‘হাওড়ায় কোনও বেনিয়ম বরদাস্ত করব না, পুলিশকে বলছি তদন্ত করুন’: মমতা
নিজস্ব প্রতিনিধি: সোমবার নবান্নের(Nabanna) সভাঘরে ঝালদা ও তাহেরপুর ছাড়া রাজ্যের সব পুরসভার চেয়ারম্যান ও পুরনিগমের মেয়র এবং আধিকারিকদের নিয়ে নবান্নে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই বৈঠকে সব থেকে বেশি হাওড়া পুরনিগমের(Howrah Municipal Corporation) কাজের দুরাবস্থা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের বৈঠকে হাওড়া ও বালির ৫জন তৃণমূল বিধায়ককেও বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী সেই বৈঠকে তাঁদেরকেও ধমক দেন। একই সঙ্গে হাওড়া সদরের মহকুমা শাসককে শোকজ করার পাশাপাশি জেলা শাসককে অতিরিক্ত কাজের দায়িত্বভার দেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন সব থেকে বেশি ক্ষোভ উগরে দেন হাওড়া শহরে জমি দখল থেকে বেআইনি নির্মাণ ও পার্কিং নিয়ে। সরব হন বেআইনি জবরদখল নিয়েও। তিনি এদিনের বৈঠকে হাওড়া শহরের দুরাবস্থা নিয়ে হাওড়া পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র রথীন চক্রবর্তীকে তুলোধনা করার পাশাপাশি হাওড়ার একশ্রেনীর সরকারি আধিকারিক ও পুলিশ আধিকারিকদেরও তুলোধনা করেন।
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হাওড়ায় বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। কেউ টাকা খাইয়ে, কেউ টাকা খেয়ে কাজ করছে। টাকার বিনিময়ে জমি জবর দখল হয়ে যাচ্ছে। আমলা থেকে পুলিশ কর্তা অনেকেই জড়িত। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনুমতি ছাড়াই যত্রতত্র দোকান বসানো হচ্ছে। দিনের পর দিন রাস্তা পরিষ্কার হয় না। জঞ্জাল পরিষ্কার হচ্ছে না। জঞ্জাল ভ্যাট থেকে গড়িয়ে রাস্তায় এস্বে গড়াগড়ি খাচ্ছে। নর্দমা পরিষ্কার হচ্ছে না। জবরদখল হলেও দ্রুত ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয় না। ইচ্ছামতো টেন্ডার ডাকছে। প্রশাসক বসানো হলেও কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই সব কাজ একা করছে। হাওড়ার বারোটা বাজিয়েছে রথীন, কিন্তু সেটাকে সঠিক রাস্তায় কেউই আনতে পারছে না। রাস্তা নির্মাণ নিকাশিতে প্রচুর গাফিলতি থাকছে। ভদ্রতা মানে জবরদখল নয়। হাওড়ার পুলিশকে বলছি তদন্ত করুন। কাউকে রেয়াত করবেন না। তা সে মন্ত্রী হোক কী নেতা হোক কী কোনও দলের কর্মী হোক। এমনকি আমি দোষী হলে আমাকেও ছাড়বেন না।’
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, ‘হাওড়ায় সবার প্যারফরম্যান্স রিভিউ(Performance Review) করা হবে। স্বচ্ছতা যাচাইয়ে রিভিউ কমিটি(Review Committee) গঠন করা হবে। সব দুর্নীতি সাফ করব। রাজ্য প্রচুর টাকা দিচ্ছে তাও কাজ হচ্ছে না কেন? কোনও বেনিয়াম বরদাস্ত করবো না। আমি চাইনা কাউকে হেনস্থা হতে হোক। কিন্তু একটা গ্রুপ তৈরি হয়েছে। খালি জায়গা দেখলেই লোক বসিয়ে দিচ্ছে। বাংলার আইডেন্টিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আপনাদের টাকা নেওয়ার জন্য, কেন বুঝতে পারছেন না? জমি পাচ্ছেন বেচে দিচ্ছেন। খুব খারাপ পারফরম্যান্স, কেন তৈরি করা হয়েছিল আমি জানি না। একটা ঢাকনা করলেও কেউ খুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন। বেআইনিভাবে চারতলা-পাঁচ তলা তোলা হচ্ছে, কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না। দুএকজনকে গ্রেফতার করুন, দু-একটা নির্মাণ ভাঙুন। পুলিশকে বলছি অ্যাকশান নিন। অ্যাডেড এরিয়ায় কোনও প্ল্যানিং নেই। পুরসভার মধ্যে তাই কাঁচা রাস্তা রয়ে গিয়েছে। তর্ক করার আগে ভাল করে দেখে নিন। নিকাশি নালা পরিষ্কারের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে কোটি কোটি টাকা দেওয়া হলেও কোনও কাজ হচ্ছে না।’