দলেরই পুরুষ কর্মীকে ধর্ষণের দায়ে গ্রেফতার প্রজ্বল রেভান্নার ভাই সুরজ
নিজস্ব প্রতিনিধি: দলেরই পুরুষ কর্মীকে ধর্ষণ(Rape of Party Male Worker) করার অভিযোগে গ্রেফতার(Arrested) হলেন সুরজ রেভান্না(Suraj Revanna)। এই সুরয হলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার নাতি তথা কর্নাটক বিধান পরিষদের সদস্য। একই সঙ্গে সুরয হলেন প্রাক্তন জেডিএস(Janata Dal Secular) সাংসদ প্রজ্বল রেভান্নার ভাই, যাকে ধর্ষণ এবং যৌন নিগ্রহের মামলায় পুলিশ আগেই গ্রেফতার করেছে। গতকালই সামনে এসেছিল যে, জেডিএস দলের যুব শাখার এক কর্মী চেতন কে এস এবং তার শ্যালক পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। এই চেতনই সবার আগে জানিয়েছিল যে সুরয ‘সমকামী’ এবং সে দলেরই কর্মীদের নিজের ফার্ম হাউসে ডেকে নিয়ে গিয়ে শারীরিক নির্যাতন চালায়। সেই অভিযোগের পরে সুরযের সহকারী শিবকুমার এ বিষয়ে পুলিশের কাছে চেতনের নামে পাল্টা অভিযোগ জানাতেই গ্রেফতার হন চেতন ও তার শ্যালক। কিন্তু এদিন চেতনের তোলা অভিযোগের ভিত্তিতেই সুরযকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর সেই অভিযোগ হল, সুরয নাকি ধর্ষণ করেছেন চেতনকে।
চেতনের দাবি, সুরয নাকি নিজের ফার্ম হাউসে দলেরই কর্মীদের নিয়ে গিয়ে তাঁদের বাধ্য করেন তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে। যারা রাজী হন না তাঁদের জোর পূর্বক সঙ্গমে লিপ্ত হতে বাধ্য করা হয় বা তাঁদের ধর্ষণ করা হয়। সুরযের বিরুদ্ধে ওঠা এই কর্ণাটক(Karnataka) তথা দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে দিয়েছে। কেননা সুরযেরই দাদা প্রজ্বল রেভান্নাকে পুলিশ আগেই ধর্ষণ এবং যৌন নিগ্রহের মামলায় গ্রেফতার করেছে। তবে চেতনের তোলা অভিযোগের জেরে সুরযের সহকারী শিবকুমার এ বিষয়ে পুলিশের কাছে চেতনের নামে পাল্টা তোলাবাজির অভিযোগ জানান। যার জেরে গতকাল গ্রেফতার হয়েছেন চেতন ও তার শ্যালক। চেতনের বিরুদ্ধে শিবকুমারের দাবি, চেতন নাকি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অছিলায় সুরজের সঙ্গে পরিচিতি বাড়ান চেতন। ‘সুরজ রেভান্না ব্রিগেড’ নামে একটি মঞ্চও গড়েছিলেন। এর পরে প্রজ্বলকাণ্ড নিয়ে হইচই শুরু হতেই চেতন ‘পরিস্থিতি বুঝে’ যৌন হেনস্থার মিথ্যা অভিযোগের তাঁকে ফাঁসানোর হুমকি দিতে থাকেন। চেতন সুরযের কাছ থেকে ৫ কোটি টাকা দাবি করেছিলেন। সেই টাকা না দিলে তাঁকে যৌন হেনস্থার মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও দিয়েছিলেন। পরে সেই টাকা দরাদরি করে ২ কোটিতে নামে।
শিবকুমার চেতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতেই পুলিশ চেতন ও তার শ্যালকের বিরুদ্ধে আইপিসি ৩৮৪, ৫০৬ ও ৩৪ নম্বর ধারায় এফআইআর দায়ের করে তাদের গ্রেফতার করেছে। গতকালই চেতনের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সুরযের বিরুদ্ধে আইপিসি ৩৭৭, ৩৪২, ৫০৬ ও ৩৪ নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করে। সেই অভিযোগে সুরযের পাশাপাশি শিবকুমারের নামও ঢোকানো হয়। চেতনের দাবি সুরজ ও শিবকুমার দুইজনই দলের পুরুষ কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাতো। কান পাতলে এখন জেডিএসের অন্দরে শোনা যাচ্ছে, সুরযের বিরুদ্ধে চেতন যে সমকামিতার অভিযোগ এনেছে তা পুরোপুরি মিথ্যা নয়। দলের যুব শাখার অনেক পুরুষ কর্মীকেই নাকি সুরযের শিকার হতে হয়েছে। কেউ দলের পদ প্রাপ্তি বা ভোটের টিকিট পাওয়ার জন্য তা মেনে নিয়েছেন, কেউ আবার দল ছেড়ে দিয়েছেন বা বসে গিয়েছেন। তবে যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সবই বছর ৩ আগেকার। ফলে পাল্টা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে, এতদিন বাদে কেন এইসব অভিযোগ সামনে আসছে। অনেকেই মনে করছেন, হাতি পাঁকে পড়লে যেমন ব্যাঙেও লাথি মারে, তেমনি রেভান্না পরিবারের সঙ্গে সেটাই হচ্ছে।