OthersWeb Stories
খেলা | অন্যান্যক্রিকেটফুটবল
ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ
বিনোদন | ধারাবাহিকটলিউডবলিউডহলিউড
শিক্ষা - কর্মসংস্থান
শারদোৎসব | মহালয়াবনেদিবাড়ির পুজোপুজো ভ্রমণপুজো বাজারতাহাদের কথাতারাদের পুজোগ্রামবাংলার পুজোআজকের দশভূজা
লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না
রাজ্য | হুগলিহাওড়ামুর্শিদাবাদমালদহবীরভূমবাঁকুড়াপূর্ব মেদিনীপুরপূর্ব বর্ধমানপুরুলিয়াপশ্চিম মেদিনীপুরপশ্চিম বর্ধমাননদিয়াদার্জিলিংদক্ষিণ দিনাজপুরদক্ষিণ চব্বিশ পরগনাঝাড়গ্রামজলপাইগুড়িকোচবিহারকালিম্পংউত্তর দিনাজপুরউত্তর চব্বিশ পরগনাআলিপুরদুয়ার
বিবিধ | আনন্দময়ী
আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর

ঝড় বিধ্বস্ত জলপাইগুড়ির পাশে রাত জাগা মমতা, মোদির শুধুই ট্যুইট

রাত জেগে জলপাইগুড়ির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বললেন স্বজনহারাদের সঙ্গে। দেখা করলেন আহতদের সঙ্গে। আর মোদি করলেন শুধু ১টি ট্যুইট।
09:44 AM Apr 01, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
Courtesy - Facebook

নিজস্ব প্রতিনিধি: কালবোইশাখী নয়, টর্নেডোই(Tornedo)। রবি বিকালে কয়েক মিনিটের সেই টর্নেডোই কেড়ে নিয়েছে উত্তরবঙ্গের(North Bengal) জলপাইগুড়ি জেলার(Jalpaiguri District) ৫ জনের জীবন। আহতের সংখ্যা শতাধিক। এই অবস্থায় কাল রাতেই কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের পথে রওয়ানা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বিমানে বাগডোগরা গিয়ে সেখান থেকে সড়কপথে সোজা চলে আসেন জলপাইগুড়িতে। রাত জেগে সেখানকার পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন তিনি। একই সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি মৃতদের পরিবারের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়ির যে যে এলাকা রবিবারের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে সব জায়গায় রাতেই চলে মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিজে খতিয়ে দেখেছেন। পরিস্থিতির তদারকি করেন। সব মিটিয়ে তাঁর হোটেলে ফিরতে রাত আড়াইটে বেজে যায়। অন্যদিকে, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) এদিন সকালে জলপাইগুড়ির ঝড় নিয়ে একটি ট্যুইট করেই হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। এখানেই দুইয়ের ফারাক। ছিল, আছে, থাকবে।

রবি বিকালের টর্নেডোর ধাক্কায় জলপাইগুড়ি শহর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা রীতিমত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। মারা গিয়েছেন ৫জন। এদের মধ্যে ৪জনের পরিচয় সামনে এসেছে। এরা হলেন - দ্বিজেন্দ্রনারায়ণ সরকার(৫২), অণিমা বর্মন(৪৫), জগেন রায়(৭২) ও সমর রায়(৬৪)। সকলের বাড়িতেই রাতে গিয়েছিলেন মমতা। তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ট্যুইট করে লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি-ময়নাগুড়ি এলাকায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু পরিবার। এই ঝড়ে অনেকেই তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন। তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এই ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ সহায়তা নিশ্চিত করতে বলেছি। আমি বাংলার সকল বিজেপি কর্মীদের অনুরোধ করব এই বির্পযয়ের সময় তাঁরা যেন ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করেন এবং তাঁদের পাশে থাকেন।’ এই ট্যুইট নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠছে। প্রধানমন্ত্রীকে কে খবর দিল ভারী বৃষ্টি হয়েছে? একই সঙ্গে কাল রাতে তো বটে এদিন সকালেও ঝড়ে বিধ্বস্তদের পাশে বিজেপির কোনও কার্যকর্তাকে দেখা যায়নি। থাকছেন সেই একজনই। বাংলার মেয়ে মমতা।

গতকাল রাতে মুখ্যমন্ত্রী জলপাইগুড়ি হাসপাতালে যাওয়ার পথে প্রথমে গোশালা মোড়ে নামেন তিনি। যান মৃত অনিমা বর্মনের বাড়িতে। পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর এলাকার বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিডিও কলে ত্রাণ শিবিরে থাকা বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এর পর চলে যান কালীতলা রোডে। সেখানে আরেক মৃত দ্বিজেন্দ্রনারায়ণ সরকারের বাড়িতে যান তিনি। বেশ কিছুক্ষণ সেখানে ছিলেন তিনি। কথা বলেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আশ্বাস দেন পাশে থাকার। এর পর সোজা হাসপাতালের পথে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে ১২টায় হাসপাতালে প্রবেশ করেন তিনি। আহতরা ভর্তি ছিলেন হাসপাতালের পাঁচতলায়, মুখ্যমন্ত্রী সোজা সেখানেই চলে যান। আহতদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেন তিনি। কার কী সমস্যা আছে তা শোনেন। কোথায় লেগেছে জিজ্ঞেস করেন। কথা বলেন চিকিৎসকদের সঙ্গেও। মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে পেয়েই অনেকেই বলেন, ঝড়ে তাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। নির্বাচনী বিধি লাগু হওয়ায় তিনি কোনও আর্থিক সাহায্য ঘোষণা না করলেও সকলের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।

হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন মমতা। হাসপাতাল কর্মীদের প্রশংসা করেন তিনি। জানান উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে। বললেন, ‘দলের সকলে কাজ করেছে। প্রশাসন ভাল করেছে। এখন রাজনীতির সময় নয়। মৃতদের ৪টে পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়েছে, আতদের সবার সঙ্গে দেখা হয়েছ, কথা হয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তারা উদ্যোগ নিয়ে যেভাবে এত তাড়াতাড়ি উদ্ধারকার্য চালিয়েছে... এখানে প্রায় ৭০০-৮০০ বাড়ি একেবারে উড়ে গিয়েছে। আহতদের দেখলেই বোঝা যাবে, কারও হাত কেটেছে, কারও পা কেটেছে, কারও মাথা ফেটে গিয়েছে। কারও বুকে চাপ পড়ে, আরও নানারকম সমস্যা। ১ জন ছাড়া বাকিরা মোটামুটি স্থিতিশীল। আর ৩ জনকে আমরা এখান থেকে পাঠিয়েছি, একটা অপারেশেন হয়ে গিয়েছে, ভালো আছে। আরও ২ জন শুনছি ভালো আছে। একজন মনে হয় গুরুতর আছে। এদের ঘরবাড়ি কিছু নেই, যতক্ষণ ঘরবাড়ি করে না দেওয়া হবে, আশ্রয়হীন অস্থায়ি রিলিফ ক্যাম্পেই তাদের সময় কাটাতে হবে। প্রশাসন নিশ্চয় তার সহযোগিতা নিয়ে নিয়ে তাদের পাশে থাকবে এবং প্রশাসনের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত আছেন তাঁরা যথেষ্ট উদ্যোগ গিয়ে কাজ করেছেন। বাদবাকি তাঁদের চিকিৎসা খাবার ও রিলিফে আর যা যা দেওয়া হয়, সেই সমস্ত কিছু দিতে হবে। কারণ তাদের কাছে একটা বাসনপত্রও নেই। কম্বল ধুতি শাড়ি জামাকাপড় সবটাই জেলার কাছে থাকে। আমা আশা করি জেলা প্রশাসন সঠিক বন্দোবস্ত করবে। বাদবাকি যে কাজগুলো আছে আমরা যথাস্থানে কথা বলে প্রশানকে বলব সেগুলি করতে।’

রাতে চালসার হোটেলে ফিরেই মমতা ফেসবুকে বিবৃতি দিয়ে জানান, ‘শুরুতেই আমি জলপাইগুড়িতে বিধ্বংসী কালবৈশাখী ঝড়ে প্রাণ হারানো প্রত্যেক মানুষের বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করে, তাঁদের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।‌ সঠিক সময়ে প্রশাসন পদক্ষেপ করায় আজ বহু মানুষের প্রাণ বেঁচে যায়। তাঁদের এই নিরলস কর্মকে কোনো বিশেষণ দিয়ে বিশেষায়িত করা যাবে না। বহু সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে কিন্তু আমি আশাবাদী ধীরে ধীরে সকলের জীবন স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। আজ জলপাইগুড়ির কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করলাম এবং আহত ব্যক্তিদের দেখতে উপস্থিত ছিলাম জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরে গিয়েও দেখা করেছি সকলের সঙ্গে। ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার ও আহতদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললাম এবং তাঁদের আশ্বস্ত করলাম। হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সকলের শারীরিক অবস্থার পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করলাম। এই হৃদয়বিদারক, মর্মন্তুদ ঘটনায় যেভাবে প্রশাসন-সহ ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করেছেন, তাতে আমি তাঁদের সকলকে কুর্ণিশ এবং স্যালুট জানাই। প্রশাসন আক্রান্ত প্রত্যেকটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে, তাঁদের পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনারা সকলে ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন - এই প্রার্থনা আমার।’

Tags :
Jalpaiguri DistrictMamata BanerjeeNarendra modinorth bengalTornedo
Next Article