আবার যোজনার টাকা দিতে আবারও নতুন করে সমীক্ষার নির্দেশ মমতার
নিজস্ব প্রতিনিধি: লোকসভা নির্বাচনের জন্য রাজ্যে প্রায় ৩ মাস ধরে থমকে গিয়েছিল যাবতীয় উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ। সেই ভোট মিটতেই এদিন নবান্নে(Nabanna) বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই বৈঠকেই তিনি জানিয়ে দেন, আবাস যোজনার(Awas Yojna) জন্য যদি কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নয়া সরকার বাংলাকে(Bengal) তার প্রাপ্য বরাদ্দ না দেয় তাহলে রাজ্য সরকারই ১১ লক্ষ মানুষকে বাড়ি করে দেবে। সেই খরচ রাজ্য সরকারই বহণ করবে। তবে কারা কারা আবাস যোজনার মাধ্যমে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য তা সঠিক ভাবে খুঁজে বের করার জন্য ফের সমীক্ষা(New Survey) করা হবে। যাতে আর আবাসের উপভোক্তা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন করে না ওঠে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিনের বৈঠকে এটাও জানিয়ে দিয়েছেন যে আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই রাজ্যজুড়ে এই সমীক্ষার কাজ শেষ করতে হবে। কেননা ডিসেম্বর থেকেই আবাসের টাকা দেওয়া শুরু করে দেওয়া হবে। কেন্দ্র সরকার টাকা না দিকে রাজ্য সরকারই ২ থেকে ৩ দফায় উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পাঠিয়ে দেবে।
উল্লেখ্য, নরেন্দ্র মোদির দ্বিতীয় দফার রাজত্বকালেই বাংলায় আবাস যোজনার টাকা পাঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে এই অভিযোগ তুলেই সেই টাকা পাঠানো বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বহু কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়েও কোথাও দুর্নীতি খুঁজেই পায়নি কেন্দ্র সরকার। কিন্তু টাকাও আসেনি। গতকালই মোদির তৃতীয় দফার সরকার তাঁদের প্রথম ক্যাবিনেট বৈঠক সারে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সারা দেশে নতুন করে ৩ কোটি বাড়ি নির্মাণ করা হবে গরিবের জন্য। গ্রাম ও শহরের জন্য আবাস যোজনায় এই বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোদি জমানায় বিগত ১০ বছরে মোট ৪ কোটি ২০ লক্ষ আবাস যোজনার বাড়ি হয়েছে। নতুন যে ৩ কোটি বাড়ি নির্মাণের জন্য গরিবদের কেন্দ্র সরকার অনুদান দেবে, সেই প্রতিটি বাড়িতেই থাকবে রান্নার গ্যাস পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সংযোগ। এদিকে মোদি সরকার টাকা না দেওয়ায় লোকসভা নির্বাচনের আগেই বাংলার জন্য মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন, আবাসের টাকা রাজ্য সরকারই দেবে, যদি কেন্দ্র সেই টাকা না পাঠায় তো। এখন দিল্লির নয়া সরকার এটা পরিষ্কার করেনি যে আবাসের টাকা তাঁরা পাঠাবে কী পাঠাবে না। তবে মমতা এখন থেকেই কোমর বাঁধছেন।
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন খুব শীঘ্রই রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ব্লক ধরে ধরে, গ্রাম পঞ্চায়েত ধরে ধরে, পুরসভা ধরে ধরে সমীক্ষা করতে হবে নতুন করে। ভাল করে দেখতে হবে কারা কারা আবাস যোজনার সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। তারপর সেই যোগ্যতা অনুযায়ী নতুন করে তালিকা করতে হবে। আগামী দিনে যদি কেন্দ্র সরকার আবাস যোজনার জন্য টাকা পাঠায় তাহলে এই তালিকা ধরেই মানুষকে বাড়ি করে দেওয়া হবে। আর যদি কেন্দ্র সরকার টাকা না দেয় তাহলে সেই বাড়ি রাজ্য সরকারই করে দেবে। কেন্দ্র টাকা পাঠালে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র নামেই তা গড়ে তোলা হবে। তবে যদি রাজ্য সরকারের টাকায় স্বেই বাড়ি তৈরি হয় তাহলে তার নাম হবে ‘বাংলা আবাস যোজনা’।