Prayag Film City’র জমিতে সৌরভের Steel Plant নির্মাণের সম্ভাবনা
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলায় বিদেশি লগ্নি টানতে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে স্পেন সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সঙ্গী ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়(Sourav Ganguly)। সেই স্পেন সফর কালেই বাংলায় ইস্পাত কারখানা(Steel Plant) গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন বাঙালির ‘দাদা’। প্রথমে ঠিক ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীতে সেই কারখানা গড়ে তোলা হবে। কিন্তু পরে সেখানকার পরিবেশ, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত বদল করেন সৌরভ। কিছুদিন আগে কলকাতার একটি অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছিলেন, বাংলায় তিনি ইস্পাত কারখানা গড়ে তুলবেনই। তবে, শালবনীতে নয়। বিষয়টি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কানে তুলেছেন। সৌরভ ওই অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট করে কোনও জায়গার নাম না বললেও তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর ছিল, তিনি গড়বেতায় ইস্পাত কারখানাটি গড়তে চান। সেই মতো জমি চিহ্নিতকরণের দায়িত্ব পড়ে জেলা প্রশাসনের ওপর। নবান্ন সূত্রের খবর, গড়বেতা-৩ ব্লকের ডুকিতে Prayag Film City’র জমিতে সৌরভের কারখানার জন্য জমি ঠিক হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সৌরভের সঙ্গে কথা বলেই এই জমিতে কারখানা গড়ে তোলা হবে কিনা তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
জানা গিয়েছে, সৌরভের সঙ্গে কারখানার জন্য জমি নিয়ে আলোচনা করেই মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুর(Paschim Midnapur) জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, শালবনী ও গড়বেতা(Garbeta) দুই জায়গারই জমি সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করে তাঁর কাছে পাঠাতে। দুটি জায়গার মধ্যে কোথায় কারখানা গড়ে তুললে কী কী সুবিধা ও অসুবিধা হবে সেটা সেই রিপোর্টের মাধ্যমে জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর সেখানেই শালবনী অপেক্ষা গড়েবেতাকেই কারখানা স্থাপনের জন্য উপযোগী বলে তুলে ধরা হয়েছে। শালবনীতে ইস্পাত শিল্প গঠনে কী কী সমস্যা রয়েছে এবং গড়বেতা এই শিল্পের জন্য কতটা অনুকূল, তা উল্লেখ করেই ওই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, শালবনীতে জলের সমস্যা রয়েছে। কারখানা চালাতে যে পরিমাণ জল লাগবে নিত্যদিন তা জোগাড় করা সমস্যার হবে। কেননা শালবনীর জমি থেকে ২০কিলোমিটার দূরে কংসাবতী নদী। সেখান থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল নিয়ে আসা অনেক ঝামেলার। অন্যদিকে, গড়বেতা-৩ ব্লকের ডুকিতে রয়েছে কুবাই নদী। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় জল আনা তুলনামূলক ভাবে সহজ হবে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ডুকি গ্রাম যা চন্দ্রকোণা রোড স্টেশনের কাছে রয়েছে সেখানে চিটফাণ্ড সংস্থা Prayag’র একটি Film City গড়ে তুলেছিলেন সংস্থার কর্ণধার বাসুদেব বাগচি ও তাঁর ছেলে অভীক বাগচি। তাঁদের তৈরি Film City উদ্বোধন করতে এসেছিলেন খোদ শাহরুখ খান। কিন্তু সেই Film City’র চাকা বেশি দূর গড়ায়নি। কোটি কোটি টাকায় তৈরি সেই Film City এখন কার্যত মাছি তাড়াচ্ছে। কিন্তু Film City’র সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ৩৫০ একর জমিও। রাজ্য সরকার ১ টাকা মূল্যে সেই জমি লিজে দেবে শিল্পোন্নয়ন নিগমকে। সেটাই সৌরভের সংস্থাকে হস্তান্তর করা হতে পারে বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। সেই কারণে ওই জমির মাপজোখ হয়েছে। তবে, সেই জমিতেই ইস্পাত কারখানা হবে কি না, সে ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সম্ভবত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এই বিষয়ে সৌরভের সঙ্গে কথা বলেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।