CAA নিয়ে কিছু জানাতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী, দাবি শান্তনুর
নিজস্ব প্রতিনিধি: বেফাঁস মন্তব্য তিনি আগেও করেছেন। পরে ভুল স্বীকারও করেছেন। এবারেও তাঁর মন্তব্য নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিতর্ক। আগামী দিনে তিনি এদিনের মন্তব্য নিয়ে ক্ষমা চাইবেন কিনা সেটার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। নজরে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ(BJP MP) তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর(Shantanu Thakur)। এর আগে তিনি বেফাঁস মন্তব্য করেছিলেন CAA নিয়ে। পরে ভুল স্বীকার করে জানিয়েছিলেন মুখ ফস্কে বলে ফেলেছিলেন। এদিন যে মন্তব্য করেছেন সেখানে জুড়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের(Amit Shah) নাম। আর তাতেই মাথাচাড়া দিচ্ছে নয়া বিতর্ক। এমনকি এটাও শোনা যাচ্ছে, বিজেপি নেতৃত্বের ওপরেই এখন নাকি চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ শান্তনু। নেহাত কেন্দ্রের মন্ত্রীপদ রয়েছে হাতে তাই প্রকাশ্যে বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন না। কিন্তু মতুয়া সমাজে তাঁরা গ্রহণযোগ্যতা আর জনপ্রিয়তা যে ক্রমশই নিম্নমুখী হচ্ছে তা দেখে আর বুঝে এখন যতটা সম্ভব CAA নিয়ে সরব হতে চাইছেন তিনি। যদিও বিধি বাম।
এদিন অনেকেই আশা করেছিলেন নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে সভা করতে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি CAA নিয়ে কিছু একটা বলবেন বা ঘোষণা করবেন। সব থেকে বেশি আশায় ছিল মতুয়ারা। কেননা তাঁরাই দীর্ঘদিন ধরে নাগরিকত্ব প্রদানের দাবিতে সরব। বিজেপি তাঁদের উনিশের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কেন্দ্র সরকার তাঁদের নাগরিকত্ব দেবে। কিন্তু সেই নাগরিকত্ব আজও পাননি মতুয়ারা। অথচ দুয়ারে কড়া নাড়ছে আরও একটা লোকসভা নির্বাচন। মতুয়ারা যে বিজেপির দিক থেকে মুখ ঘোরাতে শুরু করে দিয়েছেন সেটা একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই চোখে পড়ছে। এবারেও শান্তনু প্রার্থী হচ্ছেন সম্ভবত বনগাঁ থেকেই। তিনি চাইছিলেন লোকসভা নির্বাচন নিয়ে মোদি স্পষ্ট বার্তা দিন CAA নিয়ে মতুয়া সমাজকে। অন্তত তাঁর ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে তেমনটাই জানা গিয়েছে। সেই একই আশায় এদিন মোদির সভায় ভিড় জমিয়েছিলেন মতুয়ারা। কিন্তু মোদি CAA নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। আর তাতেই হতাশাগ্রস্থ বিজেপির মতুয়া সমর্থক ও নেতারা।
সভা শেষে সংবাদমাধ্যম শান্তনুকে প্রধানমন্ত্রীর CAA প্রসঙ্গে কিছু না বলা নিয়ে প্রশ্ন করলে শান্তনু বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কোনও এক্তিয়ারই নেই CAA নিয়ে কথা বলার। এটা নাকি সম্পূর্ণ ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আওতায়। তাই এই নিয়ে যা বলার সেটা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহই বলবেন। প্রধানমন্ত্রী নন। আর এই নিয়েই এখন বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। বস্তুত যত না বিতর্ক তার থেকেও বেশি মানুষজন হাসছেন শান্তনুর এহেন মন্তব্য শুনে। ভারতবর্ষের মতো সংসদীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালিত দেশে প্রধানমন্ত্রীই সব। দেশে রাষ্ট্রপতি থাকলেও তিনি সাংবিধানিক দায়িত্বই পালন করেন। কেন্দ্রের সরকার বা দেশের সরকার রাষ্ট্রপতির নামে পরিচালিত হলেও সেই সরকারের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা। কার্যত প্রধানমন্ত্রীই দেশের মূল শাসক। তাঁর ইচ্ছাঅনিচ্ছাই কেন্দ্র সরকারের চালিকার মূল শক্তি। সংবিধান তাঁকে বিপুল ক্ষমতা দিয়েছে। কেন্দ্র সরকারের যে কোনও মন্ত্রক নিয়ে তিনি যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মন্ত্রীদের মধ্যে মন্ত্রকের পরিবর্তন ঘটাতে পারেন। যে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারেন। অথচ শান্তনু বলছেন CAA নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বলার কোনও এক্তিয়ারই নেই! নাকি নিজের মন্ত্রিপদ বাঁচাতে এখন চাটুকারিতার আশ্রয় নিচ্ছেন তিনি! প্রশ্ন মতুয়া সমাজে।