রাজ্যে গণপিটুনি রুখতে ১১ দফা দাওয়াই নবান্নের
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে ক্রমাগত ঘটে যাওয়া গণপিটুনির ঘটনা রুখতে ১১ দফা দাওয়াই দিল নবান্ন। বুধবার রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা মোট ১১ দফা নির্দেশিকা জারি করেছেন। নবান্ন থেকে সেই নির্দেশিকা প্রত্যেক জেলার পুলিশ সুপার(SP) সহ প্রতিটি থানা এবং কমিশনারেটের কমিশনারদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১১ দফা ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে গণপিটুনির ঘটনা রুখতে এলাকায় এলাকায় সিভিক ভলেন্টিয়ার(Civic Vollenteer) ও ভিলেজ পুলিশদের (Village Police)বেশি করে কাজে লাগাতে হবে। যাতে তারা কারা এই ধরনের ঘটনা বা অপরাধ সংগঠিত করছে তাদের সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য পুলিশ জানতে পারে। সিভিক ভলেন্টিয়ার ও ভিলেজ পুলিশদের এলাকায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে সোর্স তৈরি করার কাজে লাগাতে হবে। ক্লাব গুলিকে এই ধরনের ঘটনা রোধে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে আরও সক্রিয়ভাবে ভূমিকা গ্রহণ করার কাজে ব্যবহার করতে হবে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে গণপিটুনি রোধে বেশি করে সতর্কতামূলক প্রচার চালাতে হবে। গুজব বিষয় পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে এবং এই ধরনের ঘটনা রোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জেলা পুলিশের অফিসারদের সব সময় সোশ্যাল নেটওয়ার্কের(Social Network) উপর নজরদারি চালাতে হবে। এই নজরদারি ২৪ ঘন্টা চালানো নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ডাকাতি ও রাহাজানির ঘটনা যেভাবে সোনার দোকানগুলিতে ঘটছে তা রোধে বেশি করে সোর্স মারফত তথ্য যাতে সংগ্রহ করা যায় বিহার ও ঝাড়খন্ড পুলিশের কাছ থেকে সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। পার্শ্ববর্তী দুই রাজ্য বিহার এবং ঝাড়খন্ড পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। সমাজ বিরোধীদের ধরে তাদের হাজার ব্যবস্থা করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষের পুলিশের উপর বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে। পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহার ও ঝাড়খন্ড থেকে যে সকল অপরাধীরা, এ রাজ্যে প্রবেশ করে অপরাধ সংগঠিত করছে তারা কি ধরনের গাড়ি বা পরিবহন ব্যবহার করছে এবং কোন রুট দিয়ে আসছে তা চিহ্নিত করতে হবে। সমাজবিরোধীরা খুনের ঘটনায় যে সকল আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা ব্যবহার করছে, তা আগাম উদ্ধারের বিষয় পুলিশকে আরও সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে।
নাকা চেকিং এবং এই ধরনের অপরাধ যারা সংঘটিত করছে তাদের ধরার বিষয় পুলিশকে সক্রিয় হতে হবে। মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘটা অপরাধে অতি দ্রুত কেস নথিভূক্ত করে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে যাতে সেই মামলায় অপরাধী দ্রুত সাজা পায় সেই ব্যবস্থা পুলিশকে গ্রহণ করতে হবে। বুধবার বিকেলে নবান্ন থেকে এই নির্দেশিকা কলকাতা সহ জেলার সমস্ত পুলিশ আধিকারিক এবং সিআইডি, এস টি এফ ও সাইবার সেল বিভাগকে পাঠানো হয়। রাজ্যের সমস্ত ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনারদের পাশাপাশি বিভিন্ন রেঞ্জের আইজি ডিআইজিদের কাছেও এই ১১ দফা নির্দেশিকা পাঠানো হয়। এর আগে গণপিটুনির ঘটনা রুখতে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেন। গণপিটুনিতে প্রাণ হারানো পরিবারদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেয় রাজ্য সরকার।