শেষ ২ বছরে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে নাম বাদ পড়েছে ২ কোটি শ্রমিকের
নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) জমানায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প(100 Days Work Project) নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। বাংলার(Bengal) ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের টাকা পাঠানো কার্যত বন্ধই করে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। রাজ্য সরকারের তরফে বার বার টাকা চেয়েও সুরাহা হয়নি। এই আবহেই সামনে এসেছে মোদি জমানার শেষ ২ বছরে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ২ কোটি শ্রমিকের নাম বাদ পড়েছে। সম্প্রতি যৌথ ভাবে এই তথ্য তুলে ধরেছে LibTech India নামে একটি সংগঠন ও NREGA Sangharsh Morcha। ‘Unpacking MGNREGA’ Five Years of Implementation and Challenges 2019-2024,শীর্ষক রিপোর্টে আঙুল তোলা হয়েছে প্রযুক্তি নিয়ে কড়াকড়ি ও বাজেট বরাদ্দ হ্রাসের জেরে ওই ২ কোটি মানুষের নাম বাদ গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সমীক্ষকদের বক্তব্য, কাজ করেও দীর্ঘদিন ধরে টাকা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। ফলে আগ্রহ হারাচ্ছেন তাঁরা। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি, বিগত ৫ বছরে মোদি সরকারের প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থায় জোর দেওয়ার সমস্যার মুখে পড়েছেন ১০০ দিনের শ্রমিকরা। মোদিজি যতই Digital India নিয়ে শোরগোল করুন, দেশের প্রান্তিক এলাকায় এখনও প্রযুক্তির আলো পুরোপুরি পৌঁছতে পারেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৩ সালে জানুয়ারি মাস থেকে মোদি সরকার ডিজিটাল হাজিরা বাধ্যতামূলক করেছে। সেই সঙ্গে চালু হয়েছে আধার ভিত্তিক পেমেন্টও। কিন্তু প্রান্তিক মানুষদের একটা বড় অংশ এই বৃত্তে প্রবেশ করতে পারেনি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আধার ভিত্তিক পেমেন্ট ব্যবস্থা চালুর পর বিগত চারমাসে মোট নথিভুক্ত শ্রমিকদের ৬৯ শতাংশ নয়া প্রক্রিয়ায় পারিশ্রমিক তুলতে পেরেছেন।
পাশাপাশি তাঁরা তুলে ধরেছেন বাংলার প্রসঙ্গও। এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বার বার অভিযোগ করা হয়েছে যে, একুশের ভোযতে হারের জেরে ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে মোদি সরকার। এমনকি বকেয়া টাকাও মেটায়নি। আর তার জেরে এই প্রকল্পে নতুন করে নাম নথিভুক্ত করতেও সেভাবে কেউ আগ্রহ দেখাননি। আর তার জেরেই দেশজুড়ে এই প্রকল্পে রকেট গতিতে কমেছে নথিভুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ২০১৯-২০২০ সালে ১.৮৩ শতাংশ নথিভুক্ত কর্মী তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন। ২০২২-২৩ সালে এক ধাক্কায় সেই হার বেড়ে হয়েছে ২০.৪৭ শতাংশ। ওই একই অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজে নাম লিখিয়েছেন মাত্র ৪.২৪ শতাংশ কর্মী। বিগত অর্থবর্ষে অর্থাৎ ২০২৩-২৪’এও পরিস্থিতি বিন্দুমাত্র বদলায়নি। নতুন করে সংযোজিত কর্মীদের হার বাদ পড়াদের অর্ধেকও নয়। তথ্য বলছে, এই সময়ে কর্মহীন হয়েছেন প্রায় ১০ শতাংশ শ্রমিক। অন্যদিকে নাম নথিভুক্ত করেছেন ৪.১৮ শতাংশ মানুষ।