পদত্যাগী কমিশনার অরুণ গোয়েলকে ব্রিগেড থেকে স্যালুট মমতার
নিজস্ব প্রতিনিধি: শুরুতেই দিলেন তিনি স্যালুট(Salute)। আর সেটাও দেশের রাষ্ট্রপতি বা বাংলার রাজ্যপালকে নয়। নয় কোনও পুলিশ আধিকারিক বা সেনা কর্তাকে। স্যালুট দিলেন তিনি রাতারাতি পদত্যাগ করা দেশের জাতীয় নির্বাচন কমিশনের(ECI) অন্যতম কমিশনার পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া অরুণ গোয়েলকে(Arun Goel)। স্তম্ভিত জনতা। স্তম্ভিত বাংলা। স্তম্ভিত ভারত। তবে এই কাজ তিনিই করে দেখাতে পারেন। হ্যাঁ ব্রিগেডের বুকে জনগর্জনের সভা(Janagarjan Sabha) থেকে বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) স্যালুট দিলেন অরুণ গোয়েলকে। কেননা তিনি কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে পদত্যাগ করে সম্মানের সঙ্গে বেড়িয়ে এসেছেন। বিষয়টি নির্বাচনের নামে ‘কলঙ্ক’ বলেও এদিন জানিয়ে দিয়েছেন মমতা।
রবিবার কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডের দিকে তাকিয়ে ছিল সারা বাংলা। তাকিয়ে ছিল গোটা দেশও। সেই ব্রিগেডে জনগর্জন সভার মঞ্চ থেকেই মমতা নিশানা বানালেন প্রধানমন্ত্রীকে ‘প্রভু’ বলে মেনে চলা জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে। গতকাল রাতেই নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন অরুণ। জানা গিয়েছে, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের সঙ্গে বেশ কিছু বিষষে মতানৈক্যের জেরেই পদত্যাগ করেছেন অরুণ। কিন্তু কোন বিষয়ে এই মতভেদ তা এখনও সামনে আসেনি। তার মাঝেই এদিন ব্রিগেড থেকে চলে এল মমতার প্রতিক্রিয়া। এদিন তিনি জানালেন, ‘আমার প্রথম কথা, গতকাল নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেছেন। কাগজে দেখলাম, বাংলার উপর যথেচ্ছ সন্ত্রাস ও বাংলায় ভোটের নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। তাঁকে এই মঞ্চ থেকে স্যালুট জানাচ্ছি। নিজের লেজ নিজেই কাটছে। যে গাছের ডালে বসে আছে, সেই গাছের ডালই কাটছে। পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচন এবং বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে দিল্লির নেতাদের এবং তার শীর্ষ কর্তাদের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার জন্য আমি অরুণ গোয়েলকে স্যালুট জানাই৷ এটা প্রমাণিত হয়েছে যে তারা কী করতে চায়৷ নির্বাচনের নামে তারা ভোট লুট করতে চায়।’
কিছুদিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে চলেছে ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ। তবে তার মাঝেই আচমকা নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে অরুণের ইস্তফা নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল। জাতিয় নির্বাচন কমিশনের ৩ সদস্যের বেঞ্চে এখন কেবলমাত্র মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার রয়ে গেলেন। কারণ অপর নির্বাচন কমিশনার অনুপ চন্দ্র পাণ্ডে গত ফেব্রুয়ারি মাসে অবসর গ্রহণ করেছেন। অরুণ গোয়েলের ইস্তফা এবং অনুপ চন্দ্র পাণ্ডের অবসর গ্রহণের ফলে এবার নির্বাচনী প্রক্রিয়া সামলানোর সমস্ত দায়িত্ব একলা রাজীব কুমারের কাঁধে এসে পড়েছে। এর জেরে লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণায় কোনও সমস্যা না হলেও কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।