For the best experience, open
https://m.eimuhurte.com
on your mobile browser.
OthersWeb Stories খেলা ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ বিনোদন শিক্ষা - কর্মসংস্থান শারদোৎসব লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না রাজ্য বিবিধ আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর
Advertisement

শান্তনুকে ধাক্কা মতুয়া ফাউন্ডেশনের, শুরু বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ

শান্তনুকে আরও কোনঠাসা করতে মতুয়াদের জন্য পৃথক রাজনৈতিক দল গড়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেল। নজরে মতুয়া ফাউন্ডেশন।
02:01 PM Feb 05, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
শান্তনুকে ধাক্কা মতুয়া ফাউন্ডেশনের  শুরু বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ
Courtesy - Google
Advertisement

নিজস্ব প্রতিনিধি: মতুয়া জনসমাজের প্রাণকেন্দ্র হল উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার বনগাঁ মহকুমার গাইঘাটা ব্লকের ঠাকুরনগর এলাকার ঠাকুরবাড়ি। সেই ঠাকুরবাড়ির বড় ছেলে হওয়ার সুবাদে তিনি চেয়েছিলেন মতুয়ায় সমাজের মাথা হয়ে উঠতে। হয়ে উঠতে চেয়েছিলেন মতুয়াদের প্রথম শেষ কথা। সেই চেষ্টা যে খুবই বৃথা গিয়েছে এমন কিন্তু নয়। পদ্মশিবিরে যোগদানের পর থেকেই তিনি হয়ে গিয়েছিলেন গেরুয়া হাওয়ার সাওয়ারি। পরে উনিশের লোকসভা ভোটে মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদানের আশ্বাস দিয়ে CAA লাগু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হয়ে যান বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির(BJP) সাংসদও। পরে হয়ে যান কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রীও। কিন্তু সেই তিনি ধাক্কা খেয়েছেন গতবছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে। দল গোহারান হেরেছে মতুয়া প্রভাবিত গ্রামগঞ্জেও। গত এক দেড় মাসে একাধিকবার মতুয়া সমাজে তাঁর কথার ওপর কথা বলতে দেখা গিয়েছে অনেককেই। এবার তাঁকে আরও কোনঠাসা করতে মতুয়াদের জন্য পৃথক রাজনৈতিক দল গড়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেল। নজরে মতুয়া ফাউন্ডেশন(Matua Foundation) ও শান্তনু ঠাকুর(Shantanu Thakur)।

Advertisement

ঠাকুরবাড়ির বড় ছেলে, বিজেপির সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে শান্তনু মতুয়া সমাজের মাথা হয়ে উঠতে চেয়েছিলেন। হয়ে উঠতে শুরুও করেছিলেন। বাংলার বুকে তো বটেই, ভারতের বুকেও তাঁর কথার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস রাখত না মতুয়াদের মধ্যে থেকেই। কিন্তু সেই একাধিপত্যকেই ধাক্কা দিয়েছে তাঁরই ভুল সিদ্ধান্ত যা মতুয়া সমাজকে তাঁর প্রতি বিরাগ করে তোলে। গত বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নবজোয়ার কর্মসূচীতে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেদিন শান্তনু তাঁকে মতুয়া ধর্মসমাজের মূল মন্দিরে ঢুকতে দেননি। তিনি নিজে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে সেই মন্দিরে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। সেই ঘটনা ভাল ভাবে নেননি মতুয়া ধর্মের মাথারা। তারই প্রভাব পড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমা এবং নদিয়ায় জেলার রানাঘাট ও কল্যানী মহকুমা যা রীতিমত মতুয়া অধ্যুষিত সেই এলাকায় ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় বিজেপি। জেতে তৃণমূল। এমনকি ঠাকুরনগরের যে বুথে শান্তনু ও তাঁর পরিবারের লোকেরা ভোট দেন সেখানেও হেরে যায় বিজেপি।

Advertisement

এরপর সময় যত গড়িয়েছে মতুয়া ধর্মসমাজে শান্তনুর নিরঙ্কুশ আধিপত্য বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে ধাক্কা খেয়েছে। সম্প্রতি তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এক সপ্তাহের মধ্যে মতুয়াদের নাগরিক্ত্ব প্রদান করবে কেন্দ্র সরকার। এক সপ্তাহের মধ্যে লাগু হয়ে যাবে CAA। কিন্তু সেই ঘোষণার এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে ডিগবাজি খেয়েছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন CAA লাগু হওয়া এবং মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদান করার প্রতিশ্রুতি কার্যত বিজেপি এবং তাঁর নিজের মতুয়া ভোট টানার জন্য একটা কৌশল ও ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। আর তারপর থেকেই শান্তনু নিয়ে আগ্রহ হারিয়েছে মতুয়া সমাজ। বরঞ্চ এখন শান্তনুর প্রকাশ্যে বিরোধিতা করতে মাঠে অবতীর্ণ হচ্ছে মতুয়া ফাউন্ডেশন। নদিয়া জেলার চাকদহের এই সংগঠনটি মতুয়া সমাজের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার শুরু করে দিয়েছে কল্যাণী, রানাঘাট ও বনগাঁ মহকুমায়। মানুষের সুবিধা ও অসুবিধার কথা শুনছেন তাঁরা।

এই কর্মসূচী নিয়ে মতুয়া ফাউন্ডেশনের তরফে সঞ্জয় বাইন জানিয়েছেন, ‘আমাদের নিয়ে সমস্ত দল রাজনীতি করে। আমাদের পাশে কেউ দাঁড়ায় না। তাই আমরা নিজেরাই এবার মানুষের দ্বারে দ্বারে যাব। আগামী দিনে বড় পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। বিভিন্ন জেলার ব্লকে ও শহরে মতুয়া ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছবে এবং মতুয়াদের সঙ্ঘবদ্ধ করবে। আমাদের পছন্দের প্রার্থী যদি লোকসভা ভোটে টিকিট না পায়, তাহলে অন্যরকম চিন্তাভাবনা হবে। মতুয়ারাই লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের স্বার্থ ও ঐক্য রক্ষার্থে এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে বেগ দিতে অরাজনৈতিক ভাবে ময়দানে নামবে।’ বিধানসভা নির্বাচন হোক বা লোকসভা, মতুয়া ভোট যে বাংলার নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি ‘ফ্যাক্টর’, এ আর বলার অবকাশ রাখে না। সেই সূত্রে মতুয়াদের নিজস্ব রাজনৈতিক দল তৈরি হলে বিজেপি ও শান্তনুকে যে তা ভালই বেগ দেবে সেটা তাঁদের থেকে আর ভাল কেই বা বোঝে! CAA নিয়ে শান্তনুর ভোলবদলকেও এখন তাই গুরুত্ব দিতে চাইছেন না মতুয়ারা। তাঁরা বুঝে গিয়েছেন, শান্তনু আর বিজেপি প্রতিশ্রুতি আসলে ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।

Advertisement
Tags :
Advertisement