‘আমার প্রার্থী সায়নী, আগের বার আপনারা অতটা সার্ভিস পাননি’ মিমি প্রসঙ্গে মমতা
নিজস্ব প্রতিনিধি: নিজেই রাজনীতি থেকে বাণপ্রস্থে যাওয়ার ঘোষণা করেছিলেন উনিশের ভোটে তৃণমূলের(TMC) টিকিটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র(Jadavpur Constituency) থেকে জেতা টলি নায়িকা মিমি চক্রবর্তী(Mimi Chakrabarty)। দল কিন্তু এবারে আর তাঁকে প্রার্থী করেনি রাজ্যের কোনও লোকসভা কেন্দ্র থেকেই। কার্যত টলি পাড়ায় কান পাতলে শোনাও যাচ্ছে তৃণমূলের সঙ্গে এখন আর কোনও যোগাযোগই রাখেন না মিমি। হাত থেকে নাকি সাইন করা সিনেমার বেড়িয়ে যাচ্ছে। এই আবহে রবি বিকালে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) মিমির নাম নিয়েই যাদবপুরের মাটি থেকেই জানিয়ে দিলেন, ‘আমার প্রার্থী সায়নী। আগের বার আপনারা অতটা সার্ভিস পাননি। সায়নী এলাকায় পড়ে থেকে লড়াই করবে এবং দাঁতে দাঁত দিয়ে উন্নয়নের কাজে করে যাবে।’
উনিশের ভোটে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রায় ৩ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন মিমি। পেয়েছিলেন ৬ লক্ষ ৮৮ হাজার ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির অনুপম হাজরা পেয়েছিলেন ৩ লক্ষ ৯৩ হাজার ভোট। কিন্তু তারপরেও চলতি বছরের শুরুর দিকেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল যে মিমি এই বছর যাদবপুর থেকে আদৌ আর টিকিট পাবেন কিনা। তৃণমূলের তরফে প্রার্থী ঘোষণার আগেই অবশ্য মিমি নিজেই জানিয়ে দেন তিনি রাজনীতি থেকে বাণপ্রস্থ নিচ্ছেন। পরে সেই যাদবপুরের জন্য আরেক টলি অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের(Sayani Ghosh) নাম তুলে ধরা হয় ব্রিগেডের মঞ্চে। এদিন সেই সায়নীর হয়ে সোনারপুরে সভা করতে গিয়ে মমতা কার্যত জানিয়ে দেন, ভুল ছিল তাঁদের প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, উনিশের ভোটে জেতার পর মিমিকে এলাকায় না পাওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের একাংশের মনে ক্ষোভ জন্মেছিল। আর তাই তৃণমূলও মিমিকে নিয়ে ঝুঁকি নেয়নি। তাঁর নাম বায়ে প্রার্থী করা হয়েছে সায়নীকে।
মিমির মতো সায়নীও তৃণমূলের অন্যতম তারকা মুখ। তবে অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কয়েক বছর ধরে দলীয় কাজকর্মে সক্রিয়ভাবে রয়েছেন সায়নী। যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রীও তিনিও। মমতার কথায়, সায়নীর রাজনৈতিক দক্ষতা বুঝেই তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে। এদিন সোনারপুরের সভা থেকে মমতা যাদবপুরের বিদায়ী সাংসদের বিষয়ে স্বীকার করে নেন যে মিমি সাংসদ থাকাকালীন যাদবপুরবাসী সেভাবে পরিষেবা পায়নি। যদিও এর জন্য টলিউড নায়িকা মিমিকে দায়ী করেননি তিনি। বরং তৃণমূলের 'দোষ’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সায়নীকে পাশে নিয়ে মমতা বলেন , ‘আগেরবার তাঁর অবশ্য কোনও দোষ ছিল না। তিনি নিজের ফিল্ম জগতে ব্যস্ত। এটা আমাদেরই দোষ ছিল। সে জন্য আমরা শুধরে নিয়েছি।’ ৪০ বছর আগে ১৯৮৪ সালে যুবনেত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাদবপুরে জিতেছিলেন। তাই যাদবপুরকে নিয়ে আজও মমতার আবেগ রয়েছে। তাই সভা শেষে মিমির প্রশংসা করেও সায়নীর হাতও তুলে ধরেন তিনি।