বাঙালি বধুর সাজে ব্রাজিলিয়ান তরুণী বিয়ে করলেন নবদ্বীপের কার্তিককে
নিজস্ব প্রতিনিধি,নদিয়া: আর পাঁচটা সাধারণ বিয়ের মতোই বাঙ্গালী বধুর সাজে সেজে সুদূর ব্রাজিল থেকে আসা তরুনী নবদ্বীপের(Nabwadip) পাত্র কার্তিক মণ্ডলের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হল। প্রায় ছয় বছর আগে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ। তারপর দীর্ঘ প্রেম। আর প্রেমের টানেই সুদূর ব্রাজিল থেকে চৈতন্য ভূমি তীর্থনগরী নবদ্বীপের ফরেস্ট ডাঙ্গায় ছুটে এসেছেন ব্রাজিলিয়ান তরুণী। সম্পূর্ণ বাঙ্গালী রীতি নীতি মেনে বাঙালি বধূর সাজে দুচোখ পান পাতা দিয়ে ঢেকে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ব্রাজিলিয়ান(Brazilian) তরুণী। গান্ধর্ব মতে শুভদৃষ্টি থেকে শুরু করে হস্ত বন্ধন মালা বদল থেকে সিঁদুর দান সবটাই হল। যদিও মাঝেমধ্যেই ভাষা সমস্যার জন্য থমকে যেতে হয়েছিল পুরোহিত থেকে শুরু করে নববধূকে। পাত্র কার্তিক বিভিন্ন ভাবে তার জীবন সঙ্গিনী কে মোবাইলে বাংলা থেকে পর্তুগিজ ভাষায় বদল করে দিচ্ছিল।
তবুও পুরোহিতের সাথে সাথে বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় মন্ত্র উচ্চারণ করলেন ব্রাজিলিয়ান তরুণী। আমি ব্রাজিল থেকে ভারতে এসেছেন তারই মধ্যে কিছু কিছু বাংলাও শিখেছে। বিয়ে করে খুব ভালো লাগছে এ কথাটিও জানাতে ভুললেন না নববধূ ম্যানুয়েলা আলভেস দ্যা সিলভা। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে,ভালোবাসা বা প্রেমের টানে সাত সমুদ্র পারি দেবার কথা তো অনেকেই শুনে থাকি।কিন্তু স্ব-চক্ষে তার সাক্ষী কি কেও থেকেছে? এমনই এক প্রেমের কথা, আর যে প্রেমের টানে (14,766 km) প্রায় পনেরো হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সুদুর ব্রজিল(Brazil) থেকে নবদ্বীপে প্রেমিকের বাড়িতে এসে হাজির হন ব্রাজিলের প্রেমিকা।কি ভাবছেন এও আবার হয় নাকি? হ্যা এমনটাই ঘটেছে নদীয়ার নবদ্বীপ ব্লকের ফরেস্ট ডাঙ্গা এলাকার মন্ডল পরিবারে।নবদ্বীপ ব্লকের ফরেস্ট ডাঙ্গা(Forestdanga) এলাকার বাসিন্দা কার্ত্তিক মণ্ডল, পিতা দিলীপ মন্ডল। কাত্তিক বাবু কর্মসূত্রে সুরাটে (Surat)থাকেন, আর সেখানে থাকতেই চার বছর আগে সমাজ মাধ্যমে পরিচয় হয় সুদুর ব্রাজিলের বাসিন্দা 'ম্যানুয়েলা আলভেস দা সিলভা' এর সাথে পরিচয় ধীরে ধীরে ভালোবাসার রূপ নেয় ও পরবর্তী সময়ে দুজনেই বিয়ের জন্য রাজী হয়।কাত্তিক মন্ডল জানান এর পর প্রেমিকা এখানে আসে ও আমাদের বাড়িতেই বিয়ের আয়োজন করা হয়, আগামী শুক্রবার হবে বিয়ে।
আর সবটাই হবে সনাতনী তথা বাঙালি মতেই, ইতিমধ্যে বাড়িতে শুরু হয় বিয়ের প্যান্ডেল সহ সমস্ত রকমের তোড়জোড়, এলাকার ছেলের বউ হবে বিদেশীনি, সে কারনে প্রতিবেশীদেরও উৎসাহ ও কৌতুহল যথেষ্ট দেখা দেয়। কিন্তু পাত্রী তো ব্রাজিলের, সে খেত্র ভাষার তারতম্য আছে কথোপকথন চলে কিভাবে? প্রশ্নের উত্তরের মন্ডল পরিবারের সদস্যরা জানান, বর্তমানের আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েই চলছে। অর্ততাৎ সবটাই চলছে মোবাইলের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে। পাত্রী ও তার ভাষায় আমাদের জানায় তার দেশে তার পরিবার এই বিয়েতে রাজি। আর সেও রাজি৷ পাশাপাশি নবদ্বীপের মন্ডল পরিবারে এসেও তার ভালো লেগেছে, পাশাপাশি সে আরও জানায় সে শাড়ি পরতে ভালোবাসে।
মন্ডল পরিবার জানায় ,তাদের বৌমা এখানে এসে বাঙ্গালি খাবার খাচ্ছে, তবে ঝাল ছাড়া, বাকি সব ঠিক ঠাক আছে।ভারত থেকে বহু মানুষ বিদেশে যায় বিভিন্ন কারনে, আর এবার সুদূর ফুটবলের দেশ ব্রাজিল থেকে নবদ্বীপে বিয়ে করতে আসেন পাত্রী নিজে। সে কারনে নবদ্বীপের মন্ডল পরিবার যেমন একাধারে আনন্দিত পাশাপাশি স্থানীয় দেরও কৌতুহল ছিল যথেষ্ট।