুধু সেই সোশ্যাল মিডিয়ায়া বার্তা দিয়েই ক্ষান্ত থাকলেন না। বার্তা দিলেন নির্বাচনী জনসভা থেকেও। একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও অনুরোধ জানালেন যাতে তাঁর বার্তা দুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয় সেই মর্মে।
সোমবার বিকেলে বড়বাজারের সত্যনারায়ণ পার্কে তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে নির্বাচনী প্রচারসভা করেন তৃণমূলনেত্রী৷ সেই সভা থেকেও ঝড় নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা জানান তিনি। সেই সঙ্গে আশ্বাস করেন যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি নিজে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে যাবেন। এদিন বড়বাজারের সভা থেকে তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির মরসুম, বৃষ্টি প্রচুর হয়েছে। রাতভর আমি নজরদারি করেছি। রিলিফ শেল্টারে অনেকে আছে। যাদের কাঁচা ঘর ভেঙে গেছে…অনেকের পাকা ঘর ভেঙেছে। অনেকের দোকান নষ্ট হয়েছে। আমি শুধু এইটুকু বলব, যাদের সব চলে গেল, যারা সব হারিয়েছেন, আমি তাঁদের কথা দিচ্ছি প্রশাসন যা যা উদ্যোগ নেওয়ার নেবে। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে আমি নিজে এরিয়া সার্ভে করব। আপনাদের সব সহযোগিতা করব। আপনাদের কোনও চিন্তা নেই। বাংলায় প্রতি বছর এই ঝড় ফেস করতে হয়। যত সাইক্লোন আমাদের রাজ্যে আসে৷ বঙ্গোপসাগরে আসে। প্রশাসন কতটা উদ্যোগ নিয়েছে সেইটা খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য আমি কাল সন্ধ্যা ৬টা থেকে এই কাজটা করছিলাম। আজ বিকাল ৫টা পর্যন্ত সেটা করে বেড়িয়েছি।’
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমলের জেরে রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতি সব থেকে বেশি হয়েছে সুন্দরবন এলাকায়। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড়ের প্রকোপে দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ও নদিয়া জেলায় দেড় হাজারের বেশি বিদ্যুৎ খুঁটি পড়ে গিয়েছে। এর মধ্যে দুই ২৪ পরগনাতেই পড়েছে ১২০০-এর বেশি বিদ্যুৎ খুঁটি। প্রায় ৭০০ ইলেকট্রিক পোল পড়েছে শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। একই সঙ্গে গ্রামীণ সুন্দরবন এলাকায় ৩০০-রও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নবান্নের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে চলছে ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষা। সুন্দরবনে হাওয়ার গতিবেগ বেশি থাকায় উদ্ধারকার্য করতে সমস্যা হচ্ছে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর। রাজ্য জুড়ে দেড় হাজারেরও বেশি ত্রাণ শিবির চলছে, যার মধ্যে শুধুমাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১০০০’র মতো ত্রাণ শিবির রয়েছে। ঝড়ের জেরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় লট ৮-এর জেটি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার জেরে দ্রুত মেরামতি করতে বলা হয়েছে পূর্ত দফতরকে।